E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন না’

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৮ ১৪:৫৮:৪৫
‘জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন না’

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, জিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন না। যুদ্ধে কেন অংশ নিয়েছেন তিনি তাও আজ অজানা নেই। যুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল বিতর্কিত। আর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় এসে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, তিনি ছিলেন বিশ্বাসঘাতক।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ মিলনায়তনে সোমবার দুপুরে ‘বীরাঙ্গনার আত্মকথন’ প্রামাণ্য গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ২০ বীরাঙ্গনার আত্নকথা নিয়ে প্রকাশিত একাত্তর প্রকশনীর এই বইটির লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শেখ আব্দুস সালাম ও শিল্পী বেগম।

দালাল আইন বন্ধ করে রাজাকারদের রক্ষা করা, গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দেওয়া, জামায়াতের রাজনীতি বৈধ করা ও বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র বন্ধে জিয়ার ভূমিকার সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ছিল তিনি তাদের পুনর্বাসিত করেছেন। এটি প্রমাণ করে যে তিনি স্বধীনতাবিরোধী ও পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের না, বিশ্বাসঘাতক ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ চলাকালে তিনি পাকিস্তানের কর্ণেল আসলামের সাথে চিঠি আদান-প্রদান করতেন। আসলাম তাকে লিখেছিলেন, তোমার কাজ ভাল চলছে, চালিয়ে যাও। কখন একজন শত্রু এভাবে চিঠি লিখে? আসলে জিয়া ছিলেন পাকিস্তানের এজেন্ট।’

তিনি বলেন, ‘খালেদাও পাকিস্তানি ক্যান্টেনমেন্টে যুদ্ধের সময় আরামে দিন কাটিয়েছেন। তিনি যুদ্ধের পক্ষে ছিলেন না, তাই ৪৪বছর পর তিনি শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এটি মুখ ফসকে বলেননি, সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ এটি।’

পাকিস্তানি দূতাবাসের বাংলাদেশ বিরোধী অপকর্মের অভিযোগ এনে হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ নরপশুদের সাথে সম্পর্ক রাখতে চায় না। আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী যেটুকু সম্পর্ক না রাখলেই নয় সেটুকু সম্পর্কই রয়েছে তাদের সাথে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পাদক তার ভুল স্বীকার করেছেন। এখন তিনি নৈতিকতার জায়গা থেকে কি করবেন তা জাতি দেখতে চায়। রাষ্ট্রের যে ক্ষতি তিনি করেছেন তার দায়ভার নিয়ে তিনি কি ভূমিকা নেবেন তা জাতি জানতে চায়।’

এসময় তিনি, গত ৪৪ বছরে বীরাঙ্গনারা অবহেলিত ছিলেন বলেও মন্তব্য করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মুনজুরুল ইসলাম বলেন, গ্রন্থটিতে কোনো রকম পরিমার্জনা ছাড়াই বীরাঙ্গনাদের ভেতরের কথা তুলে আনা হয়েছে। এটিই বইটির শক্তিশালী দিক।

এ প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যিক বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে নায়ককে খলনায়ক, আর যুদ্ধে যার সামান্য অবদান তাকে মূল নায়ক বানানোর চেষ্টা চলছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে দ্বিধাগ্রস্ত করার যে অপচেষ্টা, তা রোধ করতে বইটি ভূমিকা রাখবে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় আমরা বীরাঙ্গনাদের রাখিনি। পুরুষতান্ত্রিকতার কারণে তাদের আমরা মর্যাদা দিইনি। এ থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নিশ্চিত করতে হবে।’

রাষ্ট্রে বীরাঙ্গনাদের অবহেলার বিষয়ে মুনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৪৪ বছরে তাদের জন্য কি করেছি? শোকসভা, আলোচনায় স্মৃতিকাতর হয়েছি। কিন্তু তাদের জীবনের জন্য কিছুই করতে পারিনি। ’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test