E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ হুমায়ুন আজাদের জন্মদিন

২০১৫ এপ্রিল ২৮ ১৫:১১:৫৩
আজ হুমায়ুন আজাদের জন্মদিন

নিউজ ডেস্ক : হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী লেখক। আজ এই স্পষ্টবাদী, নির্ভীক মানুষটির জন্মদিন। তিনি জন্মেছিলেন ২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ সালে বিক্রমপুরের রাড়িখালে। জন্মদিনে এই প্রখ্যাত লেখক, সাহিত্যিক কবিকে জানাই অনেক অনেক শ্রদ্ধা। তিনি তাঁর লেখার জন্য মানুষের অন্তরে চিরদিন জীবিত থাকবেন।

তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতি ভাষ্যকার ও কিশোর সাহিত্যিক। তিনি ৭০টির বেশি বই লিখেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সৃষ্টি করেছেন ভিন্ন ধারা। ড. হুমায়ুন আজাদ বিক্রমপুরের ভাগ্যকুল ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামে নানাবাড়িতে ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি পার্শ্ববর্তী রাড়িখালে। ছাত্রজীবনে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি ১৯৬২ সালে রাড়িখাল স্যার জে সি বোস ইন্সটিটিউশন থেকে পাকিস্তানের মধ্যে ১৮তম স্থান অধিকার করে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। উভয় ক্ষেত্রে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।

হুমায়ুন আজাদের প্রথম প্রকাশিত বই ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ (১৯৭৩) কবিতার হলেও এর পরে ভাষাবিজ্ঞান চর্চায় বেশি গুরুত্ব দেন। কাব্যগ্রন্থ ‘জ্বলো চিতাবাঘ’ (১৯৮০), ‘সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে’ (১৯৮৫), ‘যতোই গভীরে যাই মধু যতোই উপরে যাই নীল’ (১৯৮৭), আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে’র (১৯৯০) মাধ্যমে কবিতাপ্রেমীদের দৃষ্টি কাড়েন এবং অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৯২ সালে প্রবন্ধের বই ‘নারী’ প্রকাশিত হলে তিনি মৌলবাদীদের রোষানলে পড়েন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৫ সালে বইটি নিষিদ্ধ হয়, তবে ২০০০ সালে বইটি মুক্ত হয়। তার প্রবচনগুচ্ছ নিয়েও একটি শ্রেণীবিদ্বেষ ছড়ায়। ১৯৯৪ সালে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। প্রথম উপন্যাস ‘ছাপান্ন হাজার বর্গমাইল’ আলোড়ন তোলে ও বিপুল সমাদৃত হয়। উপন্যাসের মাধ্যমেও তিনি তার চেতনার প্রকাশ ঘটাতে থাকেন। ‘সবকিছু ভেঙে পড়ে’ (১৯৯৫), ‘মানুষ হিসাবে আমার অপরাধসমূহ’ (’৯৬), ‘শুভব্রত তার সম্পর্কিত সুসমাচার’ (’৯৭), ‘রাজনীতিবিদগণ’ (’৯৮), ‘কবি অথবা দ-িত অপুরুষ’ (’৯৯), নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধ’ (২০০০), ‘ফালি ফালি করে কাঁটা চাঁদ’ (’০১), ‘শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা’ (’০২), ‘১০০০০ এবং আরো একটি ধর্ষণ’ (’০৩), ‘একটি খুনের স্বপ্ন’ (’০৪) ও ‘পাকসার জমিন সাদ বাদ’ (’০৪) একে একে প্রকাশিত হতে থাকে এবং বিপুল প্রশংসিত হতে থাকে। এর সঙ্গে কবিতা, প্রবন্ধ ও ভাষাবিজ্ঞানের বইও প্রকাশিত হয়। তার রচনার পরিমাণ বিপুল, যাতে তিনি সামাজিক প্রথার বিরোধিতা করেছেন সর্বত্র।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমীর বইমেলা থেকে ফেরার পথে পার্কে ওত পেতে ছিল ঘাতক উগ্র মৌলবাদীরা। চাপাতি দিয়ে আক্রমণ করে তাকে গুরুতর আহত করে। আক্রমণের প্রতিবাদে সারাদেশ উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল। সচেতন মানুষের আন্দোলন তাকে মৃত্যুর মধ্য থেকে জীবনে ফিরিয়ে আনে।৭ আগস্ট ’০৪ তারিখে বিশ্ববিখ্যাত কবি হাইনরিশ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। এর মাত্র পাঁচ দিন পর ১২ আগস্ট মিউনিখের ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই মৃত্যু ২৭ ফেব্রুয়ারির আক্রমণেরই চূড়ান্ত পরিণতি।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ২৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test