E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে পৌর নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

২০১৫ ডিসেম্বর ১৯ ১৩:৪০:৪৬
মৌলভীবাজারে পৌর নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : দেশের মোট ২৩৪টি পৌরসভায় এক যোগে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পৌরসভা নির্বাচন । স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম দেশে স্থানী নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতিকে। যদিও দলীয় প্রতিকে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধিনে অনুষ্ঠিত প্রায় সবগুলো নির্বাচনই কম বেশি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তাই বেশির ভাগ মানুষের প্রশ্ন নির্ভয়ে ভোট দেয়া যাবেতো? এখানকার পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন মোট পাঁচ প্রার্থী তারা হলেন, আওয়ামীলীগের আলহাজ্ব ফজলুর রহমান, বিএনপি’র অলিউর রহমান, ওয়ার্কাস পার্টির সৌমিত্র দেব টিটু ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) সৈয়দ সুজাত আলী (শিমুল)ও ইসলামী আন্দোলনের মোস্তফা কামাল যদিও মুল লড়াই হবে ধানের শীষ ও নৌকা প্রতিকের দুই প্রার্থীদের মধ্যে।

এটাই নির্বাচনী মাঠের প্রাথমীক জরিফে ধারনা করা যাচ্ছে। মেয়র প্রার্থীরা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দলীয় নেতা কর্মিদের সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ সহ ভোটারদের মন জয়েই ব্যস্ত। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক কিংবা প্রতিটি অলি গলি প্রার্থীদের নির্বাচনী পোষ্টারে ছেয়ে গেছে। নিজ নিজ প্রার্থীদের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে বেশ।

নির্বাচনী প্রচারনাও জমে উঠছে বেশ,তবে ভোটারদের ব্যাপারে বোঝার উপায় নেই কাকে ভোট দিবেন এ নিয়ে অনেক সতর্ক ভোটাররা।এদিকে সাধারণ ভোটাররা সংক্ষিত সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যদিও জেলা সদরে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী আচরনবিধী লঙ্গনের কোন খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । মৌলভীবাজার পৌর শহরের সবগুলো চায়েঁর দোকান,হোটেল রেস্তুরা,অফিস আদালত অথবা অন্যত্র আড্ডা প্রায় সব জায়গাই এখন আলোচনার মূল বিষয় আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন।

দ্বীর্ঘ ৭ বছর পর লড়াই হবে ধানের শীষ ও নৌকা প্রতিকের মধ্যে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামীলীগের মনোনিত দুই প্রার্থীদের মধ্যে থেকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্টিতব্য পৌর নির্বাচনে জনগণ নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্যেদিয়ে মৌলভীবাজার পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র নির্বাচন করবেন এমনটাই আশা করছেন শহরের বেশির ভাগ নাগরিক।

নির্বাচন কমিশন পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোসনার পর থেকে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন বর্তমান মেয়র ও সাবেক জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল করীম ময়ূন,রহস্যজনক কারনে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান,তার সরে যাওয়াতে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন বর্তমান মেয়রের অনুসারিরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ দলীয় নেতা কর্মিরাও।

এ অবস্থায় প্রার্থী সংকট তৈরি হলে তার জায়গায় মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে পৌর বিএনপি’র সভাপতি ও পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ২ বারের নির্বাচিত বর্তমান কাউন্সিলর অলিউর রহমানের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়। ক্লিন ইমেজের অধিকারী অলিউর রহমান সক্রিয় রাজনিতীর পাশা পাশি শহরের একজন বড়মাপের ব্যাবসায়ীও। এরই মধ্যে অন্যান্য প্রার্থীদের পাশাপাশি অলিউর রহমান ও দলীয় নেতা কর্মিদের সাথে নিয়ে রিটার্নিং কমকর্তা মাশুকুর রহমান সিকদারের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেন।

৫ও ৬ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন যাচাই বাচাইয়ের নির্ধারিত তারিখ। ওই দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিল না করার কারন জানতে চাইলে দলীয় প্রার্থী হিসেবে অলিউর রহমান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ৬ ডিসেম্বর সকাল ১১ ঘটিকা পর্যন্ত সময় আবেদন করেন পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে পর দিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলের আদেশ দেন কিন্তু ৬ ডিসেম্বর আয়কর রিটার্ন দাখিল না করতে পারার কারনে তার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয় এর প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে অলিউর রহমান সাংবাদিকদের ডেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের কাছে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করে আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানান, পরবর্তিতে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নিকঠ আপিল আবেদন করলে সেখানেও তার মনোনয়ন বাতিল করা হয় । এর পর তিনি উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান নেন এবং হাইকোর্টের সংস্লিষ্ট শাখায় ১৩ ডিসেম্বর আপিল আবেদন করেন পরে ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আপিলের শুনানী হলে তাতে অলিউর রহমানের মনোয়ন গ্রহন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আদেশ দেয়া হয়।

অনেক প্রতিক্ষার পর আইনী লড়াইয়ে মনোনয়ন ফিরে পাবার এই সংবাদ ছড়িয়ে পরলে উচ্চসিত হয় দলীয় নেতা কর্মি ছাড়াও পৌর এলাকার বিএনপি সমর্থিত সাধারণ ভোটাররা। তাদের কথা হলো বিএনপি মনোনিত প্রার্থীর মনোনয়ন ফিরে পাওয়ায় জমে উঠবে নির্বাচনী আমেজ। তারা মনে করেন বিএনপি মনোনিত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হলে আওয়ামীলীগ ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া অনেকটাই পাকাপোক্ত ছিল বর্তমানে সে সুযোগও বন্ধ। তাই নির্বাচনী মাঠে এখন ভোটের পূর্ণ আমেজ বিরাজ করছে।

(এমএকে/এএস/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test