E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ এর কবিতা

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১২:২০:৩২
সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ এর কবিতা






 

হজরত বায়েজিদ বোস্তামির প্রতি প্রার্থনা

(তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
...................
(উপক্রম :

চাটগাঁয় বাবা বায়েজিদ বোস্তামি
রেখে গেছেন কিছু কাছিম, যাদের আমি
ভীষণ ভয় পাই, কারণ, তারা ঢের
বৃদ্ধ, এমনকি আমার হৃদয়ের
চেয়েও। কাজেই তাদের আছে সে-গ্রাম্য চোখ
যাতে শুধু ভুলচুক ধরা পড়ে আমার। সে যাই হোক,
তাদের খোলগুলি যেহেতু ভরা শুধু পুরানো নৈতিকতায়,
আমি জানি, জবাবে আমারও কিছু বলবার থেকে যায়,
যা আমি বলতে পারি না, কেননা আমি শিশু, আর, হায়!
আমি শিশুই র’য়ে যাই, কারণ, তারা বুড়াই র’য়ে যায়।)

“আমি কী করিব, বাবা, তুমি ব’লে দেও।
আকাশের পিলা রঙে কী করিব আমি।
মাটির পাটল রঙে কী করিব আমি।
কী করিব সাদা মেঘে তুমি ব’লে দেও।

“তটিনীর রূপে রসে আশীবিষ হাসি।
নটিনীর রূপে রসে বিবমিষা রঙ।
জননীর ভুখা কোলে বিবমিষা রঙ।
ধমনির গলিপথে আশীবিষ হাসি।

“বাবা, কী দারুণ ভালো ছিল এই ঘাস।
মেঘ-ছেঁড়া, ঝাঁকেঝাঁক বুলবুলি চোর।
মোর ধান খেয়ে যেত বুলবুলি চোর।
কুমারী মায়ের মতো ছিল এই ঘাস।

“আমি কী করিব, বাবা, তুমি ব’লে দেও।
কী করিব সাদা ঘাসে তুমি ব’লে দেও।”

(উপসংহার :

পাপবিদ্ধ ইডিপাস ব্রোচের শয্যায়,
মৃতের পুস্তক থেকে প’ড়ে যায় প্রথম অধ্যায় :
পা- নি-
নিক্ষিপ্ত তিরের মুখে প্রতিধ্বনি আসে,
শির্কার শরবত আসে স্পন্জের গেলাসে :
আ- মিন্ ॥)

(ঢাকা, ১৯৮৯)


বহুড়ি
....

দেওর আমার, সাধের দেওর আমার,
আজ উঠো না আমার আতা গাছে,
ওখানে এক তোতার বাসা আছে।

দেওর আমার, সাধের দেওর আমার,
কাল শিমুলের ফলটা ফেটে গেছে,
জোনাক পোকা ছুটছে রাতবিদিকে,
আঁধার ঘরে ঢুকে সে যায় পাছে!

দেওর আমার, সাধের দেওর আমার,
আজ ফিরে যাও, পরশু কথা আছে।


ঠাকুরঝি, তুই আমার চোখের নীচে
খুঁজে মরিস কোন্ শাওনের রাত?
আমার নাভির নীচে, ঠাকুরঝি লো,
খুঁজিস রে, বোন, কোন্ বাঁওনের হাত?

তোরে তিন সত্যি করছি, ঠাকুরঝি,
আমি ষড়্ঋতুর আকাশ দেখি নি,
শুধু একটা স্বপন দেখেছিলাম কালকে-
মিছিল ক’রে আসছে ভাসান-পালকি!

তিন সত্যি করছি, ঠাকুরঝি,
আমি সে-পালকিতে চড়ি নি।


তোর চোখে, সই, সিঁদুর-রাঙা মেঘ,
বুকের ভিতর পশলা,
আমার চোখে একটু চেয়ে দ্যাখ্,
চোতের আকাশ, ফরসা!

হেথায় ঝিঁঝির অসহ্য উৎপাত,
হোথায় ব্যাঙের জলসা-
ছোঁব না তোর মেন্দি-পিন্দা হাত,
আমার হাতে মসলা!

জায়ের আমার হাজার গড়খাই,
খোয়াইডাঙায় গোরুর গাড়ির চাকা,
শুকনো ফুলে চৌদ্দটা মৌমাছি-
ভাসুর আমার কী ফাঁকা, কী ফাঁকা!

বিলের জলে ঢিল ছুঁড়েছে কেউ,
নিথর দেহে থিরথিরানো ঢেউ,
থরথরিয়ে কাঁপছে সিঁদুর, শাঁখা,
ভাসুর আমার কী ফাঁকা, কী ফাঁকা!

(ঢাকা, ১৯৮৯)

(কবিতা/বি এইচ ২৪সেপ্টেম্বর২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test