নজরুলের বিপ্লবী প্রবন্ধ : একটি পর্যালোচনা
বীরেন মুখার্জী
বিশ্বে নিপীড়িত, নিঃগৃহিত মানুষের অধিকার রক্ষা ও প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম বা বিপ্লবই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃত। এ বিপ্লব সংগঠনে যুগে যুগে এগিয়ে এসেছেন কিছু চেতনাদীপ্ত মানুষ, শোষণের মর্মজ্বালা যাদের অন্তরে শেলের মতো গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। ভারত উপমহাদেশের বাংলাসাহিত্যে এমনই এক প্রতিবাদী কবি চরিত্র কাজী নজরুল ইসলাম, যিনি তৎকালীন ব্রিটিশ নিপীড়ন থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য লেখনীর মাধ্যমে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন।
তার প্রতিবাদী সাহিত্য ভারতবর্ষের গণজাগরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় তিনি যে মাত্রায় শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন তা বাংলাসাহিত্য এমনকি বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসেও বিরল। কিন্তু কোনও বাঁধ দিয়ে তাকে আটকানো সহজ ছিল না। নজরুলের জীবনী পর্যালোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট, তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী তাকে যতই দমিয়ে রাখার অপকৌশল করেছে তিনি ততই ‘বাঁধনহারা’র মতো অবিরাম ছুটেছেন। ক্ষিপ্র সে গতি। কখনও উল্কার বেগ, কখনওবা প্রলয়ঙ্করী মহাঝড় কিংবা মহাপ্লাবণ হয়ে। তিনি যে পথ মাড়িয়েছেন, তা ভেঙেচুরে একাকার করে দিয়েছেন। কাঁপিয়ে দিয়েছেন ইংরেজ শাসকের ভিত। তারুণ্যতেজদীপ্ত নজরুল কবিতার মাধ্যমে তৎকালীন ইংরেজ শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে সংগ্রামের সূচনা করলেও সাহিত্যের অপরাপর শাখা যেমনÑনাটক, গল্প, উপন্যাস ও সংগীতেও বিপ্লবের ধারা সচেতনভাবেই এগিয়ে নিয়েছেন। সাংবাদিকতার সময় লিখেছেন শক্তিশালী ও ক্ষুরধার প্রবন্ধ। কালক্রমে ওই প্রবন্ধগুলোই হয়ে উঠেছে বিপ্লবের সমার্থক।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ভারতবর্ষের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে শাসকগোষ্ঠীর হাতে সাধারণ নাগরিক যে কতটা নিপীড়িত, নিঃগৃহিত ও শোষিত ছিলেন তা সে সময়পর্বের ইতিহাসের দিকে তাকালে স্পষ্ট বোঝা যায়। সামাজিক এ ভঙ্গুর অবস্থা সত্যসন্ধানী ও ন্যায়ের পথে লড়াকু নজরুলের চেতনায় গভীর অভিঘাতের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে এ সময়পর্বে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া আন্দোলন যেমনÑ‘১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব , আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা সংগ্রাম, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে নবজাগরণ, সত্যাগ্রহ আন্দোলন, ১৯১৯ সালের রাউলাত আইন, ১৯১৯ সালের মন্টেও চেমসফোর্ড শাসন সংস্কার রিপোর্ট, ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকা-, ১৯২০ সালের অসহযোগ আন্দোলন, ১৯২২ সালের আইন অমান্য আন্দোলন, ১৯২৫ সালের দক্ষিণেশ্বর বোমা কারখানার খবর, ১৯২৯-এ ভারতে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি, ১৯৩০-এ সূর্যসেনের নেতৃত্বে সশস্ত্র বিদ্রোহ’ ইত্যাদি রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নজরুলের বিদ্রোহীসত্তাকে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করে। তিনি একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত হন দেশের দারিদ্র, কুসংস্কার, নারীর অধিকারহীনতা ও অন্যান্য সামাজিক ও রাষ্ট্রিক অসঙ্গতির কারণে। রাষ্ট্রীয় শোষণ থেকে জনমুক্তির উপায় হিসেবে সাধারণ নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সাহিত্যিক প্রতিবাদকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি লিখেছিলেন প্রবন্ধ। কবিতা ও গানের তুলনায় তার প্রবন্ধ সংখ্যা কম হলেও এসব প্রবন্ধে প্রত্যক্ষ করা যায় তৎকালীন ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ের চিত্র এবং নজরুল মানসে তার অভিঘাতের পরম্পরা।
