E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মালিপাখির এক গুচ্ছ ছড়া-কবিতা

২০১৮ মে ০৮ ১৩:৩২:২৩
মালিপাখির এক গুচ্ছ ছড়া-কবিতা







 

মা

কোথায় আমার পদ্য বাবুই ! কোথায় আমার শিউলি আতর গাঁটি ?
খুঁজতে খুঁজতে দিন কেটে যায় তবু আপন মনে একলা চাঁদে হাঁটি ।
হাঁটতে হাঁটতে কোথায় যে যাই আমি , চাঁদের দেশের চরকা কাটা বুড়ি ;
কেবল ছড়ায় আলোর আবীর হেসে । পথ গুলো তাই আপন মনে জুড়ি ।
বুকের ভিতর কত কী ফুল ফোটে ! একলা আমি শোনাই যে গান কাকে ?
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !

কোথায় আমার পদ্য সানাই ! কোথায় আমি সাগরকে ফের ডেকে ,
বলতে পারি এই যে আমার ও ভাই ; পথ চলি রোজ তোমায় বুকে রেখে ।
দাও শুধু ভাই ছোটার সাহস তুমি । পেরুই আবার অচেনা সব সাঁকো ।
বাড়িয়ে দিলুম আশার দু হাত ভোরে । আমায় শুধু আপন করে ডাকো !
খুশির পালক উড়তে থাকে মনে , হারিয়ে যাওয়া বনপথের বাঁকে ;
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !

কোথায় আমার পদ্য তিতাস ! ময়না , শালিক , তিতির পুরের ছুটি ---
হয়তো আমি-ই এখন আবার শোনো , ভোর বেলা রোজ পাহাড় চূড়ায় উঠি !
কেউ কি তাকাও একটি বারও ? ভাবতে ভাবতে সাতটি পাখির শিসে ,
পথ হারিয়ে ওদের সাথে আমি , হঠাৎ করেই কখন যে যাই মিশে ।
কী যে মধুর সুর ছড়িয়ে তারা , আপন করে সবাই কাছে ডাকে ।
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !

কোথায় আমার পদ্য মাদল ! সাঁওতালী গান , পাহাড়তলির বাঁশি --
এই যে বুকে ছড়িয়ে আছে দ্যাখো , রূপকথা আর কুরচি ফুলের হাসি !
সবাই ছড়ায় টাপুর-টুপুর খুশি । মোহর দুপুর নামতা শোনায় দুলে !
দোলায় কে যে ছবির ভুবন খানি ? গভীর নেশায় পথ গুলো যাই ভুলে !
পথ হারাবো কেমন করে আমি ? পথ যে শুধুই ছবির ভুবন আঁকে !
দু হাত দিয়ে জড়িয়ে থাকি আমি সেই যে আমার ছেলেবেলার মাকে !


মাথা

কি পারো কি ? কি পারো কি ? কিছুই পারোনা যে !
নেই কোনো মান , নেই কোনো হুঁশ । খুব তুমি খুব বাজে !

না পারাটাই তোমার কাছে সহজ বনে গেছে !
কি করে আর রইবে তুমি দোলনা দেশে বেঁচে !

হাড় জির জির তোমার দেহে বসুক আঁধার এসে !
যাও ভেসে যাও , এবার কবি তোমার অলীক দেশে -- !

আমরা ওড়াই মেধার মগজ । আমরা ঘোরাই লাঠি !
চাইনা রূপোর রূপকথা পুর ! চাইনা সোনার কাঠি !

তাকাইনা কেউ গাছের দিকে , ছুঁইনা রোদের হাসি !
মেধার মগজ ছড়াই পাড়ায় আমরা ভুবন বাসি !

এইতো তোমার কবির জীবন ! জমাও হেলা খালি !
ফুরায় তোমার সকল খেলা । চোখেও পড়ে কালি !

আমরা পারি । আমরা পারি । আমরা অনেক কিছু --- !
নেই ক্ষমতা ! দু-হাত আকাশ ! কবির মাথা নিচু !

ঘুম

আমি দুললাম মেঘনা পাতায় । আমি ডুবলাম জলে ।
গান গেয়ে যায় কবিতা দেশ । গান গেয়ে পথ চলে -- ।

বাউল সাগর আগুন দিলেন । হেসে বললেন ওহে ,
গুন টেনে যাও । গুন টেনে যাও । শুধু বাঁচবার মোহে !

ছবি আঁকলাম । উড়িয়ে দিলাম । উড়তে উড়তে তারা --
দুলিয়ে দিলো আমার বুকে আকাশমনির চারা !

আকাশ আমার । আকাশ আমার । হাজার বছর শেষে -- ।
কেউকি নেশায় পড়বে ছবি ? কেউকি হাওয়ায় ভেসে --

বলবে আবার ও শিউলি দ্বীপ ! তোমায় খোঁজা বাকি !
ভাবতে ভাবতে পাথর পুরের পথিক হতে থাকি !

পাথরে রাত । পাথরে রাত । পাথরে রাত পড়ে ।
কিশোরী তুই জাগাস আমায় হাজার বছর পরে -- !


ছুট

ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় আকাশ ঘুড়ি ;
নুপুর পরে দোলায় হাতের মোহর চুড়ি ।
বুকের ভাষা বিজন সুতোয় আবার জুড়ি ।
এখন তুমি করছো কিগো চাঁদের বুড়ি ?
ঘোড়া ছুটছে-- ঘোড়া ছুটছে-- ঘোড়া ছুটছে ---

ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় কদম বাঁশি ;
হৃদয় জুড়ে ছড়ায় সবুজ দিনের হাসি ।
বাতাস যেন বাজায় খুশির ঝাঁঝর - কাঁসি ।
এখন তুমি করছো কিগো পারুল মাসি ?
ঘোড়া ছুটছে--- ঘোড়া ছুটছে--- ঘোড়া ছুটছে----

ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় পালক তুলি ;
সুজন দ্বীপে সাজায় স্মৃতির দুপুর গুলি ।
পাতার ডাকে বাউল মনের দুয়ার খুলি ।
এখন তুমি করছো কিগো কুমোরটুলি ?
ঘোড়া ছুটছে-- ঘোড়া ছুটছে--- ঘোড়া ছুটছে---

ভোর হয়েছে , ভোরের আলোয় কিশোর পাড়া ;
দোলায় বুকে ক্ষীরের পুতুল , গোলাপ চারা ।
পাহাড় থেকে গড়ায় মেঘের বিমল ধারা ।
এখন তুমি করছো কিগো কুসুম তারা ?
ঘোড়া ছুটছে--- ঘোড়া ছুটছে -- ঘোড়া ছুটছে ----

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test