ছেলে বেলার রোজা রাখার গল্প
এম এ মালেক
আমার জন্মস্থান হচ্ছে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রম্মগাছা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে। আমাদের পরিবার মোটামুটি ধর্মভীরু বলা চলে। খুব কড়াকড়ি না থাকলে ও ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলা হয়। বিশেষ করে রোজার মাসটাকে উৎসব মুখর বলেই মনে হত। আকাশে বাতাসে ঘরের আংগিনায় রোজার আমেজ ছড়ানো থাকতো। আমি অল্প বয়সেই রোজা রাখা শিখেছি। রোজা রাখা খুব গর্বের কাজ বলে মনে করতাম। সমবয়সী মহলে গণনা চলতো কে কয়টা রোজা রাখতো। কিছু কিছু মুরুব্বি ছিলো বিশেষ করে আমার বাড়ীর পশ্চিম পাশের আব্বাচ চাচা। তিনি আমাদের মতো সমবয়সী কাউকে দেখলেই ডেকে জিজ্ঞেস করতো আজ কয়টা রোজা হলো?
গতকাল আমাকে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা মুসলিম ছাত্রাবাসের ১নং রুমের বর্ডার অথাৎ আমার রুম মেট ফারুক ভাই প্রশ্ন করল, আজকে রোজা কয়টা? আমি সহজ সরলতা মনে উত্তর দিলাম ২২ টা উনি হাঁসি দিয়ে বললেন একদিনে রোজা ২২ টা হয় কিভাবে? আজকে তো রোজা একটাই। ভাইয়ের সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর খুজতে হাড়িয়ে গিয়েছিলাম সেই ছেলেবেলাতে।
কারণ ঠিক একই ভাবে বাড়ীর পশ্চিম পাশের আব্বাচ চাচা সহ আরো অনেকেই প্রশ্ন করতো আজকে রোজা কয়টা? আমরা তিন ভাই মেজো ভাই এম এ খালেক ও আম্মা অনেক সময় চাইতো না যে, আমি রোজা রাখি। কারন আমি খুব চিকোন ছিলাম স্বাস্থ্য ততোটা ভাল ছিলোনা। কত কি বুঝ দিত। পাশের বাসার চাচি শিখিয়ে দিত যে, রোজা রেখে গলা শুকিয়ে গেলে পুকুরে নেমে ডুব মেরে পানি খেলে কিচ্ছু হবে না। কেউ তো আর দেখতে পাচ্ছে না। আবার খুব বেশী খিদে লাগলে ঘরে দরজা লাগিয়ে চুপিচুপি ভাত খেয়ে নিলেই হলো
। কে শুনতো কার কথা। আমি তখন সহিশুদ্ধভাবে রোজা রাখায় ব্যস্ত ছিলাম। মুখে থুতু জমুক আর নাই জমুক থু থু করে থুতু ফেলে রোজার বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে সদা সচেষ্ট থাকতাম। ওদিকে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যেত। আছরের পর সময় যেন থমকে দাঁড়ায়। কিছুতেই আর এই সময়টুকু পেরোতে চায় না। মুখ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। পায়ে গায়ে বল পাইনা। হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে থাকি। আম্মা বকা দিতো । এত কষ্ট করে রোজা রাখার কি দরকার! রোজা রাখার কি দরকার মানে! একটা রোজা না রাখলে যে পরে ষাইটটা রোজা রাখতে হবে। ওদিকে নামাজ না পড়লে যে দুই কোটি অষ্টাআশি লক্ষ বছর দোযখে পুড়তে হবে। সেই হিসেব কিন্তু আর মনে থাকেনা।
সেক্ষেত্রে আমি অংকে বড়ই কাঁচা। আম্মা বারবার জিজ্ঞেস করেন নামাজ পড়তে এত কিসের কষ্ট হয়! নানা আমার মত বেনামাজী রোজাদারদেরকে বলতো বাঁদুরে রোজাদার। বাঁদুর পাখি যেমন এক সন্ধ্যায় সেহেরী খায় আর অন্য সন্ধ্যায় ইফতারি করে। মাঝখানে নামাজ লাগেনা। শুধু গাছের ডালে উলটো হয়ে ঘুমায়। আমরাও নাকি বাঁদুরের মত। সন্ধ্যায় মসজিদ থেকে ভেসে আসা মুয়াজ্জিনের আজান বড়ই সুমধুর হয়ে কানে এসে আঘাত করে। হাপুস হুপুস ওযু সেরে এসে ইফতারীর সামনে বসে যাই। আম্মু মিলিয়ে দেখেন ঠিকমত ওযু করেছি কিনা। কপালের সব অংশ ভিজেছে কিনা। আযান হওয়ার সাথে সাথে ইফতারীর উপর হামলে পড়ি। আম্মা বলেন পরদিন রোজা থাকার দরকার নেই। তাই সেহেরিতে ডাকেন না,তাই আমার সকালে ঘুম থেকে উঠে কেঁদে ফেলার মতো অবস্থা হতো।