সাংবাদিক জীবনে নজরুল ‘নবযুগ’, ‘ধূমকেতু’, ‘গণবাণী’ ও ‘লাঙল’ পত্রিকায় যেসব সম্পাদকীয় প্রবন্ধ প্রকাশ করেন, মূলত সেগুলোই পরবর্তীতে পরিমার্জন করে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। নজরুলের চারটি প্রবন্ধ গ্রন্থ পাওয়া যায়। এগুলো হচ্ছেÑ ‘যুগবাণী’ (১৯২২), ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ (১৯২৩), ‘রুদ্র-মঙ্গল’ (১৯২৬) এবং ‘দুর্দিনের যাত্রী’ (১৯২৬)। ১৯২০ সালের খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন প্রবল হয়ে উঠলে তৎকালীন ভারতের হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। সাধারণের মধ্যেও তীব্র হতে থাকে ইংরেজ বিরোধী অবস্থান। এই উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্দোলনের চেতনা গভীরভাবে উঠে আসে নজরুলের প্রবন্ধে। তার প্রবন্ধ পাঠে বিপ্লবী চেতনা সাধারণ জনমানসে সঞ্চারিত করার প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। ‘যুগবাণী’ গ্রন্থে রয়েছে ২১টি প্রবন্ধ। প্রবন্ধগুলোতে পরাধীনতার গ্লানি দূর করার প্রত্যক্ষ চেতনা ও প্রতিরোধের প্রবল সুর স্পন্দিত হয়েছে। প্রথম প্রবন্ধ ‘নবযুগ’-এ তিনি বলেনÑ
“মারো অত্যাচারীকে। ওড়াও স্বাধীনতা-বিরোধীর শির। ভাঙো দাসত্বের নিগঢ়। এ বিশ্বে সবাই স্বাধীন। মুক্ত আকাশের এই মুক্ত মাঠে দাঁড়াইয়া কে তাহার অধীনতা অস্বীকার করিবে; এই ‘খোদার উপর খোদকারী’ শক্তিকে দলিত কর।”
ব্রিটিশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য কাক্সিক্ষত বিপ্লবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ ভারতীয় সব নাগরিকের সমান অংশগ্রহণ তিনি প্রত্যাশা করেছেন। তাই অন্তরে মানবতার মশাল জ্বালিয়ে সব সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে সম্মিলিত প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি এ প্রবন্ধেÑ
‘এস ভাই হিন্দু! এস মুসলমান! এস বৌদ্ধ! এস ক্রিশ্চিয়ান! আজ আমরা সব গ-ী কাটাইয়া, সব সংকীর্ণতা, সব মিথ্যা, সব স্বার্থ চিরতরে পরিহার করিয়া প্রাণ ভরিয়া ভাইকে ভাই বলিয়া ডাকি। আজ আমরা আর কলহ করিব না। চাহিয়া দেখ, পাশে তোমাদের মহাশয়নে শায়িত ঐ বীর ভ্রাতৃগণের শব।’
এ গ্রন্থের ‘গেছে দেশ দুঃখ নাই, আবার তোরা মানুষ হ’ প্রবন্ধে মনুষ্যত্ব, বিবেক ও কর্তব্যকে সবার ওপরে স্থান দিতে বলেছেন তিনি। নজরুল বিশ্বাস করতেন স্বচ্ছ বিবেকশক্তির অধিকারী ও সঠিক কর্তব্যজ্ঞানসম্পন্ন মানুষই জাতির সঙ্কটকালে পথ নির্দেশ করতে পারেন। ব্রিটিশ বন্দিদশায় আচ্ছন্ন মানুষের অধিকার লঙ্ঘনে মর্মাহত নজরুল আত্মমর্যাদাহীন, পরাধীন জাতিকে সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করার প্রয়াস পেয়েছেন। ফলে প্রবন্ধটিতে জাতিকে জাগিয়ে তোলার তীব্র চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। নজরুল বলেছেনÑ
“... বাহিরের স্বাধীনতা গিয়াছে বলিয়া অন্তরের স্বাধীনতাকেও আমরা যেন বিসর্জন না দেই। আজ যখন সমস্ত বিশ্ব মুক্তির জন্য, শৃঙ্খল ছিড়িবার জন্য উন্মাদের মত সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করিতেছে, স্বাধীনতা যজ্ঞের হোমানলে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা দলে দলে আসিয়া নিজের হৃৎপি- উপড়াইয়া দিতেছে, তাহাদের মুখে শুধু এক বুলি, ‘মুক্তি-মুক্তি-মুক্তি’।”
