E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চলছে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল

২০১৬ মার্চ ১৯ ১১:৪৬:১১
চলছে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল

স্টফ রিপোর্টার :বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল চলছে। শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন কাউন্সিলের প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপারস খালেদা জিয়া। এ সময় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 

পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত এবং পরে দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এরপর কেন্দ্রীয় নেতারা কাউন্সিল মঞ্চে গেলে প্রথমেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। পরে নেতাকর্মীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ মিলনায়তন ও এর চত্বর এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব-উত্তর অংশ কাউন্সিল ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করছে বিএনপি।

রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছাসহ ব্যানার, পোস্টার দেখা যচ্ছে। দলের ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, কৃষক দল, ওলামা দল, তাঁতী দল, মত্স্যজীবী দল, জাসাসও আলাদা স্লোগানে পোস্টার প্রকাশ করে সারা ঢাকায় সেঁটেছে। মূল ভেন্যু ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে তিনটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রং-কে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো সন্মেলনস্থল। চারপাশে উঁচু ছাউনি দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। যাতে ডেলিগেটরা সেখানে সহজে বসতে পারেন। কাউন্সিল এলাকার কড়া নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী, সিসি টিভি, আর্চওয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনটি মঞ্চের একটিতে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভাষণ দিবেন এবং দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন। দ্বিতীয় মঞ্চটিতে থাকবেন শিল্পীরা। আর তৃতীয় মঞ্চটি সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।

সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এক ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য রাখবেন। এ বক্তব্যে আগামী দিনের দলীয় রাজনীতির দিক-নির্দেশনা থাকবে। এবারের কাউন্সিলে ত্যাগী, যোগ্য, পরিশ্রমী ও রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় নেতাদের দলের বিভিন্ন পদে বসানো হবে। প্রসঙ্গত, ১৩ দিন আগে গত ৬ মার্চ দলের চেয়ারপারসন পদে খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমান পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন । কাউন্সিলের দিন আর কোনো পদে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল নেতারা।

৩ হাজার কাউন্সিলর: এবারের কাউন্সিলে ৩ হাজার ১ শ’ কাউন্সিলর, ৮ থেকে ৯ হাজার ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি, বিদেশি মেহমান ও দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী মিলে প্রায় ৫০ হাজার লোকের সমাবেশ হবে বলে আশাবাদী বিএনপি। অদূরদর্শী কর্মসূচির পর দীর্ঘদিন ঘরে ঢুকে থাকা নেতা-কর্মীরা কাউন্সিল উপলক্ষে ফের বের হয়ে আসতে পেরেছেন- এটিই বিএনপির জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে দেখছেন দলটির নেতারা। তারা জানান, সারাদেশ থেকে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিট থেকে আগত নেতৃবৃন্দ ডেলিগেট ও কাউন্সিলর কার্ড সংগ্রহ করেছেন।

সর্বশেষ ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল। ওই কাউন্সিলের কয়েকদিন আগে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। কাউন্সিলের দিন তারেক রহমানকে করা হয় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করা হয় কয়েকদিন পর।

সূত্রমতে, এবারও দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি, দলের উপদেষ্টা পরিষদ, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন হচ্ছে না। কাউন্সিলররা নেতা নির্বাচনের দায়ভার খালেদার হাতে ন্যস্ত করে ফিরে যাবেন যার যার গন্তব্যে।

আজ কমিটি ঘোষণা হচ্ছে না: এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাউন্সিলে কমিটি ঘোষণা দেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পূর্ণাঙ্গ নতুন কমিটি গঠন করতে এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে। আজ খুব বেশি হলে মহাসচিব পদে মনোনীত নেতার নাম ঘোষণা করা হতে পারে। তবে সেটিও যাতে না হয়, এ জন্য একটি পক্ষ সক্রিয় আছে। বিএনপির বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলটির বর্তমান জাতীয় নির্বাহী কমিটি ৩৫১ সদস্যের। এবার কমিটির কলেবর বেড়ে ৬০০ এর কাছাকাছি চলে যেতে পারে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের কাউন্সিল সামনে রেখে গঠনতন্ত্রে দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাহী কমিটির সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়। এসব প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতের বৈঠকে আলোচনা ও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান ১৭ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ জন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আছেন ছয়জন করে। তা বাড়িয়ে ৮ থেকে ১১ জন করে করা হতে পারে। নির্বাহী কমিটির সদস্যসংখ্যাও বাড়বে। তবে স্থায়ী কমিটি ও যুগ্ম মহাসচিব পদে বর্তমান সংখ্যায় কোনো পরিবর্তন আসছে না। এর বাইরে ক্ষুদ্রঋণ-বিষয়ক একটি সম্পাদক বা এ বিষয়ক একটি উপ-কমিটি সৃষ্টি করা হবে। গবেষণার জন্যও গঠন করা হবে আলাদা উপ-কমিটি। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠন করা ও ‘এক নেতার এক পদ’ নীতিতে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত মহাসচিব পদ সৃষ্টির বিষয়টি কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানা গেছে।


(ওএস/এস/মার্চ১৯,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test