E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিন্টু সারেং এর তিনটি কবিতা

২০১৫ অক্টোবর ২৮ ১৩:১৪:৫৭
মিন্টু সারেং এর তিনটি কবিতা






 

চির কিশোরী প্রেমিক বালিকা

যৌবন উন্মাতল হাওয়ায়, মৌন মগ্নতায় নির্জন চার পাশ
দোলনায় কিশোরি এক,নপুর পায়ে দোল খায়
রঙিন ফিতায় শুধু চুলই বাঁধেনি,
সে স্বপ্নে বেঁধেছে পৃথীবি।

ডাহুক ডাকা মধ্যরাতে চমকে উঠা মেয়ে
কার ব্যাথাতে মুখ ঢাকো, নকশি কাঁথা দিয়ে।

রাঙা পায়ে নপুর পরে, হাতে কাঁকন বালা
খোলা চুলে চলছো ছুটে চোখে কাজল আঁকা।

এবার তোমাকে দাঁড়াতে হবে,
তোমার শরীর জুড়ে বান ডেকেছে
তোমার ছুটে চলা বারন, তোমার খোলা চুলে বারন
তুমি নিষেধের কাঁটাতার টপকাতে যেওনা
তুমি ক্ষত বিক্ষত হবে, তোমার মোমের মতো
শরীর থেকে ফোটায় ফোটায় ঝরবে রক্ত
তুমি এখন সোমত্ত্ব নারী,

তোমাকে এখন দেখার পালা, তোমাকে ছোঁয়ার পালা, উদ্গ্রীব মানুষ,
তোমার দৃষ্টিতে চোখ ফেলা,
তাকিয়ে থাকা পুরুষ, এরা মানুষ তবে ভীষন সম্ভ্রান্ত, এদের সম্মুখে নত চোখ
লজ্জ্বায় আবীর রাঙা
তোমার পান পাতা মুখ।

তুমি মানুষ দেখেছো, রমনী দেখেছো
পুরুষ দেখেছো,
দুর্ভাগ্য তোমার তুমি কবিকে দেখনি
কবি হলো অন্তজ জলের মতো
পিপাসায় সুপেয় পানি
কিশোরী-নারী- রমনী, তুমি চিনে নাও কবি
যে তোমার প্রিয় বন্ধু
চির জনমের সাথী।

চির কিশোরী প্রেমিক বালিকা সোহেলি
অন্তহীন সাগর জলে
আমি এক বিস্ময় বালক,সেই কবি
যার খোলা চোখে নীল সমুদ্র দেখা।

মানুষ আমি বাঙালি

চমৎকার কলাকৌশলি তুমি, নিপুন
আঁধারে প্রতিবিম্ব, জলের তরংগে
হৃদয়ের শান্ত পুকুর, কুহেলী প্রান্তর
আজ বক ধার্মিকদের, ন্যাঙটা খেলায় নেমেছে
চারপাশে খুন, হত্যার মহাউৎসবে।

সূর্যের স্নাত আলোয় বিমুগ্ধ স্বদেশ
গ্রহনলাগা অতিবেগুনী রশ্নি, চোখ ধাঁধানো
ম্যাজিক,স্বদেশের রক্তনালিতে করেছে প্রবেশ
আমাদের মুক্তাংগনের সুবিশাল সবুজকে
ওরা বানিয়েছে খাদ্য।

রক্তাক্ত বাংগালী আজ ওদের প্রিয় যুদ্ধের বলি
মিটছেনা তৃষ্না পৃথিবীর দেশে দেশে
ওরা খেলেই যাবে রক্তর হোলি,
মানুষ আমি বাংগালী, বাংলাদেশি
রক্তে রাঙা মুক্ত স্বদেশ দেখেছি

আজ মুক্ত স্বদেশর জন্যে রক্তের হোলি নয়
কুপমুন্ডকতায়, গোলামির, পরাধীনতার অবিমৃশ্যতায় স্বাধীন স্বদেশ আমার
তুমি ঘুরে দাঁড়াবে
এ আমার আজন্ম বিশ্বাস।

তোমার ললাট থেকে মুছে যাক
কলংক তিলক,যত অপঘাত, রাজনীতির
শুভ্র প্রভাতের মিষ্টি আভায় তুমি হেসে উঠো
যৌবনে প্রথম ভাললাগা প্রেয়সীর মতো।

আমি অভিশাপ দিচ্ছি তাদের
শ্বাপদ জন্তু জানোয়ার, যারা মানুষ মারায় অভ্যস্ত।

(তাজিয়া মিছিলে নিহত শিশুর নিস্পাপ আত্মাকে)

অতৃপ্ত জননী স্বর্গের সিঁড়িতে

রাস্তায় হেঁটে যাওয়া লোকটাকে তুমি
দেখেছো কি, সাদামাটা হাফ শার্ট গায়ে
তেল চিটচিটে জামার কালারে
একখানা রুমাল ছিল,মুখে পাউডারের প্রলেপ,
দেখনিতো ?
কেনইবা দেখবে, তমিতো জন্মেই দেখেছো
আই সি ইউ,তোমার মাকেও দেখনি তুমি,
জন্মের পরই মাতৃ নাড়ির
বিচ্ছন্ন সংযোগে,কতদিন বেড়ে উঠেছো,
তোমার জনক তোমাকে দেখার
উদ্বিগ্ন চেহারায় উঁকি দিয়েছে কাঁচ ঘরে।

তোমার উপদ্রুত জননী তুমি ভাল আছো কিনা
এখবর জানার জন্যে, অচেতন হাতে
বারবার বিছানা হাতড়িয়ে নিমজ্জিত হয়েছে
তার পর একসময় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে
চলে গেছে স্বপ্নের ঠিকানায়।

এইতো তুমি অসুস্হ্য জন্মের বেহায়া আচরন
তোমার অস্ত্বি মজ্জ্বায় তাই চিড় ধরেছে
সার্জিক্যাল অপারেশান, আই সি ইউ,
এসব তোমাকে এখন আর বিস্মিত করেনা
কারন এখন তুমি অনায়াসে
বিঘ্নিত সময়কে অতিক্রম করেছো সহজে

হেঁটে যাওয়া হাফসার্ট গায়ে ঐ সাদামাটা
মানুষটাকে তোমাকে চিনতেই হবে,
কারন স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাওয়া তোমার
সেই অতৃপ্ত জননী,স্বর্গের সিঁড়িতে তারই
অপেক্ষায় কোটি বছর ধরে,
অপলক চোখে তাকিয়ে আছে।

আই সি ইউতে জন্ম নেয়া শিশু, কি ভাবছো তুমি
তোমার পদতলে আঁকড়ে রাখো নিষ্পাপ জননীর
অফুরন্ত ভালবাসার পিতৃ ভূমি।

তোমার জন্মে হেরে গেছে মহীয়সী জননী
সাদা হাফসার্টে তেল চিটচিটে কলারে একখানা
রুমাল সেঁটে এখনো হেঁটে যায় জনক তোমারি।

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test