E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

একটি কুকুরের আর্তি

২০১৫ মে ২৪ ১৬:১৭:৫২
একটি কুকুরের আর্তি

আনিসুর রহমান আলিফ : স্টেডিয়ামের ধারে প্রায় নিরব একটি রাস্তার পাশে দেহ ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ। ছায়া নিবিড় গাছের নিচে ভ্রাম্যমাণ একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হাতে চায়ের কাপ।

হালকা বাতাসে অবিরাম দুলে ঝরে পড়ছে কৃষ্ণচূড়ার রং মাখানো ফুলের পাপড়ি। মনে মনে খুব আশা করছিলাম দু’একটি পাপড়ি উড়ে এসে আমার কাপের মধ্যে পড়ুক। হঠাৎ বাম কাঁধে একটি হাতের স্পর্শে ঘুরে তাকালাম। বাছের ভাই। আমি কাপ নামিয়ে বললাম,
-কেমন আছেন? বাছের ভাই নিয়মিত পান খাওয়া জড়ানো জিভে বললেন,
-ভাল।
যে ছেলেটি চা পরিবেশন করছিলো তাকে ডেকে আরো এক কাপ চায়ের কথা বলতে যাব, সে দেখলাম আমার বলার আগেই চা হাতে হাজির হয়েছে। বললাম,
-নিন চা খান।
সম্প্রতি সাহিত্য-টাহিত্য নিয়ে দু’একটু চর্চা করছি বলে দাঁতে জিভ কেটে বললাম,
-দুঃখিত, নিন পান করুন। বাছের ভাই গদো গদো ভাবের সাথে হাসি হসি মুখে চায়ের কাপটি ধরে পায় এক চুমুকেই চা-টা শেষ করে আহ্ শব্দ করে বললেন,
-জানেন তো, আমরা জাতে বাঙালি। বাঙালির কাছে খাওয়া আর পান করা নিয়ে কোনো বাছ-বিচার নাই। উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম আমরা সব খাই, এতে দোষের কিছু নাই। ক’জন বাঙালিকে বলতে শুনেছেন আমরা চা পান করছি।
আমি আর কথা বাড়ালাম না। এটুকু জানি, কোনো মানুষের শ্বাসযন্ত্রে উচ্চারিত কোনো শব্দের অর্থ যদি অপর কোনো ব্যক্তি বুঝতে পারে তাহলে ওটাকেই ভাষা বলে। বইয়ের ভাষায় ভাষার সংজ্ঞা অনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে থাকলেও বিষয়টা কিন্তু একই। বাছের ভাই সোজা কথার মানুষ। বয়স তার পঞ্চান্ন এর মত হবে। বোঝাপড়ার অনেকগুলো ভাঁজ কপাল জুড়ে স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে। ফর্সা সুন্দর চেহারায় বলিরেখাগুলো ভীষণ স্পষ্ট। মাঝারি গড়নের শরীর। মাথাটা প্রায় চুলশূন্য। কানের দুই পাশ দিয়ে যা কিছু আছে তাও আবার পেকে-টেকে একেবারে একাকার অবস্থা। বাছের ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় বেশি দিনের নয়। আমার ভাগ্নে রাজুকে স্কুলে আনা নেওয়া করার সুবাদে তার সাথে আমার পরিচয় হয়। এরপর মাঝে মাঝেই গল্প-আড্ডা হয়েছে। সকাল-বিকাল যখনই তার সাথে আমার দেখা হয়েছে তখনই দেখেছি শার্ট প্যান্ট ইন করে জুতা-টুতা পড়ে তিনি একেবারে সাহেব সেজে প্রস্তুত। বেশভূষা দেখে সহজেই বোঝা যায় পূর্বে নিশ্চয় তিনি কোনো কর্পোরেট অফিসে চাকরি করতেন। আর বেল্টের চামড়ার বেহাল দশা দেখে এও বোঝা যায় চাকরিটা এখন আর নেই। দু’টি সন্তানের জনক, দিনের বেশির ভাগ সময়ে তাদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। বাছের ভাই খুক করে একটু কেশে বেশ কায়দা দেখিয়ে বাঁচা মাছের মতো মুখ চোঁখা করে পিচিক শব্দ তুলে পানের রস ফেলে বললেন,
-দুনিয়া থেকে মায়া-মমতা, প্রেম-ভালবাসা এসব দিন দিন উঠে যাচ্ছে। আমি বললাম,
-কেন? কী এমন হলো যে একথা বলছেন? বাছের ভাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-সে কথা বলে কী আর হবে বলেন। এই আমাকে দেখেন, আমি কিন্তু বলতে গেলে প্রায় বেকার একজন মানুষ। মাঠে কিছু জমিজমা আছে, ওখান থেকে যা আসে তা দিয়েই সংসার চলে। ছেলে মেয়ে দুটোকে একটু ভালো বিদ্যা দেব বলে শহরে ফ্ল্যাট ভাড়া করলাম। তিন তলা বাড়ির দোতলায় ছোট্ট একটি ফ্ল্যাট। এই যাকে বলে ফুললি কমার্শিয়াল কায়দায় তৈরি দুটো বেড রুম, মাঝখানে ড্রইং কাম ডাইনিং কাম লিভিং কাম গেস্ট যেটাই বলেন না কেন এই তিন রুমের ছোট্ট একটি ফ্ল্যাট। ভেবেছিলাম শেষ বয়সটা নির্ঝঞ্ঝাটে পার করবো। কিন্তু ঝামেলার কী আর শেষ আছে? হয়েছে কি জানেন? শহরে বলেন, গ্রামে বলেন আর বাংলাদেশের চৌষট্টিটি জেলা যেখানেই বলেন, এমন কোনো জায়গা নেই যে, সেখানে আমার আত্মীয়-স্বজন নেই। ধুমায়িত কাপ থেকে মুখ উঁচিয়ে বললাম,
-বলেন কী?
-তাছাড়া আর কী? এই সেদিনইতো ভোলা জেলার মনপুরা চর থেকে এক দল এসে হাজির। তাদের একজন নাকি আপনার ভাবির বোনের ননদের আপন খালা শাশুড়ির জামাই। ব্যাপারটা বুঝুন। একদল যাওয়ার আগেই আরেক দল এসে হাজির। এদিকে বাজার করতে করতে আমার অবস্থা একেবারে নাকু-ছুকোছো। আমি বললাম,
-মানে?
-মানে আর কিছুই নয় ওটা কোরিয়ার আঞ্চলিক একটা ভাষা। ‘নাকু ছুকোছো‘ অর্থ হলো- আমার অবস্থা শেষ। যেমন, আরবি ভাষায় ‘আনা খালাছ’, ইংরেজিতে ‘আই এ্যাম ফিনিস্ড’। আমি হেসে বললাম,
-ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।
বাছের ভাই আবার পিচিক করে শব্দ তুলে পানের রস ফেলে বললেন,
-ও আপনি বুঝবেন না, আমার অবস্থায় থাকলে বুঝতেন। মাসের পঁয়ত্রিশ দিন যার বাড়ি মেহমান এসে পড়ে থাকে তার কোথায় যন্ত্রণা হয় তা আপনি কীভাবে বুঝবেন? ভেবে দেখলাম, আসলেই তো এই চড়া দ্রব্যমূল্যের বাজারে নিজেদেরই তো বেঁচে থাকা মুশকিল। উপরি যদি আত্মীয়-স্বজন দল বেঁধে এসে লাগাতার পড়ে থাকে তাকে তো বিপদই বলতে হবে। বাছের ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-কীভাবে যে ম্যানেজ হয় বুঝি না। সবই আল্লাহ পাকের ইচ্ছা। আজ আসি, আমাকে আবার বাজারে যেতে হবে। আমি বললাম,
-এই অবেলায় বাজারে কেন? বাছের ভাই বললেন,
-এতক্ষণ তাহলে কী বললাম আপনাকে। আমার তো প্রতিদিন দু’বেলা করে বাজার করতে হয়। আমি মাথা দুলিয়ে বললাম,
-ও আচ্ছা। তা এখন ক’জন আছে? বাছের ভাই হাত উঁচিয়ে পাঁচটি আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন,
-আমার মেহমানদের যা হিসাব তাতে আঙ্গুলগুলো আরো কিছু বেশি থাকলে ভালো হতো। আজ আসি, আবার দেখা হবে। বলে, বাছের ভাই চলে গেলেন।