আমার একটা বাজে রোগ আছে! অল্প কিছুতেই চোখ ছলছল করে। আম্মা আমাদের তিন ভাইয়ের জন্য ভাত ঢেকে রেখেছেন। সকালে রাগ করে ভাত খাইনা। অবশ্য দুপুর না আসতেই রাগ শীতল হয়ে যায়। আস্তে আস্তে গিয়ে প্লেট নিয়ে খেতে বসি। আম্মা টের পেলেও কিছু বলেন না। তখন কিন্তু মনে হত আম্মাকে ফাঁকি দিয়ে ভাত খেয়ে নিলাম। আম্মু টেরই পেলো না। আমি কত সাবধানী! পরে এমন ভাব দেখাতাম যে,রাগ করে ভাতই খাবো না। সারাদিন না খেয়ে থাকব। সেই কথা গুলো এখন মনে খুব নাড়াদেয় আমার, এই জন্য যে আমি গত ২০১২ সালে এইচ এস সি পাশ করে সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজে বিবিএ তে ভর্তি হয়েছি। যার কারনে বাড়ীতে থাকা হয় না। থাকতে হয় সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা মুসলিম ছাত্রাবাসে।
এখানে এসে আমি আমার মায়ের সেই ইফতার নিয়ে বসে থাকা চোখে পড়ে না, চোখে পড়ে বন্ধু, বড় ভাই, ছোট ভাইসহ আমাদের নিত্যদিনের সংজ্ঞী খালার ব্যস্ততাকে। যিনি সর্বদা আমাদের জন্য ইফতার ও সেহেরী তৈরী করেন। এখন সেহরীতে আমাকে কেউ ডাকে না। ডাকার দরকার হয় না। কি এক উদ্ভট জিনিস শিখেছি গত রমজান থেকে। একবারে সেহেরী খেয়ে নামাজ পড়ে ঘুমাই। আর উঠি সকাল ৯ টায়। তবে এখন আগে উঠার চেষ্টা করি কারণ বেশীক্ষন ঘুমালে রোজা মাকরুহ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তার পর গোসল সেরে নামাজ পড়ে পড়তে বসি। রোজা আমাদের ত্যাগের মহিমা শেখায়।
সত্যিকারে আমরা যদি রোজা পালন করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের মাঝেই ক্ষুদ্র স্বার্থের বিভেদগুলি ভুলতে পারবো। নিজেদের স্বার্থপরতাকে কুরবানী দিয়ে মানুষকে ভালবাসতে পারবো। তবে এখন বেশী মনে পড়ে ছোট বেলার সেই দিন গুলোর কথা। সত্যি সেই দিন গুলোকে কখনো ভুলা যাবে না। ছোট বেলায় ঈদে যে আনন্দ করতাম এখন কেন জানি করতে চাইলে ও করতে পারি না।
ঈদের দিন সকালে বড় ভাই ও বোন বলতো তোর কাছে কি খুচরা টাকা আছে? নামাজে গিয়ে টাকা দিতে হবেতো। আমার কাছে টাকা থাকা সত্তেও আমি হেঁসে বলতাম না নেই। আর ঠিক তখনি ওরা আমাকে টাকা দিতো। আমার খুব ভাল লাগতো আহ কি মজাই না পেতাম। আগে নিয়ে আনন্দ পেতাম এখন দিয়ে আনন্দ পাই। সাথে আবার নতুন নোট তো আছেই। কার কার মনে পড়ে সেই দিন গুলোর কথা? আমার খুব মনে পরে সেই ফেলে আসা রমজান মাসের দিন গুলোর কথা। তাইতো কোন এক বৃষ্টি ভেজা সকালে লিখে ফেললাম আমার ছেলেবেলার রোজা রাখার গল্প।
(ওএস/এসপি/জুন ০৭, ২০১৮)
পাঠকের মতামত:
- পাংশায় মাদক ব্যবসায়ীসহ গ্রেফতার ৪, ইয়াবা-গাঁজা উদ্ধার
- গরিব দেশে নিডো-সেরেলাকে বেশি চিনি মেশাচ্ছে নেসলে
- ‘বৈষম্য ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলকেও ছাড়িয়ে গেছে’
- প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন
- গৌরনদীতে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী
- অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে গৃহবন্দী থেকে মুক্ত করতে এসপির কাছে আবেদন
