E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটিকা : জয় বাংলা

২০১৭ ডিসেম্বর ১৬ ২৩:২৭:৫৩
নাটিকা : জয় বাংলা

শর্মিষ্ঠা সাহা

দৃশ্য – ১

(১৯৭১ সাল। মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সৈন্যদের সম্মুখ যুদ্ধ।অজয়, সুজয় ও বিজয় তিন ভাইসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধারা মঞ্চে)
বিজয়: চল সবাই, ও.. ও... ওইযে ওখানে ওদের ঘাঁটি।
সুজয়: খুব সাবধান, বিজয় তুই সামলে চল।
বিজয়: (গুলি লাগে) আ ..
অজয়: ও না .. বিজয় ..
(অজয়, বিজয়ের মৃতদেহ মঞ্চের বাইরে রেখে এসে অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেয়। বিজয়ের মৃত্যু। মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়।)
সুজয় ও অজয়: জয় বাংলা।
সবাই: জয় বাংলা। (২ বার)
(সবাই অস্ত্র তুলে ধরে ফ্রিজ। সাদা কাপড়ে ঢাকা শহীদের বেশে বিজয় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মঞ্চের পিছন দিয়ে চলে যায়)
দৃশ্য - ২
(২০১৭ সাল।সোনাপুর গ্রাম। বড় ভাই অজয়ের সংগেএক ঝাঁক নাতী নাতনী সুজয়কে দেখতে গ্রামে এসেছে। অজয়ের দুই ছেলে মেয়ে ঢাকাতে থাকে। অজয় বছরে ছয় মাস ঢাকাতে আর বাকি ছয় মাস সোনাপুরে ভাইয়ের কাছে থাকেন। সুজয়ের একমাত্র ছেলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। সুজয় সোনাপুর ছেড়ে কোথাও যান না। সুজয় একটা ছবি বুকে নিয়ে পায়চারি করছেন।)
অজয়: সুজয়, দেখ্ সবাই এসে গেছে।
সুজয়: আরে তোরা এসে গেছিস? আয়, আয়।
স্বপ্নিল: আচ্ছা মেজ দাদা, যখনি গ্রামে আসি দেখি তুমি ছোট দাদার ছবিটা বুকে জড়িয়ে আছ। কেন বল তো?
সুজয়: শোন্, ওর নাম ছিল বিজয়। কিন্তু দেশের বিজয় দেখার আগেই ওকে শহীদ হতে হল।(কান্নায় গলা ভারী হয়ে আসে।)
জয়: (আগ্রহী হয়ে ছবিটা ধরে।) He is Bijoy and I am Joy. So close.
সুমন: এই, বাবা তোকে বলেছে না বাংলায় কথা বলতে?
আদিবা: একদম ঠিক, দাদা কি ইংলিশ বোঝে?
(জয় লজ্জা পায়।সুজয় তাকে আদর করে দেন)
সুজয়: আরে থাক থাক। কিন্তু তোরা দুজন বাংলা শিখলি কি করে?
সুমন: আমরা যে অস্ট্রেলিয়াতে বাংলা স্কুলে যাই।
মুমু: জান মেজ দাদা, আমি ওদের বাংলা শেখাই।
ঝুমু: আমিও। ওরা ভাতকে বাত বলে, হি: হি:।
স্বপ্নিল: ওদের কথা ছাড়তো। ছোট দাদার কথা বল।
অজয়: ১৯৭১ সালে আমি, সুজয় আর বিজয় তিনজনেই মুক্তিযুদ্ধে যাই।
আদিবা: মুক্তিযুদ্ধ কি?
মুমু: আরে সেটাও জানিস না? বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ।
সুমন: Liberation war against Pakistan Army. Sorry guys. আদিবা আর জয়ের জন্য।
জয়: Thank you.
সুজয়: বিজয় সব যুদ্ধেই সবার আগে থাকত।
অজয়: কত পাকিস্তানি সেনা মেরেছি আমরা।
ঝুমু: বলকি, মানুষ মেরেছো?
স্বপ্নিল: আ: থামতো, ওরা মানুষ না অমানুষ।
সুজয়: হ্যাঁ। কত যুদ্ধে আমরা জয়ী হলাম। কিন্তু শেষ যুদ্ধে (কান্নায় ভেঙে পড়ে) ...
অজয়: শেষ যুদ্ধে বিজয়কে হারালাম। এই আজকের দিনে, ১২ ই ডিসেম্বর।
সুমন: ১২ মানে 12th. আর 16th এ তো Victory Day.
স্বপ্নিল: হাঁ, এবার বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে যাওয়া হবে না।খুব মিস করব।
মুমু: আমিও মিস করব।
অদিবা: স্মৃতিসৌধ কি?
সুমন: Martyrs Memorial, it is a monument.
সুজয়: শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরি।
স্বপ্নিল: আচ্ছা আমরা যদি এখানে একটা স্মৃতিসৌধ তৈরি করে ফেলি তাহলে কেমন হয়?
অজয়: খুব ভাল হয়।
সুজয়: এবারের বিজয় দিবসে সকল শহীদের স্মৃতিতে আমরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারি।
সুমন: কিস্তু এত কম সময়ে?
অজয়: তোরা কিছু চিন্তা করিস না। আমি সব জিনিষ জোগাড় করে দেব।
সুজয়: পাশের বাড়ির ছেলে মেয়েরা তোমাদের সাহায্য করবে।
(সবাই হৈ চৈ করতে করতে বেড়িয়ে যায়।)
দৃশ্য – ২
(সবাই স্মৃতিসৌধ তৈরিতে ব্যস্ত, এটা ওটা নিয়ে দৌড়চ্ছে। পাশের বাড়ির ছেলে মেয়েরা প্রবেশ করে।)
স্বপ্নিল: এইতো তোমরা এসে গেছ। দেখ অস্ট্রেলিয়া থেকে আমার ভাই বোনেরা এসেছে।
সুমন: ভাই বোন না।
জয়: Cousin.
রাকিব: ওই একই হল।বাংলায় ভাই বোনই বলে।
সুহী: তোমরা ভাল আছ তো?
ফারিয়া: চল কাজ শুরু করি।
(ব্যাকগ্রাউন্ডে গান বাজে ।বিজয়ের ছবি আর অজয় বড় ফুলের তোড়া নিয়ে প্রবেশ করে।)
অজয়: স্মৃতিসৌধটা খুব সুন্দর হয়েছে।
সুজয়: (ছবিটা সামনে রেখে ফুলের তোড়া হাতে নেয়।) সবাই শহীদদের শ্রদ্ধা জানাও।
(নীরবতার মধ্যে গান বাজে – সব কটা জানালা..। ফুল দেওয়া হয়।সাদা কাপড়ে ঢাকা শহীদের বেশে বিজয় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মঞ্চের সামনে দিয়ে চলে যায়)
অজয় ও সুজয়: জয় বাংলা।
সবাই: জয় বাংলা।
জয়: জয় বাংলা।
সুজয়: (জয়কে উপরে তুলে ধরে) এইতো আমাদের জয় বাংলা বলেছে।
সবাই:জয় বাংলা।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test