E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করিনি’

২০১৭ আগস্ট ২৪ ১৬:৩৭:২৪
‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করিনি’

স্টাফ রিপোর্টার : ‘প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে সরকার চাপ সৃষ্টি করছে’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘এমন কথা কোথায় বলা হয়েছে? আমরা তো পদত্যাগের দাবি করি নাই। আমরা তো বলি নাই পদত্যাগ করতে হবে। আমরা পর্যবেক্ষণের কথা বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে প্রধান বিচারপতি সংসদ সদস্যদের নিয়ে যে কটাক্ষ করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যে ঝড় তুলেছেন, সংবিধানের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে যে কথা বলেছেন সেটি শপথ ভঙ্গের শামিল।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোল টেবিল মিলনায়তনে বেগম আইভী রহমানে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

হানিফ বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে অশুভ চক্রান্ত চলছে। সেই চালটা এখন ঘুরিয়ে আদালতের মাধ্যমে চলছে। ষোড়শ সংশোধনী রায় নিয়ে যেখানে দেশের জনগণ সমালোচনা করছে সেখানে বিএনপি এবং দেশের কিছু কুশীলবরা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।

তিনি বলেন, আমরা আদালতের রায় নিয়ে কোনো কথা বলিনি। এর বিরুদ্ধে আমরা কোনো কথা বলবও না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে পুনর্বিবেচনার আবেদন করব। কিন্তু রায়ের পর্যবেক্ষণের নামে যে সকল অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা কথা বলছি এবং আগামীতেও বলব। কারণ এগুলোর সঙ্গে স্বাধীনতার ইতিহাস জড়িত, দেশের মানুষের মূল্যবোধ জড়িত।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, যারা বিচারপতিদের পক্ষ হয়ে কথা বলছেন, তারা কোন অধিকারে বলছেন? মনে হচ্ছে বিএনপিসহ কিছু ব্যক্তি বিচারালয়ের মুখপাত্রের দায়িত্ব নিয়েছেন। এটা নিয়ে জনগণের মনে বিভ্রান্ত তৈরি হয়েছে। কারা বিচারপতিদের মুখপাত্র? বিচারপতিদের মুখপাত্র কি বিএনপি? নাকি বিএনপির মুখপাত্র বিচারপতি। কারণ দুই গ্রুপের কথা এবং চিন্তাভাবনা প্রায়ই একই রকম শোনা যাচ্ছে।

হানিফ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আন্দোলন করতে না পেরে আদালতের ওপর ভর করে সরকার পতন ঘটাবেন, অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় আনবেন- এ ধরনের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সফল হবে না। এ চক্রান্ত নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগের লক্ষ নেতাকর্মী প্রস্তুত আছে। যেকোনো অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করা হবে।

বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচারের সময় তার পরিবারের সদস্যরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেছিল। তখন তো কোনো কথা বলেননি। যুদ্ধাপরাধীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রধান বিচারপতির শপথ তো ওই দিনই ভঙ্গ হয়।

বিএনপি, খালেদা জিয়া, তার পুত্র তারেক রহমান সবাই মিলে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তৎকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার ইঙ্গিত ছাড়া ওই ঘটনা ঘটতে পারে না। সরকারপ্রধান হিসেবে খালেদা জিয়া এ দায় এড়াতে পারেন না। খালেদা জিয়াকে এই দায় নিতেই হবে।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজ পত্রিকায় দেখলাম ‘বিএনপির এক নেতা বলেছেন, জয় বাংলা শ্লোগান দিলেই আওয়ামী লীগের কাছে প্রিয় হয়ে যায়।’ মুক্তিুযুদ্ধের শ্লোগান ছিল জয় বাংলা, এটা আওয়ামী লীগের নয়। এটা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান। এ শ্লোগানে উজ্জীবিত হয়েই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি। যারা পাকিস্তানি চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী তাদের কাছে এ শ্লোগান গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়, এটা তাদের কাছে ভীতিকর। জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি চেতনায় বিশ্বাসী বলেই বাংলাদেশ জিন্দাবাদ শ্লোগান দেয়া শুরু করেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ডা. কামরুল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম সাজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test