বৈশাখ মাসের বিকাল। দুপুরের প্রচন্ড তাপদাহ কিছুটা বিরতি দিয়ে কোথা থেকে যেন হালকা ঝিরিঝিরি বাতাস প্রবাহিত করছে। এমন বিকালে শরীর মনে কেমন যেন একটা স্ফূর্তি ভাব জাগে। এমনিতেই বিকালের ইচ্ছে হাঁটাটা আমার বেশ লাগে। শহুরে রাস্তার ধার ঘেঁসে ফুটপাথ ধরে হাঁটছি। দেশটা যে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে আসে-পাশে একটু চোখ মেললেই তা বোঝা যায়। আমার আবাস বাংলাদেশের মধ্যভাগের একটা জেলা শহরে। ব্রিটিশ আমলের তৈরি সেই সরু রাস্তাগুলো দীর্ঘ দিন অবহেলিত থাকার পরে এখন বেশ প্রশস্ত হয়ে উঠেছে। প্রশস্ত রাস্তার মাঝে উঁচু আইল্যান্ডও জেগে উঠেছে। পিচ ঢালা কালো রাস্তায় হলুদ রঙের রোডমার্ক, দেখতে ভালই লাগে। আইল্যান্ডের উপর সারি করে ঝাউগাছ লাগানো হয়েছে। মাঝে মাঝে দু’চারটি পাতা-বাহার, ফুলগাছ আর বাহারি লতা। লতাগুলো আইল্যান্ডের সীমানা বেয়ে প্রায় রাস্তায় নেমে পড়েছে।

