E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বিএনপি-জামায়াত দেশের প্রতিটি অঞ্চলে নির্যাতন করেছে’

২০১৭ মার্চ ০৪ ১৩:৩৭:৪৩
‘বিএনপি-জামায়াত দেশের প্রতিটি অঞ্চলে নির্যাতন করেছে’

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছিল, তেমনি ক্ষমতায় এসে বিএনপি জামায়াতও এ দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতাসহ সবরকমের আন্দোলন-সংগ্রামে নারীর অবদানের কথা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, সবসময় বাবার (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাশে থেকে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অবদান রেখেছেন মা (বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব)।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে ওই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাশবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল, তেমনি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি জামায়াতও এ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে।

‘১০ বছরের শিশু থেকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ, কেউ রেহাই পায়নি তাদের নির্যাতন থেকে। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে তারা নির্যাতন চালিয়েছে।

মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের অর্ধেক নারী। মা-বোনদের কাছে নেতা-কর্মীদের যেতে হবে। তাদের কাছে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরতে হবে।

‘জনগণকে স্বেচ্ছায় সেবা দিতে হবে। আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।’

এসময় মহিলা আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত করার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।

জঙ্গিবাদের সঙ্গে কিছু নারীর জড়িত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখের বিষয় সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে মেয়েরাও জড়িত হচ্ছে। মেয়েরা মায়ের জাতি। তারা কিভাবে এসবে জড়ায়। তাছাড়া ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ইসলাম সমর্থন করে না।

ছেলে-মেয়েরা কী করে, কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, স্কুল কলেজে ঠিক মতো যাচ্ছে কিনা? এসব বিষয়ে খোঁজ রাখতে বাবা-মায়েদের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্তানের সবচেয়ে বড় বন্ধু হবেন মা। সন্তান যেন সব কথা মন খুলে বলতে পারে।

তিনি বলেন, কোনো কিছু হলে সন্তান যেন প্রথমে বন্ধু নয়, মা-বাবার কাছে বলে। সেই ধরনের সর্ম্পক তৈরি করতে হবে। সন্তানের প্রতি বাবা-মাকে দৃষ্টি দিতে হবে। এখানে মায়ের দায়িত্ব অনেক বেশি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে এক হয়ে নিজের সন্তানকে রক্ষা করতে হবে। তারা যেন জঙ্গিবাদের পথে না যায়, মাদকাসক্ত না হয়।

বিচারবিভাগ, জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি, সামরিক বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীদের প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

নারী-পুরুষ সমান ভাগে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একটা সমাজের অর্ধেক নারী। অর্ধেক অংশ পিছিয়ে পড়লে সমাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেয়েদের সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েরা কম কিসে? মেয়েরা হিমালয়ও জয় করে ফেলেছে। সুযোগ পেলে সবক্ষেত্রে মেয়েরাও ভালো করতে পারে।

শিক্ষায় মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। পরীক্ষায়ও তারা বেশি। আমি এখন বলি বাংলাদেশে জেন্ডার সমতা উল্টো। আমরা এখন ছেলেদের পড়াশোনায় আরও এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করছি।
সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: পিআইডিব্যবসা-বিনিয়োগে মেয়েদের আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের এত সুবিধা দেওয়া হলেও মেয়েরা ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগে খুব একটা এগিয়ে আসছে না। তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

জনগণের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও সফলতার কথা ‍তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি করতে এসেছি জনগণের সেবা করার জন্য। ব্যবসা করার জন্য।

বিএনপি আমলসহ বিগত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ত্যাগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে পুলিশ অন্যদিকে বিএনপির লেলিয়ে দেওয়া গুণ্ডা বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পায়নি আমাদের বোনেরা। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদারদের মতো মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফুন্নেসা মোশাররফ। সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পিনু খান।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা।

১৪ বছর পর মহিলা আওয়ামী লীগের এই সম্মেলন শুরু হয় সকাল ১১টায়। বিকেল ৩টায় দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। এই অধিবেশনে মহিলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর অবমুক্ত করেন শান্তির প্রতীক পায়রা। পরে জাতীয় সংগীত, দলীয় সংগীত, জাগরণের গান ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

(ওএস/এএস/মার্চ ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test