আবার দেশমাতাকে আহ্বান করেছেন তার দুর্দশার চিত্র সবার মাঝে সঞ্চারিত করে তাদের জাগিয়ে দিতেÑ“... তোমাকেই আঘাত দিয়া আমাদের জাগাইতে হইবে” বলে। নজরুলের প্রবন্ধগুলো গণজাগরণের পাশাপাশি ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রুপের জন্য লিখিত হলেও এসব প্রবন্ধে তিনি আত্মসমালোচনাও করেছেন। অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীকে নির্লজ্জভাবে সমর্থন, কাপুরুষতা ও জনগণের আত্মসম্মানবোধের প্রতিও কটাক্ষ করেছেন। তার বিশ্বাস, ব্রিটিশ শাসকদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ একজন যোগ্য নেতাই হতে পারেন একটি জাতির মুক্তির দূত। ব্রিটিশ অত্যাচারে নিহত বাল গঙ্গাধর তিলকের মৃত্যুর গভীর বেদনা বুকে নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘লোকমান্য তিলকের মৃত্যুতে বেদনাতুর কলিকাতার দৃশ্য’ নামে প্রবন্ধ। ১৯২০ সালে হিজরত আন্দোলন সংগঠিত হয় ভারতবর্ষে। এ আন্দোলনে হাজার হাজার মুসলমান অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে আফগান চলে যান। এ ঘটনা নজরুল মানসে দারুণভাবে আঘাত করে। স্বাধীন সত্তা ও মুক্ত হয়ে জন্মানোর পরও মানুষ কেন পরাধীন, দাসত্বকে মেনে নেবে? নজরুল এই দাসত্বকে মুক্তির প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। নিজেকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আমাদের শক্তি স্থায়ী হয় না কেন?’ একটা বিষয় বেশ স্পষ্ট যে, নজরুলই ছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষের মুক্তির সত্যিকারের দূত, যিনি সব সময় দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে জাতির মুক্তির উপায় খুঁজেছেন।
প্রবন্ধের ভেতর দিয়ে কাজী নজরুলকে পাওয়া যায় সার্বিক দুঃশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে। তিনি দেখতে পেয়েছিলেন শোষণ শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সমাজ জীবনের সর্বত্র এই শোষণের বিষবাষ্প ছড়িয়ে রয়েছে। যাদের পরিশ্রমে দেশ ধীরে ধীরে উন্নতির পথে ধাবিত হয় সেই শ্রমিক শ্রেণির বঞ্চনা নজরুলের মনে যন্ত্রণার সৃষ্টি করেছে। তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন অত্যাচারীর খড়গ কীভাবে কয়লাখনি শ্রমিকদের দিনের পর দিন শোষণ করেছে। সঙ্গত কারণে ব্যথাতুর নজরুল কয়লাখনি শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ধর্মের সত্য, সুন্দর ও উদারতার দিকও গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বুঝেছিলেন দেশের উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীসহ সবাইকে এক আদর্শে সমবেত করা না গেলে ভারতবাসীর আদৌ মুক্তি ঘটবে না। তাই মুক্তির আদর্শের পথে এগিয়ে আসার জন্য তিনি হিন্দু-মুসলমান, ধনী-দরিদ্রসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অন্তর থেকে মনুষ্যত্বের আলো জ্বালিয়ে একই কাতারে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ‘ছুঁৎমার্গ’ প্রবন্ধে তিনি বলেছেনÑ
“হিন্দু হিন্দু থাক, মুসলমান মুসলমান থাক, শুধু একবার ঐ মহাগগনতলের সীমাহারা মুক্তির মাঝে দাঁড়াইয়া মানব-তোমার কণ্ঠে সেই আদিম বাণী ফুটাও দেখি। বল দেখি , ‘আমরা মানুষ ধর্ম’।”
কাজী নজরুলের বহুল আলোচিত প্রবন্ধগ্রন্থ ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’। এ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৩ সালে। ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় (১৯২২, ২৬ সেপ্টেম্বর সংখ্যায়) ব্রিটিশকে কটাক্ষ করে লেখা ‘আনন্দময়ীর আগমন’ কবিতার জন্য নজরুল রাজরোষের শিকার হন। তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ১৯২২ সালের ২৩ নভেম্বর। ১৯২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি চীফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইন হো’র আদালতে হাজির করা হলে তিনি আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন, সে বক্তব্য ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় প্রকাশ করা হয় ২৭ জানুয়ারি সংখ্যায়। পরবর্তীতে প্রকাশিত হয় গ্রন্থটি। নজরুলের এ জবানবন্দি শুধু আত্মজৈবনিক প্রতিবেদন নয়, বরং তা তৎকালীন ভারতবর্ষের নির্যাতিত কোটি কোটি কণ্ঠের এক আওয়াজ। তিনি বলেনÑ
‘আমার উপর অভিযোগ, আমি রাজবিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত।...একজন রাজা, হাতে রাজদ-; আরজন সত্য, হাতে ন্যায়দ-। রাজার পক্ষে নিয়ুক্ত রাজ বেতনভোগী রাজকর্মচালী। আমার পক্ষে সকল রাজার রাজা, সকল বিচারকের বিচারক, আদি অনন্তকাল ধরে সত্য জাগ্রত ভগবান।... আমার হাতের ধূমকেতু এবার ভগবানের হাতের অগ্নিমশার হয়ে অন্যায় অত্যাচারকে দগ্ধ করবে। আমার বহ্নি-এরোপ্লেনের সারথি হবেন এবার স্বয়ং রুদ্র-ভগবান। অতএব, মাভৈ; ভয় নাই।’
ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে যেখানে কোনও শক্তিই দানা বাঁধতে সাহসী হয় না, সেখানে একজন বাঙালি কবির কণ্ঠে বলিষ্ঠ এ বক্তব্যের পর ইংরেজ শাসকের ভিত কী একটুও কেঁপে ওঠেনিÑএ প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। সত্যিকার অর্থে এ বক্তব্যটি ‘শুধু সমকালীন অন্যায়ের বিরুদ্ধে পৌরষদীপ্ত ঘোষণাই নয়, বরং তা ভবিষ্যতের সব অন্যায়ের প্রতিবাদে শক্তি, সাহস ও অনুপ্রেরণার প্রতীকীরূপ’ বলে ধরে নেয়া যায়।
১৯২৬ সালে আটটি প্রবন্ধ নিয়ে ‘রুদ্র-মঙ্গল’ এবং সাতটি প্রবন্ধ নিয়ে ‘দুর্দিনের যাত্রী’ গ্রন্থ দুটি প্রকাশিত হয়। এসব প্রবন্ধেও ইংরেজ শাসকের অত্যাচারে উৎপীড়িত জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান এবং সর্বহারা মানুষের অধিকার চেতনার নানাদিক তুলে ধরা হয়েছে। এ দুটি গ্রন্থের অধিকাংশ প্রবন্ধ অসহযোগ আন্দোলন ও খিলাফত আন্দোলনের ব্যর্থতার পরবর্তী প্রেক্ষাপটে নৈরাজ্য, হতাশা, হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য, ত্যাগের মহীমায় উজ্জীবিত হওয়ার প্রেরণা, সন্ত্রাসবাদের প্রেক্ষাপট ও জাতীয় জাগরণের বিভিন্ন দিক অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি ’রুদ্র-মঙ্গল’ গ্রন্থের নাম প্রবন্ধে দেশের দুর্দশামোচনে ভয়ঙ্করের বেশে সুন্দরের আহ্বান করেছেনÑ
‘জাগো জনশক্তি! হে আমার পদপিষ্ট কৃষক, আমার মুটে মজুর ভাইরা! তোমার হাতের এ-লাঙল আজ বলরাম স্কন্ধে হলের মত ক্ষিপ্ত তেজে গগণের মাঝে উৎক্ষিপ্ত হয়ে উঠুক, এই অত্যাচারীর বিশ্ব উপড়ে ফেলুক-উলটে ফেলুক। আন তোমার হাতুড়ি, ভাঙ ঐ উৎপীড়কের প্রাসাদ-ধুরায় লুটাও অর্থ পিশাচ বল-দর্পীর শির।’
একটি বিষয় বেশ স্পষ্ট যে, নজরুলকে ইংরেজ শাসক যত আঘাত করেছে, তিনি তার সবটুকুই ফিরিয়ে দিয়েছেন কয়েকগুণ বেশি শক্তি দিয়ে। তার এ শক্তি সত্যের, ন্যায়ের এবং জনতার একাত্মতার। কারণ তার সাহিত্যের মধ্য দিয়ে ধীরে হলেও ভারতবর্ষের নিপীড়িত জনগণের চেতনার দুয়ার খুলে গেছে সম্পূর্ণরূপে। জর্জরিত, শোষিত জনগণ প্রবল শক্তি সংগ্রহ করে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তার। তার প্রবন্ধ পাঠান্তে জোর দিয়েই বলা যায়, বাঙালির ধর্মীয় আবদ্ধতা, গোঁড়ামি এবং চিন্তা-চেতনার নিশ্চলতার মধ্যে অশেষ প্রজ্ঞার সঙ্গে সমগ্র বাঙালি জাতিকে তিনি একাই জাগিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। অবহেলিত, নিরন্ন, নিষ্পেষিত মানুষের মননে জ্বালিয়েছেন আত্মদর্শী চেতনার অবিনাশী শিখা। তাই তিনি বাঙালি জীবনে একটি গণজাগরণ, একটি ইতিহাস ও একটি অবিস্মরণীয় ঘটনার নাম। বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত সর্বহারা মানুষের একমাত্র পথের দিশারী এবং বেঁচে থাকার অন্যতম প্রেরণা। নজরুলের কবিজীবন যেমন অখ-িত, তেমনি প্রাবন্ধিক জীবনও অবিচ্ছিন্ন, অনমনীয় ও আপোসহীন সংগ্রামের এক উজ্জ্বল ইতিহাস।
পাঠকের মতামত:
- স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ১,১৭৮ টাকা
- জকিগঞ্জে যুবকের লাশ উদ্ধার
- মহম্মদপুরে আনসার ও ভিডিপির আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক ব্রিফিং প্রদান
- মহম্মদপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেবী নাজনীনের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়
- সিলেটে সাংবাদিক রেনুর পিতার মৃত্যুতে ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের শোক
- সালথায় ওয়াদুদ মাতুব্বরের পক্ষে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা
- ওয়ালটন-বিএসপিএ স্পোর্টস কার্নিভালে টেবিল টেনিসে রুমেল খানের দ্বিমুকুট জয়
- ‘শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন বলেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হয়েছে’
- মোংলায় আচরণবিধি লঙ্ঘন, দুই চেয়ারম্যানসহ তিন প্রার্থীকে টাকা জরিমানা
- টাঙ্গাইলের তিন উপজেলায় মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা
- র্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যু, সুরতহাল জানাচ্ছেন না কেউ
- কান চলচ্চিত্র উৎসবে দুধ সাদা পোশাকে কিয়ারা
- কালিহাতীতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই ভাই নিহত
- পণ্যের গুণগত মান ঠিক রেখে ব্যবসা করছে নিউজিল্যান্ড ডেইরি বাংলাদেশ
- পাবনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় কৃতি ছাত্রদের সংবর্ধনা
- সিগারেট ধরাতে গিয়ে ধাক্কা লাগায় বাবার সামনে শিক্ষার্থীকে এসআই’র মারধর
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি পাঠাগারের কমিটি গঠন
- গোপালগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকে নেমে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
- মাগুরায় রেলপথ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে রেলমন্ত্রী
- ময়মনসিংহে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
- সিলেটে তারেক রহমানের নির্দেশ মানছে না কেউ
- বাংলাদেশিদের টুরিস্ট ভিসায় ভারত ভ্রমণে ৩ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে
- ‘ঢাকার কাঁচাবাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে’
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আ. লীগের নায়েব আলী
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের শ্রদ্ধা
- ‘রেল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটাবে’
- সুবর্ণচরে পাওয়ার টিলারের চাপায় শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু
- মহম্মদপুরে ইয়াবাসহ আটক ১
- বিশ্বব্যাংক ভূমি সম্মেলনে অংশ নিল বাংলাদেশ
- সৌদিতে প্রথমবার সাঁতারের পোশাকের ফ্যাশন শো
- আর কে মিশন রোডে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন
- পশুর জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ মন্ত্রীর
- ইউপি সদস্যকে মারধর, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণ কোনো সুবিধা বয়ে আনে না’
- জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
- ফরিদপুরে স্কুলছাত্র অন্তর হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আজিজুল গ্রেফতার
- প্রচারণায় নতুন মাত্রা দিয়েছে প্রার্থীর স্ত্রী, বিজয়ী করতে ঢাকায় উঠান বৈঠক
- আগৈলঝাড়ায় ইয়াবা-গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক
- বাজার মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকা কমেছে
- আগৈলঝাড়ায় মার্কাস মাদ্রাসায় ১৫ দিন যাবত আবাসিক ছাত্র নিখোঁজ, থানায় ডায়েরী
- ৭ বছর আগেই জানতে পারবেন ক্যানসার হবে কি না
- আগৈলঝাড়ায় এক রাতে স্কুলছাত্রী ও গৃহবধূর আত্মহত্যা
- তক্ষশীলা আসামের সভাপতি থানেশ্বর বঁরোর মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলে শোক
- ১৩ বছর ধরে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যাচ্ছেন ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ রহমান
- চাটমোহরে দুই বোনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
- ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই একাত্তরের চেয়েও কঠিন’
- মেট্রোযাত্রীদের ওপর চাপ বাড়াবে এনবিআরের ১৫ শতাংশ ভ্যাট
- ঢাকাসহ ৬ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- তালা-পাইকগাছা সড়কে ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত
- ‘দেশে গণতন্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই’
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !