E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুরে ২৪তম মামলায় ৭ ছাত্রলীগকর্মীসহ ফের গ্রেফতার সত্যজিৎ

২০১৭ মে ২৮ ১৮:৫১:০৫
ফরিদপুরে ২৪তম মামলায় ৭ ছাত্রলীগকর্মীসহ ফের গ্রেফতার সত্যজিৎ

আহম্মদ ফিরোজ, ফরিদপুর থেকে : ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস এডভোকেট সত্যজিৎ মুখার্জিকে ফরিদপুর পুলিশ আবার গ্রেফতার করেছে। মিথ্যা ও সাজানো নতুন আর একটি মামলায় রবিবার বিকেলে ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ থেকে সত্যজিতকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

যদিও নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ আইনজীবীদের আশ্বস্ত করেছিলেন, গ্রেফতার নয়, তাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, কঠোর গোপনীয়তার ভেতর দিয়ে নতুন রহস্যজনক মামলায় আটক দেখিয়ে সন্ধ্যায় তাকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে সত্যজিতকে দেখতে আসা তার অনুগত ছাত্রলীগ কর্মীদের বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে বরকত,রানা ও ফাইনের নেতৃত্বের এক দল দুর্বৃত্ত। তাদেরকেও ওই মামলায় আসামী ও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।এরা হলেন বোরহান নূর সুলতান সোহেল, মুকুল, নীতিশ সাহা, মামুন খান,রানা খান, সুমন সাহা, আকাশ দত্ত।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বহুল বিতর্কিত ২৩ মামলায় সত্যজিৎ দীর্ঘ নয় মাস ফরিদপুর জেলা কারাগারে আটক ছিলেন। সবগুলো মামলায় জামিন পাওয়ার পর গত ২১ মে সন্ধ্যায় তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পেয়েই সত্যজিৎ শহরের গোয়ালচামট হাউজিং এস্টেটের বাড়িতে বাবা মায়ের কাছে যান। ওই রাতেই একদল দুর্বৃত্ত সত্যজিতের বাড়িতে হামলা চালায়। ওই এলাকার মানুষের প্রতিরোধের মুখে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরদিন সত্যজিৎ ফরিদপুরের আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ঢাকায় চলে যান। ২৮ মে রবিবার ফরিদপুরের আদালতে তিনটি মামলায় হাজিরা দিতে আসেন সত্যজিৎ। এই খবর পেয়ে দুর্বৃত্ত চক্র আদালত এলাকা ঘিরে রাখে। সত্যজিতের সাথে দেখা করতে আসা তার অনুগত ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রথমে নাজেহাল ও পরে মারপিট করে দুর্বৃত্তরা তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ দুর্বৃত্ত চক্রের সহায়ক ভূমিকা পালন করায় কেউ কোনও প্রতিবাদ কিংবা সহায়তার হাত বাড়াতে সাহস দেখাননি। আদালতের কাজ সেরে সত্যজিৎ বের হওয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা হামলার চেষ্টা চালায়। অবস্থা বেগতিক দেখে আইনজীবীরা সত্যজিতকে বাঁচাতে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে নিয়ে যান। দুর্বৃত্তরা সেখানেও হামলা চালায়। আইনজীবীরা ঘিরে রেখে সত্যজিতকে রক্ষা করেন। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। সত্যজিতকে মারধর করতে ব্যর্থ হয়ে ওই কক্ষের কিছু চেয়ার ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা।

ওই কক্ষে সংবাদ সংগ্রহে হাজির ছিলেন ফরিদপুরের সিনিয়র সাংবাদিক তথা এই প্রতিবেদক আহম্মদ ফিরোজ। তিনিও সত্যজিকে রক্ষায় ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন, আমার সাংবাদিক জীবনে কোনও রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের এমন অসভ্য আচরণ দেখিনি। বিচারালয়ে এমন তাণ্ডবের ঘটনা ঘটলে, বিচার প্রার্থী মানুষ যাবে কোথায়!

পরে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে সত্যজিতকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে জানা যায়, পুলিশ তাকে বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। সেখানে নতুন একটি সাজানো মামলা অর্থাৎ ২৪তম মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। কিছু সময় পরে ওই ২৪ তম মামলাতেই সত্যজিতকে ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। সত্যজিতের পরিবারের অভিযোগ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানোর পরেও কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। উল্টো পুলিশ দুর্বৃত্তদেরই সহযোগিতা করেছে।

(পিএস/অ/মে ২৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test