E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র জন্মবার্ষিকী পালিত

২০১৫ অক্টোবর ১৬ ১৯:০১:৫২
বাগেরহাটে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র জন্মবার্ষিকী পালিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি : তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৫৯তম জন্মবার্ষিকী শুক্রবার পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছিলো সত্তরের অন্যতম শক্তিমান দ্রোহ ও প্রেমের কবি’র স্বীকৃতি। ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর তিনি বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহন করেন।

জন্মবার্ষিকী স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ সকালে শোভাযাত্রা সহকারে তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মংলা উপজেলার মিঠেখালিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আফজাল হোসেন। বক্তব্য রাখেন শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম, রুদ্র সংসদের সভাপতি কবির ছোট ভাই সুমেল সারাফাত প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, ৫৯ বছর হলেও রুদ্র আমাদের কাছে এখনো সেই ৩৪ বছরের তারুণ্য।

তিনি ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সকল বৈষম্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন রুদ্র তার কবিতা, গান নিয়ে বেঁচে থাকবেন। রুদ্রের কবিতা ও গান এখন দুই বাংলায়ই সমান জনপ্রিয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদের সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো। পরে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করেন রুদ্রের গড়া সংগঠন অন্তর বাজাও ও স্থানীয় শিল্পীরা।

অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।

মাত্র ৩৪ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবন-সীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি অত্যুজ্জ্বল কাব্যগ্রন্থ-‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র’(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭), ‘গল্প’ (১৯৮৭) ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ’(১৯৯০)।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখেছেন। সঙ্গীতের বীজও রুদ্রের রক্তে প্রোথিত ছিল। তার রচিত ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়।

(একে/এএস/অক্টোবর ১৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test