E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মানিক বৈরাগী’র দুটি কবিতা

২০১৮ এপ্রিল ১৩ ১৫:৫১:৫৫
মানিক বৈরাগী’র দুটি কবিতা







 

ক্ষমা করো এশা

আমার আর কান্না আসেনা এশার কান্নায়
আমার চোখ শুকিয়েছে এশার অশ্রু জলে
আমিও একা হয়ে গেছি এশার মতো
এমন নারকীয় যজ্ঞ ঘটেনি একাত্তরে
কথিত মেধাবিরা সম্মিলিত নির্যাতন
করেছে তাকে
এশা আমার বোন,
প্রগতি প্রতিক্রিয়া মুদ্রার এপিট ওপিট
ওরা মুখোশ মানুষ, মূলত পশুর অধিক
তাদের নাম বাম ছাত্র ইউনিয়ন
তাদের নাম ঘাতক ছাত্র শিবির
তাদের নাম লিটন নন্দি
তাদের নাম ইমরান সরকার
তাদের নাম আসিফ নজরুল
তাদের নাম মামুন

এশা বোন আমার
ওরা আমাদের মতো পোশাক আশালক পড়ে
ঘুরে ফিরে চা খায়,পাশে বসে তাকিয়েও দেখে
ঠেকায় পড়লে প্রগতির কথা বলে সুবিধাও নেয় প্রচুর
ওরা ঠেকায় পড়লে আল্লাহ রাসুল কে বেচা বিক্রি করে,আত্মীয় পরিচয়ও দেয়
ওরা শিক্ষকের ছদ্ম বেশে,বিরোধ মীমাংসার নামে কাছে ঘেঁসে
তারপর দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়ে
ওরা একাত্তরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা ৭৫ এ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা ডাকসু নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা খালেদা নিজামীর সময়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা শাপলা চত্তরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল

ওরা ৫ জানুয়ারিতে ঝা্পিয়ে পড়েছিল
ওরা সাঈদিকে চাঁদে উঠিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা মৃনাল হকের ভাস্কর্য সন্ত্রাসে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
ওরা ইস্যু বানায় বছর বছর, ঝাঁপিয়ে পড়ে
তারপর মিশে যায় জনস্রোতে
তারপর আবার ইস্যু, ঝাঁপিয়ে পড়ে

আমরা যাদের বিশ্বাস করি তারা
ওরা আত্মীয় স্বজন, ব্যবসায়িক পার্টনার বনে যায়
তারাও রেহাই পেয়ে যায় অনায়সে
আমাদের ক্ষত, আমাদেরই বহন করতে হয়
নেত্রী ছাড়া আমাদের কেউ নাই
নেত্রীর ও আমরা ছাড়া কেউ নাই
তোমার আত্মচিৎকার পৌঁছে গেছে নেত্রীর কানে,জনে জনে
ঘুমাইনি নেত্রী, আমরাও ঘুমাইনি
আমি ভুলতে পারিনা সেই পৈচাসিক রাত
নেত্রী দুঃখি মানুষের কস্টে কাঁদে, নিজেরও দুঃখ সমুদ্র সম
এশা শুন,তোমাকে যারা নিপিড়ন করেছে
সেই নরক যন্ত্রনায় বুবুর কান্নাও থেমে গেছে, থেমে গেছে সমুদ্রের স্রোত বায়ু প্রবাহ
এশা তুমি জান শয়তান, ঘাতকের প্রজনন
জ্যামিতিক হারে বাড়ে
মীর জাফর, নাতুরাম গডসে, মোস্তাক, ফনিভুষন,
তাহের ঠাকুর, মেজর জিয়া।
ক্রমাগত গানিতিক হারে হ্রাস হচ্ছি আমরা
আমাদেরও ঐক্য হতে দেয় না, বিভেদ বাড়ায় ও বাড়ে
ক্ষমা করো বোন এশা
ক্ষমা করো, ক্ষমা করো

একটি স্থায়ি ঘুম চাই

এখনো আমার ঘুম আসছে না
ঠিক এই সময়ে চোখ জুড়িয়ে ঘুম আসে
চোখে ভাসে এশার বস্ত্র হরণের ছবি
আমার কানে ঠন ঠন করে বাঁজে মা আমার কাপড়
আমার মগজের কোষে সেই কান্নার আর্থ চিৎকার
হামা গুড়ি দি মাটির বারান্দায়,এঘর থেকে ও ঘরে যাই,
দাও দাও করে ঝলছে আমার উঠুনের গোয়াল ঘর,বোনের ছুটা ছুটি আতংকিত চোখ
তারপর বহু যুগ পর
আমি স্পষ্ট দেখতে পাই আরজু মণির মাথা ফাটা নিথর দেহ
এখনো আমার শিউরে উঠে আরাফাতের মৃত সাদা চোখের ছবি
এশা তোমার উপর তার ও অধিক দখল গেছে
বুলেই গিয়েছিলাম সেই সব দু:সহ দিনের কথা
বুবু তুমি তখোন ক্ষমতায় ছিলে না
যে কারণে এই ত্যাগ ও প্রতিক্ষা

বুবু এখন তোমার ক্ষমতা কাল
এটাই কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র?
এশার কান্না আমাকে ঘুমাতে দেয় না
এমোন বেঁচে থাকার চাইতে, মরণ টি আমার উপযুক্ত কি না?
আমি ঘুমুতে পারছি না,আমার গ্রীবার প্রতিটি শিরা উপশিরা ফুলে ফেপে উঠছে
আমার হাত পা নিষ পিষ করছে
কাপছে থর থর করে, ঘাম ঝরছে বৃষ্টির ধারায়

বুবু

আমি ঘুমুতে চাই, একটি স্থায়ি ঘুম চাই
আর তেমন চাওয়া নাই, কোন কালেও ছিল না আমার।

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test