- ঈশ্বরগঞ্জে ইউএনওর বিদায় অনুষ্ঠান
- বড়াইগ্রামে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন
- ঈশ্বরদীতে প্রাণিসম্পদের সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন
- সময় পেলেই সাঁতার কাটুন
- জাতির পিতার সমাধিতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা
- ঈশ্বরগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী
- রাজৈরে প্রাণিসম্পদ সেবা ও প্রদর্শনী
- সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও স্থানীয় সুধী সমাজের সাথে জনসচেতনতামূলক মতবিনিময়
- গোপালগঞ্জে থ্রি হুইলার ও ট্রলির সংঘর্ষে ব্যবসায়ী নিহত
- ৫ লাখ টাকায় সালমানের বাসায় গুলির নির্দেশ!
- ‘দেশ সবার আগে’, মোস্তাফিজ ইস্যুতে সুজন
- গোপালগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শণী
- ডিএমপির ৬ এডিসি-এসির বদলি
- গরমে দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমিয়ে চলছে ট্রেন
- কালকিনিতে পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে প্রাণ গেলো আসামির
- ‘অপপ্রচার রোধে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেব’
- ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
- তীব্র গরমে নিরাপদ থাকতে করণীয়, যা বলছেন চিকিৎসকরা
- ‘সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে’
- ‘প্রভাব খাটিয়ে আর পরিবেশের ক্ষতির সুযোগ নেই’
- নগরকান্দায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
- পানি উঠছে না নলকূপে
- ‘মানুষের পুষ্টির যোগান দিচ্ছে খামারি মালিকরা’
- সালথার মাঝারদিয়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৩২ লাখ টাকার ক্ষতি
- নোয়াখালীতে মেলা নিয়ে বিরোধে মাদরাসা ছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
- ভোটের অপেক্ষায় ভারত
- অনারের মিডরেঞ্জ ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন এক্স৯বি
- পরীমনিকে হাজির হতে আদালতের সমন
- রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি: ১৭ নারীসহ ৫২ জন রিমান্ডে
- ‘মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস’
- তীব্র গরমে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব, প্রয়োজন সর্তকতা
- বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ৪ টাকা
- ‘পাঁচ হাজারের বেশী বাঙালি লন্ডনে এক বিক্ষোভ সভায় মিলিত হয়’
- ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত
- হামলা মামলার গ্রাম আমতলায় ৩০ বছরের বিরোধ মিটমাট
- পাংশায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
- ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন’
- কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
- পাংশা থানা পুলিশের অভিযানে ৩ আসামি গ্রেফতার
- কাল থেকে শুরু হচ্ছে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ
- বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
- পাংশা ও কালুখালী উপজেলা নির্বাচনে ২১ প্রার্থী বৈধ
- মুক্তিযোদ্ধার বেহাত হওয়া জমি ৩৯ বছর পর উদ্ধার
- বাগেরহাটে তীব্র তাপদাহে জনজীবন স্থবির, বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !