কবি জীবনানন্দের ব্রজমোহন কলেজ
ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি/ তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর’—বরিশালের রূপবৈচিত্র্যে মুগ্ধ হয়েই এই কবিতা লিখেছিলেন রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ। নির্জনতার এই কবি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক ছিলেন।এখনো দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা আসেন জীবনানন্দ দাশের এই কলেজ দেখার জন্য।
‘গোলগাল বেটে ও সুবোধ চেহারার ধুতি পাঞ্জাবি ও চাদরমণ্ডিত অধ্যাপক জে.এন.ডি ওরফে জীবনানন্দ (তার উচ্চারণ কিঞ্চিৎ ভারী ছিল বলে তৎকালীণ গুণগ্রাহী ছাত্ররা তাকে এই উপাধি দিয়েছিলেন) যে কবিতা লেখেন, এ খবর জানার পরে তার ছাত্ররা কী পরিমাণ বিস্মিত হয়েছিলেন, যার জন্য শিক্ষকদের বিশ্রামকক্ষে উঁকি মেরে তাকে আবার দেখে আসতে হয়েছিল।’
কবি হুমায়ুন কবির (রচনাবলি, বাংলা একাডেমি, পৃষ্ঠা ২৪৪) জীবনানন্দের বরিশাল বিএম কলেজের বর্ণনা দিতে গিয়ে এই যে কথাগুলো লিখেছেন, তার কাছাকাছি মন্তব্য করেছেন সলিল গঙ্গোপাধ্যায়ও। তার ভাষায় (জীবনানন্দ দাশ, দৈনিক কবিতা, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৩), ‘তিনি (জীবনানন্দ) বেচারার মতো ক্লাসে পড়িয়ে যাচ্ছেন এবং অবসরে বিশ্রামঘরে মুখে বইচাপা দিয়ে রাখছেন। তার একাধিক মহৎগ্রন্থ যে প্রকাশিত হয়েছে ইত্যবসরে তা জানার সামান্য অবকাশই হত ছাত্র ও সহকর্মীদের। এই তার ব্যক্তিত্বের মগ্নতা।’
খোদ রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় বাংলা কাব্যসাহিত্যে বিস্ময়করভাবে আলোচিত ছিলেন বিএম কলেজের নিত্যান্ত নিরিহ, মুখচোরা ইংরেজীর এক অধ্যাপক। উপমহাদেশের বড় পত্রিকা ও সমালোচকরা চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে থাকতেন সেই নিরিহ অধ্যাপকের লেখাকে কেটে টুকরো টুকরো করতে। জেডিমা, অশ্লিলতার কবি কিংবা গুঁইসাপ স্যার দেয়া হয়েছিল প্রাথমিক উপনাম। বিশ্বসাহিত্যে কোন কবিকে জীবদ্দশায় এমন উপহাসমূলক উপনাম কখনোই কাউকে পেতে হয়নি।
যদিও সমস্ত কুহক ভেদ করে সেকালের কবিতার ডোমঘরে অনবরত কাটাছেঁড়া হতে থাকা মানুষটি আজ আমাদের কাছে বড়ই পবিত্র নাম। বেদনাদায়ক চিত্তের নির্জলা আশ্রয়ন-জীবনানন্দ দাশ।
রবীন্দ্র যুগে বিএম কলেজের ইংরেজীর অধ্যাপক জীবনানন্দকে নিয়ে আলোচনা মেনে নিতে পারছিলেন না সেই সমস্ত আলোচকরা যারা রবীন্দ্রনাথকে ভগবান বানাতে বসেছিলেন। বিপরীতে জীবনানন্দকে মূল্যায়ন করতে শুরু করলেন স্রোতে ভেসে যাওয়া পানার সাথে। তবে জীবনানন্দ সহ্য-অসহ্যের বালাই কখনোই ধরতেন না। তাই সাহিত্যের ত্রিশের দশকটা যুগ-যুগান্তরে প্রাসঙ্গিক।
‘অন্তর্জাগতিক এবং বাহ্যিক সমালোচনার টেক্কা’-এই দুইয়ে নিরন্তর লড়াই চলতো তখন। নিন্দুকেরা নিন্দা করে যেত আর জীবনানন্দ লিখে যেতেন হিম ডানায় ভর করে। অন্তর্জাগতিকে অভ্যাস্ত জীবনানন্দের লেখার মূল রসদ ছিল তার পারিপার্শ্বিক প্রকৃতি ও পরিবেশ। আরও সংকুচিত করে বললে তার উল্লেখযোগ্য কবিতার অবয়ব গড়ে উঠেছে বিএম কলেজে বা তার আসেপাশে।
