E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জুলি রহমান’র কবিতা

২০১৮ জানুয়ারি ৩১ ১৪:৪৬:৪১
জুলি রহমান’র কবিতা







 

কবিদের দালাল

আমি একজন কবি হতে চাই।
আমার অনেক কবিতা আছে।
একশো ,দুইশো ,হাজার লক্ষ!
এখন কবি হওয়ার উপাধিটা জরুরী--

কেউ একজন বল্লেন-
তাহলে তো তোমাকে কবিদের দালালের কাছে যেতে হবে!
একশত গ্যালন তৈল কিনতে হবে!
প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে তথাকথিত
পন্ডিতদের পায়ে তা মর্দন করতে হবে-

তাদের চিনবো কেমন করে?
তাদের নামের আগে লিখা থাকে
সুসাহিত্যিক;তোষামুদকারী ,সুপন্ডিত
তাদের মনটা জয় করতে পারলেই
রাতারাতি তুমি কবি হয়ে যাবে।
নচেৎ আজীবন কবিতার ঘানি টেনেও
কেউ উপাধি বিহীন কবি হতে পারে না

কিন্তু আমি তো জানি কবিতার ছন্দ ,মাত্রা ,তাল ,লয় সব ঠিক থাকলেই কবিতা হয় আর যিনি তা লিখেন তিনিই কবি।

আরে ধ্যাত;স্বরবিত্ত মাত্রাবিত্ত অমিত্রাক্ষরে যতোই তুমি ছন্দোবদ্ধ হও না কেনো তোমার কবিতা কোনো কবিতাই নয় ;যতোক্ষণ না তুমি কবিতার দালালের কাছে যাও!
এখন কবিতার জমিন দালাল বিহীন ক্রয় বিক্রয় হয়ই না।

এক্ষেত্রে পুরুষ হলে যতোটা সহজ।
নারীর বেলায় ভীষণ দুর্বোদ্ধ!
তবে সুন্দরী রমনীর জন্য মোটেও দুরহ নয়!
মহা ভাবনার কথা;তাহলে কী দীর্ঘ
ছত্রিশ বছরের সাধনা কবিতা লিখা ব্যর্থ?
তাঁরা কী আমার বইটা ছুঁয়েও দেখবে না?
তাহলে যে আসরে আসরে গাল ভরা বক্তৃতা হয়।কঠিন কাব্যের অমীয় বাণী
শুনান। কেউ কেউ তাঁরা এই শহরে গন্যমান্য
ব্যাক্তি।প্রথম আসনে বসেন মাইক হাতে নিয়ে।

তাদের মুখের ভাষার নীরেট শ্রবণে কখনো কখনো অরিজিনাল দন্তপাটি খুলে পড়ার উপক্রম হয় যে বড়ো!

হ্যা;তবে আর বলছি কী!যাও তাদের কাছে।চাও কবি হওয়ার স্বীকৃতি।দেখবে
আসরে আসরে তোমার কত্তো সুনাম!

বাতাসের কোষে কোষে শিমুল তুলোর মতো উড়বে তোমার নাম।
জলের ধারার মতো সুনীল সায়রে
গা ভাসিয়ে তুমি সুখের নেশায় জাবর কাটছো ।কাঁধ ঝাঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে এঁকে ওকে জ্ঞাণ বিলাচ্ছ।আহা তখন তোমার কী শান্তি!

একটু যে সমস্যা হয়ে গেলো !আমি যে
তৈল মর্দন বিদ্যায় তেমন পারদর্শী নই।
কারো পা চেটেপুটে শাদা করার বিদ্যা অর্জন করিনি যে;

তাহলে তোমাকে আরো একটা বুদ্ধি দেই।
তুমি মাইক হাতে নিয়েই নিজের পরিচয় দিবে অত্যান্ত সাহসের সাথে ।বুক চাপড়িয়ে বলবে;এই শহরের আমিই দশক ওয়ারী কবি।কবিতা লিখলেই সবাই কবি নয় ;কেউ কেউ কবি।

আরে ছিঃতুমিতো ভীষণ বাজে বুদ্ধির লোক হে!
জানো একবার কী হলো ?
একদিন।
এক আসরে মহাজ্ঞাণী তাপসদের মাঝে মুখ ফসকে আমি নিজেকে কবি জাহির করতেই -ওমা!কী মস্তবড়ো একটা তীর আমার বুকে বিঁধে গেলো!
ভুলের হুল আর তীরের যন্ত্রনায়
আমি ছটফট করতে থাকলাম।
জানো ;ঐ আসরের কেউ আমার বুকে
বেঁধা তীরটি খোলার চেষ্টাতো দূরে থাক ,একটু ডেটল তুলো ব্যান্ডেজ পর্যন্ত এগিয়ে দিলো না!তাই আমি ঐ সব কবিতার মহাজনদের খুব ভয় পাই।না বাবা;
আমার কবি উপাধীর কোনো দরকার নাই!তুমি চলে যাও !অন্য কাউকে তোমার এই অনেক টাকায় ত্রুয় করা কবিতার দালাল চালান দাও।ভুলেও কিন্তু আমার কাছে আর এসো না!

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test