E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

‘সন্ত্রাসীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় না’

২০১৫ এপ্রিল ০৪ ১৫:৫২:১৬
‘সন্ত্রাসীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় না’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : আন্দোলনের নামে চট্টগ্রামে পেট্রোল বোমা হামলা করে মানুষ হত্যার জন্য সন্ত্রাসীদের বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম মনজুর আলম অর্থ যোগান দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার বেলা ১২টায় নগরীর রীমা কনভেনশন সেন্টারে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘শিক্ষার উন্নয়নে চাই সুযোগ্য নেতৃত্ব’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নগর ছাত্রলীগ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট পেট্রোল বোমা ও ককটেল মেরে মানুষ হত্যা করেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে এসব কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করেছেন মনজুর সাহেব। তিনি সন্ত্রাসীদের লালন পালন করেছেন। তাদেরকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দিয়েছেন। তাই সন্ত্রাসীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় না।’

সাবেক সিটি মেয়র মনজুরকে সবচেয়ে অদক্ষ মেয়র উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মহিউদ্দিন ভাই (এবিএম মহিউদ্দিন) মেয়র থাকাকালীন পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে চট্টগ্রাম সারা বিশ্বে পরিচিত ছিল। চট্টগ্রাম ছিল বাংলাদেশের একমাত্র হেলদি সিটি। কিন্তু গত পাঁচ বছরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র চট্টগ্রামকে নোংরা নগরীতে পরিণত করেছে। যেখানে সেখানে আবর্জনার ডাস্টবিন। এক সপ্তাহেও এ ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কার করা হয় না। রাস্তায় হাঁটতে গেলে নাকে রুমাল দিতে হয়। মনজুর যদি আবার মেয়র নির্বাচিত হয় তবে পুরো চট্টগ্রামকে ডাস্টবিনে পরিণত করবে। তাই প্রধানমন্ত্রী মনোনীত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছিরকে মেয়র পদে বিজয়ী করতে হবে। ’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ নোমান বিভিন্ন সভা সমাবেশে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর চরিত্র হনন করছে। আ জ ম নাছিরের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ করছে। এটি সম্পূর্ণ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন। অবিলম্বে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা। এ সমস্যাটিকে বিএনপির মেয়র আরও জটিল করেছে। মহিউদ্দিন ভাই মেয়র থাকাকালীনও নগরীতে পানি উঠত। তবে মনজুরের সময় বন্দর নগরীর মানুষকে হাঁটু পানিতে নয়, কোমর পানিতে ডুবে থাকতে হয়েছে। আগামীতে এ ব্যর্থ মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীর ৬০ লাখ মানুষকে পানিতে ডুবিয়ে মারবে। তাই চট্টগ্রামকে আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ’

শিক্ষিত নেতৃত্ব ছাড়া দেশের বারোটা বাজে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন মেট্রিক ফেল। তিনি দেশকে কীভাবে ধ্বংস করেছেন তা সবাই দেখেছে। আর মেয়র মনজুর হচ্ছেন মেট্রিক পাশ এবং সবচেয়ে অযোগ্য মেয়র হিসেবে পুরষ্কারপ্রাপ্ত। তার হাতে চট্টগ্রাম নগরীকে ছেড়ে দেওয়া যায় না।

খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, আদালতে যাবেন ভাল কথা। তবে গতবারের মতো গাড়ী বহন নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যেন না হয়। বিশৃঙ্খলা করলে জনগণ ক্ষমা করবে না।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারী দলের নেতাকর্মী বলে মনে অহংকার আসতে পারে। কিন্তু অহংকার নিয়ে ঘরে বসে থাকলে মানুষ ভোট দিবে না। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা তুলে ধরতে হবে। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিতে হবে। তাহলে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। ’

অনুষ্ঠানে আ জ ম নাছির বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত করতে হবে। তাই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কারণ এ জয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্মান জড়িত। মহিউদ্দিন ভাই আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় নেতা। তার পরামর্শ ও নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার বলেন, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির ধারক ও বাহক হচ্ছে ছাত্রলীগ। চট্টগ্রাম নগরীতে ছাত্রলীগের দক্ষ কর্মীবাহিনী রয়েছে। ৪১টি ওয়ার্ডে এসব কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে করে ভোটারদের ঘরে ঘরে যেতে হবে। গত পাঁচ বছরে মনজুর কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি জনগণকে জানাতে হবে। তাহলে আওয়ামী লীগের জয় কেউ রোধ করতে পারবে না।

নির্বাচনে যারা কাজ করবে তাদের পুরষ্কৃত করা হবে বলে জানিয়ে লিয়াকত সিকদার বলেন, আপনারা মন দিয়ে আ জ ম নাছিরের পক্ষে কাজ করেন। আপনারা যদি প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পারেন আপনাদের কাজের মূল্যয়ন করে পুরষ্কৃত করা হবে।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে চট্টগ্রামের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ১ হাজারেরও বেশি স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। নাগরিকরা যাতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য ওয়ার্ডে মাতৃ হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। কিন্তু বিএনপির সমর্থিত মেয়র গত পাঁচ বছরে কিছু করেননি। তাই পুনরায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর যোগ্য উত্তরসূরি আ জ ম নাছিরকে মেয়র নির্বাচিত করতে হবে। ’

নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার রোটন, জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আরশেদুর আলম বাচ্চু, সুরঞ্জিত বড়ুয়া লাভু, অহিদ সিরাজ স্বপন, হাবিবুর রহমান তারেক, আজিজুর রহমান, আবদুল্লাহ আল মামুন, ইলিয়াছ উদ্দিন, ফরহাদুল ইসলাম রিন্টু, আলী রেজা পিন্টু প্রমুখ।
(ওএস/পিবি/এপ্রিল ০৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test