E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সার্চ কমিটির নাম আগে প্রকাশ করতে হবে’

২০১৬ ডিসেম্বর ১৮ ১০:২৩:৩৯
‘সার্চ কমিটির নাম আগে প্রকাশ করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে যাদের নাম সার্চ কমিটির প্রস্তাবে আসবে, তাদের নাম আগে প্রকাশ করতে হবে। তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেন, নামগুলো প্রকাশ হলে তাদের নিয়ে আলোচনা হবে, গণমাধ্যম তাদের অতীত খতিয়ে দেখবে, জনগণ তাদের সম্পর্কে জানতে পারবে; এবং তা হলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তা বিবেচনার সুযোগ পাবেন।

শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা ফোরামের উদ্যোগে ‘ইলেকশন, ইলেকশন কমিশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্বের বক্তব্যে এ টি এম শামসুল হুদা এসব কথা বলেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মাসুদ আজিজের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরেক রাষ্ট্রদূত এম সেরাজুল ইসলাম।

বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

শামসুল হুদা বলেন, প্রত্যেকবার নির্বাচন আসলে সাইবেরিয়ার পাখির মতো ৪-৫ মাস আগে থেকে কথা হতে থাকে। কী সরকার হবে-কী হবে...। সারা বছর আর কোনো কথাবার্তা নাই। ওই সময়ে সব দৌড়-ঝাপ শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‌‘সার্চ কমিটি করার প্রস্তাব যখন আমরা দিলাম, তখন একটা উদ্দেশ্য ছিল যে, অনেক আগে নামগুলো প্রকাশিত হবে। অনুসন্ধানী সাংবাদিক খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তার বাপ-দাদা চৌদ্দগোষ্ঠীর সব খবর বের করবে।’

বাংলাদেশে একটা ভালো নির্বাচন করতে হলে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা লাগে, সেখানে সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন শামসুল হুদা।

চাঁদপুরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির মনোনয়নপত্র বাতিল করার পরের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে তিনি জানান, আপিল বিভাগে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বিষয়টা থেমে যায়। বলি এটা নিষ্পত্তি হচ্ছে না কেন? আমাদের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, তারিখ পাই না। পরে উনি বহাল তবিয়তে থাকলেনই, মন্ত্রীও হলেন। পুরা ৫টা বছর উনি ওই সংসদে থাকলেন। যেই উনার সময় শেষ হয়ে গেল, তখন রায় পাওয়া গেল যে, ওইটা ঠিক হয় নাই।

বিদায়ী কমিশনের কাজের সমালোচনা করতে গিয়ে তার বিশালত্বের দুর্বলতাও তুলে ধরেন সাবেক এই সিইসি। নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ পেলে নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান ক্ষমতা কাঠামোতেই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করেন শামসুল হুদা। তিনি বলেন, ইসি শক্তিশালী করার এখন কোনো দরকার নেই। যথেষ্ট ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। প্রয়োগ করতে চাইলে সেটা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপিকে দশম সংসদ নির্বাচনে আনতে বর্তমান কমিশন আরও উদ্যোগী হতে পারত। সংবিধানের মধ্যে সবকিছু বিস্তারিত লেখা থাকে না। ইউকেতে তো সংবিধান লেখাই থাকে না। কনভেনশনের ওপরে চলে। মেজরিটি লোক ভোট দেয় নাই, এখানে নির্বাচন কমিশনের করার ছিল। দে হ্যাভ মিজারেবলি ফেইলড।

নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে নিজেদের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা তিনবার নির্বাচনের শিডিউল পরিবর্তন করেছি। কারণ বিএনপি (নির্বাচনে আসতে) সম্মতি দিচ্ছিলো না। উই ওয়ার এডামান্ট যে, বিএনপি না আসলে এই নির্বাচনে ক্রেডিবিলিটি থাকবে না। আমরা সফল হয়েছি।’

উল্লেখ্য, কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি আগামী ফেব্রুয়ারিতে বিদায় নিচ্ছে। গতবারের মতোই সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন ইসি গঠন করতে যাচ্ছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এজন্য রবিবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকও করবেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধান অনুযায়ী ইসি গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test