ভাল করে লক্ষ করতে দেখলাম গাছগুলোর মাঝে মাঝে কিছু সাইনবোর্ডও রয়েছে। ক্ষাণিক বাদে বুঝলাম সাইনবোর্ড এর সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। বিভিন্ন কায়দায় লিখেছে, সোভা বর্ধনে ওমুক নেতা, তমুক নেতার ছোট ভাই ইত্যাদি ইত্যাদি। জেলা শহরের অভ্যন্তরিণ রাস্তায় যানজট তেমন একটা থাকে না। রাস্তার ধারে ফুটপাথও প্রায় খালি পড়ে থাকে। শুধু সকাল আর বিকালে দেখা যায় আমার মতো কিছু লোক এই ফুটপাথ ধরে ইচ্ছে হাঁটা হাঁটে। অনেকে দৌড়ায়, অনেকে দল বেঁধে হাঁটে। আমার কিন্তু একা হাঁটতেই বেশি ভাল লাগে। হাসপাতাল মোড়ের সামনে আসতেই একটা জটলা চোখে পড়লো। আমি দেখেছি, বাঙালির জটলা বিষয়ে বিরাট একটা আকর্ষণ আছে। কোথাও পাঁচ-সাতজন লোক মিলে একটু জটলা হলেই সঙ্গে সঙ্গে শত সহস্র লোক জুটে যায় কী হয়েছে জানবার জন্য। একবার আমাদের এলাকায় তিন-চার জন লোক এসে রাস্তার মধ্যে খোড়া-খুড়ি শুরু করল, ব্যাপার কী জিজ্ঞেস করতে বলল, তারা ওয়াটার সাপ্লায়ের লোক। পাইপে জ্যাম, তাই ঠিক করতে এসেছে। বিষয়টি জানা সত্ত্বেও স্বচক্ষে দেখবার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কী খুড়ছে? কেন খুড়ছে? কতটুকু খুড়েছে? ইত্যাদি ইত্যদি।

তাদের ভাব দেখে মনে হয় গর্ত খুড়লেই বুঝি সোনার কলস-টলস জাতীয় কিছু একটা বেরিয়ে পড়বে। তাদের ধারণা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তো আর এমনি এমনি বলেননি আমার সোনার বাংলা। বাংলাদেশে জটলা একটা বিরাট আকর্ষণীয় ব্যাপার। যাক সে কথা আমিও বাঙালি রক্তে আমারও ঐ একই টান। নিজেকে তাই থামাতে পারলাম না। ভীড় ঠেলে এগিয়ে গেলাম ব্যাপার কী দেখার জন্য। দেখলাম, জটলার প্রায় মধ্যেখানে একটি কুকুর শুয়ে আছে। খেয়াল করে দেখলাম রক্তে একেবারে মাখামাখি অবস্থা। বুকের মৃদু কম্পনে দেহে প্রাণের অস্তিত্বটুকু সামান্যই বোঝা যাচ্ছে। পেছনের পা দু’টো একেবারে থেঁতলে গেছে। কোনো যানবাহনে পিষ্ট হয়েছে নিশ্চই। কুকুরটিকে নিথর পড়ে থাকতে দেখে বোঝা যায় নড়াচড়া করবার শক্তিটুকু সে অনেক আগেই হারিয়েছে। ক্ষীণ কন্ঠে শুধু কাতরতার একটি করুণ আবেদন। এই আবেদনের মধ্যে কোনো হিংস্রতা নেই, কোনো বন্যতা নেই, কোনো আক্রোশ নেই। নিতান্তই কেবল আকুলতা। অপলক দৃষ্টি মেলে ছলছল চোখের ভাষায় কুকুরটি যা বলতে চায় তা এই বুদ্ধিমান প্রাণীরা কিছুটা হলেও বোঝে নিশ্চই কিন্তু সাহায্যের কোনো হাত তারা বাড়িয়ে দেয় না। কুকুরটা অত্যন্ত মিহি শব্দে ডাকছে। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে যন্ত্রণা উপশমকারী আর্তনাদও সে আর করতে পারছে না। কাতর গোঙ্গানির সাথে সে শুধু চোখ দু’টো মেলে তাকিয়ে আছে।