তিনি অতিসাধারনের মাঝে অত্যান্ত অসাধারন উপমা-দোত্যনা খুঁজে পেতেন। আরও একটি কথা বলে রাখা শ্রেয় যে বিএম কলেজ, বিএম স্কুল ও তার বাড়ি একই সুতোয় গাঁথা। হাটাপথে জীবনানন্দ কলেজে আসতেন এবং হাটাপথেই বাড়ি ফিরতেন। জীবনানন্দের বাড়ি থেকে বিএম স্কুল যত কাছে, বিএম কলেজ তত কাছে নয়। বিএম স্কুল তার বাড়ি থেকে যেদিকে, কলেজ ঠিক তার উল্টো দিকে। কলেজ আওয়ারে চির চুপচাপ এই মানুষটিকে বিএম কলেজ এলাকায় পাওয়া যেত এবং বিকেলদিকে বিএম স্কুল এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত।
কোজাগরি পূর্নিমার রাতে প্রায়শই বরিশাল উপ-শহরে যারা বাসকরতেন তারা জোৎস্নাবিলাসে বের হতেন। বের হতেন জীবনানন্দও। বিএম স্কুলের মস্তবড় মাঠটি এসব রাতে ভেসে যেত জোৎস্নার প্লাবনে।
পাশেই মন্তাজ মিয়ার ঘোড়ার আস্তাবল। মন্তাজ মিয়ার ছেলে ছিল মঈন। মঈন শব্দটি শুদ্ধরুপে কেউ না ডাকলেও এই শিশুটির বন্ধুরা মঈনকে মহীন বলে ডাকতো বলে জানা যায়। থৈ থৈ জোৎস্নার মাঠে মঈন বা মহীনের পিতা মন্তাজ মিয়ার ঘোড়াগুলো ঘাস খেতো। যেহেতু পিতার ঘোড়া সেই সূত্রে অধিকাংশরা মহীনের ঘোড়া বলেও পরিচিত ছিল। মাঠ, জোৎস্নার প্লাবন আর কোজাগরি পূর্নিমায় ভেসে ভেসে ঘাস খাওয়া ঘোড়াদের চিত্র পাওয়া যায় জীবনানন্দের ‘ঘোড়া’ কবিতার একাংশে।
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোৎস্নার প্রান্তরে,
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন-এখনও ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর ‘পরে’।
১৯৩৫ সালে কলকাতা থেকে ফিরে এসে বিএম কলেজে ইংরেজীর প্রভাষক পদে যোগ দেন। এখান থেকে ১৯৭৪ এর কিছু আগে বরিশাল ত্যাগ করে ফের কলকাতায় ফিরে যান।
অতিমাত্রায় নিরিহ জীবনানন্দ বিএম কলেজে অধ্যাপনা জীবনে কখনোই শিক্ষার্থীদের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। পুরো জীবনে হাতে গোনা চার-পাঁচজন ছাত্রের সন্ধান পাওয়া যায় যারা তার প্রিয় পাত্র ছিলেন কিংবা ঐ কয়জনেই জীবনানন্দের ভক্ত ছিলেন।
যদিও বর্তমানে ইংরেজী বিভাগ কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন মূল এলাকা ছাড়িয়ে পশ্চিম সীমানার বর্ধিত অংশে নেয়া হয়েছে। তবে বর্তমান পদার্থবিদ্যা ভবনই ছিল তৎকালীন মূল ভবন। এই ভবনের উল্টোদিকে দুটো ছাত্রাবাস ছিল।
(আরকে/এসপি/অক্টোবর ১৮, ২০২১)
পাঠকের মতামত:
- কুমারখালীতে আব্দুল মান্নান খান, দৌলতপুরে বুলবুল আহমেদ চৌধুরী টোকেন ও মিরপুরে এ্যাড. আব্দুল হালিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- দিনাজপুরে বাবু, আফসার, বিপু ও ফারুক উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- দিনাজপুরে পৃথক ঘটনায় নারীসহ তিনজনের মৃত্যু
- আগৈলঝাড়ায় আনারস প্রতীকের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভা
- আলফাডাঙ্গা আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
- ভোটকেন্দ্রে হাতুড়ি প্রদর্শন, যুবক জেল হাজতে
- ফরিদপুরে বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্র পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার
- ‘শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল হলে কঠোর ব্যবস্থা’
- শ্রীমঙ্গলে হামলা ও বাড়ির প্রাচীর ভাঙার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
- ধামরাইয়ে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