চোখের ভাষায় কী বলতে চায় সে? পৃথিবী নামক গ্রহে বসবাসকারী মানুষ নামের বুদ্ধিমান প্রাণীরা কি এই ভাষার অর্থ বোঝে না? একি সাহায্য প্রার্থনার করুন কন্ঠস্বর নয়? এ তবে কিসের আর্তি? একবার মনে হলো অশ্রুসিক্ত চোখে সে যেন আমারই দিকে চেয়ে আছে। ঘন কালো লোমে ঘেরা চোখদুটো বেয়ে নেমে আসা অশ্র“ধারা গাঢ় একটি কালো দাগ ফেলেছে। সেই কালো রেখায় ফুটে উঠেছে যন্ত্রণার প্রতিটি আঁচড়। কেন জানিনা আমার বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো। কেউ একজন বললো,
-আহারে! কেডায় এই কুত্তাডার এমন অবস্থা করলো?
বুঝতে পারছি কুকুরটার গোঙ্গানি ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবে। সাহায্যহীন এরূপ একটি মৃত্যুর স্মৃতি তাকে হয়তো পরোলোকেও শান্তি দেবে না। মনের কোথা থেকে যেন বলে উঠল, এতগুলো লোক দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কেউ কিছু করছে না কেন? মনের অন্য কোণ থেকে উত্তর এলো, করবেই বা কী? এতো আর মানুষ না যে হাসপাতালে নিয়ে যাবে। কোথাকার কোন রাস্তার কুকুর পড়ে আছে। মনের মধ্যে খচ করে উঠলো আমার। কুকুর হলেও তারও তো একটা প্রাণ আছে। আজ এই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণীরা কী বিপদগ্রস্ত এই কুকুরটার জন্য একটু সহানুভূতির হাত বাড়াতে পারে না? মৃত্যু তো মৃত্যুই, হোক সে পশু। ইতোমধ্যে লোকজনের ভীড় আরো বেড়ে গেছে। কেউ দাঁড়িয়ে দেখছে কেউ দেখে চলে যাচ্ছে। কেউ বলছে,
-আরে কুত্তা মরছে, কুত্তা। মানুষ মরলেই খবর হয় না, আর এ তো কুত্তা।

কুকুরটা আবার মৃদু আর্তনাদ করে কেঁদে উঠলো। অশ্রুভেজা অপলক চোখ দু’টি তার কতো কথাই না বলে যাচ্ছে। সে হয়তো ভাবছে, কী করে মানুষ এত মর্যাদাবান হয়? যে নিজে একটি প্রাণী হয়ে অপর একটি প্রাণীর বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় না, কীভাবে তারা নিজেদেরকে মানুষ হিসাবে দাবি করে? এমন একটি পরিস্থিতিতে মানুষই বোধহয় এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর কোনো প্রাণী। কথাগুলো মনে হতেই আমার বুকের মধ্যে কেমন একটা মোচড় দিয়ে উঠল। মনে হলো ছুটে যাই। তাকে কোলে তুলে নেই। হঠাৎ ভীড় ঠেলে একটি লোক এগিয়ে এলো। অবস্থাটা এক মুহুর্তে দেখে নিয়ে একটুও দেরি না করে কুকুরটাকে কোলে তুলে নিল। লোকটির ধবধবে সাদা শার্ট এক মুহূর্তেই রক্তে একেবারে লাল হয়ে উঠলো।
-এই রিক্সা, বলে ডাকতেই কণ্ঠটা খুব চেনা ঠেকলো। বাছের ভাইয়ের গলা।
-বাছের ভাই, বলে ডাকতেই তিনি আমার দিকে তাকালেন। আমাকে দেখে বললেন,
-তাড়াতাড়ি একটা রিক্সা ডাকেন তো। আমি একটা রিক্সা ডাকলাম। কুকুরটাকে কোলো নিয়ে বাছের ভাই রিক্সায় উঠে বসলেন। আমি বললাম,
-কুকুরটাকে নিয়ে এখন কী করবেন? বাছের ভাই ব্যস্ত ভাবে বললেন,
-দেখছেন না, ব্যাচারা একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এক্ষুণি হাসপাতালে নিতে হবে। মাহিপুরে একটা পশু হাসপাতাল আছে। ওখানেই যাব।

রিক্সাওয়ালা প্যাডেলে ভর দিয়ে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দে রিক্সা টান দিলো। আমি তাকিয়ে রইলাম তাদের ফেলে যাওয়া পথের দিকে। দৃষ্টি আমার যতদূর যায় আমি তাকিয়ে রইলাম। মনের কোথা হতে যেন বলে উঠলো, বাছের ভাইয়েরা আছে বলেই হয়তো মানুষরা আজ মানুষ নামটি ধারণ করতে পেরেছে।


পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test