- বাগেরহাটে ভোটকেন্দ্রে এজেন্টকে মারপিট, আ.লীগ নেতার কারাদণ্ড
- পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেলেন ফরিদপুরের ৪৮ প্রার্থী
- রাজবাড়ীর তিন উপজেলায় ভোটার উপস্থিতি কম
- চাটখিলে অনিয়মের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন, জুতা মিছিল
- দ্বিতীয় ধাপে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে: সিইসি
- সোনাইমুড়ীতে ৬ নির্বাচন কর্মকর্তা আটক, জাল ভোট দেওয়ায় ২ জনের কারাদণ্ড
- ‘কোরবানির ঈদের আগে ভোজ্য তেলের দাম বাড়বে না’
- সালথায় বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন ডিসি-এসপি
- সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- ‘দেশে চালের উৎপাদন ৪ গুণের বেশি বেড়েছে’
- ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার
- সাতক্ষীরার ৩ উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
- নাশকতা মামলায় জামায়াত নেতা আজহারসহ ১১ জনের কারাদণ্ড
- লক্ষ্মীপুরে পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
- সালথা উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
- রাইসির মৃত্যুতে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক বৃহস্পতিবার
- ওয়ালটন নিয়ে অ্যাকশনধর্মী ধামাকা দেখালেন আমিন খান
- দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা
- বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের আলোকিত প্রদীপ রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি
- রিকশা-ভ্যানের প্যাডেলে মুক্তিযোদ্ধার জীবনযুদ্ধ
- চাঁদপুরে উত্তাপের মাঠে নিরুত্তাপ ভোট
- জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত মুমিনের
- ‘নিপুণের পেছনে বড় শক্তি আছে’
- ‘বিয়ের পর আমার কাজের মান ভালো হয়েছে’
- ‘আমি কোনো অপরাধ করিনি যে, শাস্তি পেতে হবে’
- ‘ভিসানীতির অধীনে আজিজ আহমেদকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র’
- ‘আমরা যেন হাল না ছাড়ি, বুকে বল নিয়ে চলি’
- চুয়াডাঙ্গার দুটি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে, ভোটার উপস্থিতি কম
- লক্ষ্মীপুরের দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে
- আজ লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস
- নড়াইল সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস
- প্রথমবার এলপিএলে মোস্তাফিজ, খেলবেন ডাম্বুলার হয়ে
- শ্রীনগরে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দোয়াতকলমের নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন
- যশোরে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের চিনেন না ভোটাররা
- নির্বাচন উপলক্ষে ২৯ মে ১১১ উপজেলায় ছুটি
- সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
- ‘আলেম-ওলামাদের কল্যাণ প্রধানমন্ত্রীর হাতেই হয়েছে’
- আজ যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ
- ‘বিএনপি হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচন বর্জন করেছে’
- ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ১২
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !