E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 মাসুদ পথিক এর কবিতা

২০১৫ নভেম্বর ১০ ১২:৩০:০২
 মাসুদ পথিক এর কবিতা






 

পৃথিবীর প্রথম ধান বোনা চাষা

ভাবতেই পারি নিষ্ফলা মাঠের গ্লাণি নিয়ে আমি কেনো বেঁচে থাকবো
অথবা তুমি, যে তোমরা কেবল সৃজনের নামে করো রাজা-উজির

অার সুফলিত খেতে ফেলো নীতি ও বাক্যের তীর্যক তীর
ফুটপাতে চায়ের কাপের সামনে ধুয়োর ভেতর প্রিয় বন্ধুর মুখটিও
ঝাপসা হয়ে আসে ঈর্ষায়, ঝাপসা হয়ে যায় পরশ্রী দ্বিধায়

কী করবো, কি হবে এইসব বন্ধু নামি পাথর বয়ে বয়ে বুকে

যখন আমি সুনৃপাঠ চাষি সুফলা মাঠের পতঙ্গেরও সহচর
বা হতে পারি ন্যাচারের মনে বিলীয়মান কোনো প্রজাতির জ্বর
কখনো শস্যের মাঝে মাথাউঁচু আগাছার ব্যথাকেও বড় মানি গুরুতর
অার তোমার আমি বিনষ্টকারী যতো বাণী ;
স্যোকল্ড বুদ্ধিজীবীতার ধরনটিওতো জানি
জানি অামার বীজ ফেলে তুমি, অথবা মৌসুমি
যখন প্যাকেটধারী আর তুমুল বিজ্ঞাপনগামী

নিরপেক্ষতার নামে এই ছল-বাসনা যে সুশীল-সদৃশ শ্রেণি-আমিই
তা কি বুঝি না, বুঝে ফেলি

ফলে চাষ ক্লান্ত আমিও খেতের অালে শুয়ে আকাশে তাকাই খুব
পড়ে নিতে পারি তোমার অতীত ও আগামী, আর আমার আমি

খুঁজলেই পাবে আকাশে তারকার গড়নে দুনিয়ার সবই দেখছে প্রথম ধান বোনা চাষা
অর্থাৎ পাবেই পাবে আমি-চাষার বলবান বাপ ও দাদার জৈবভাষা
(লাঙলের ভূগোল; চাষার পুত)

ঋত্বিক ঘটক

তোমারও, পাজরের ভেতর একটা কাঁটাতার সুপ্ত আছে জানি,
সবাই তা দেখি না
আমার হাড়গুলোও এক একটা দীর্ঘ নদী
কখনো ভয়ে খুলে দেখি না
যদি ডুবে যাই, যদি পাই দেখা শুধু মিলনঅবরোধকারি অতলের,

তবে তিতাস নামি নদীর খুব সুনাম শুনেছি এই পথে যেতে যেতে
আর কাঁটাতার নদীটির বুকে রক্ত হয়ে বয়েছি কাল কতো...
যদিও আমরা যাপন করি এজীবন অযান্ত্রিক'র মতো
আর স্বপ্নগুলো মেঘে ঢাকা তারা'র অনুগত

আর কেবল কাঁটতারঘেরা উগ্র-স্যাপারেশন চিনচিনে ব্যথায়;
সুগ্রন্থিত মানচিত্রে উবু হয়ে আছি নুলুপাথরের মতো...

নিরন্তর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রিয় গুরু ঋত্বিক ঘটক

(বাড়ি থেকে পালিয়ে সুবর্ণরেখার তীর ধরে হেঁটে
কেবল হেঁটে কোমলগন্ধার আমিই ধুলোর চেয়ে ধুলো
ফুটপাতের নাগরিক ভাঙা চায়ের কাপে উড়া
ধুলোর যুক্তি তক্কো গপ্পো' আমিই সে ভূমিহীন চাষার পুত)

আমিও মরে আছি


অর্থাৎ অালো ঝলমলে বুলির নিচে যেটুকু অন্ধকার থাকে
সেটুকুই আমি,
কতল হওয়া জীবনের শেষ চেষ্টাটুকু নিয়ে রক্তধারা যতোদূর গড়িয়ে যায়
বেঁচে গিয়েও জানি সে যন্ত্রণাটুকু কতোটা সংবেদপ্লাবী

কিংবা কাস্তের নিচে বহূখন্ডিত এইযে ঘাসগুলো আলে আলে করে অাহাজারি
আমি কি তাদের কেউ না?
তথাপি চাষার নামে এইসব মৃত্যুভারা মাঠ কীভাবে দেই পাড়ি

কেউ যেনো ভেবো না আমি মরতে জানি না
আমি কতোবারই মরেছি, আর সারারাত বেঁচে বেঁচে কেঁদেছি

ফুটপাতের ধুলোয় কবেই হারিয়ে ফেলেছি আমার আমি...
অ-রক্ত চাষের সমবায়ী পৃথিবী আজ কোথায় ভাবি

এবঙ কান্না


যায়, আমার কান্নার শব্দে তোমার ঘুম ভেঙে যায়।
না, হাসলেও সভ্য দেখায় না।
চোখ লাল করো, বিরক্ত হও। ভালো, খুবববব ভালো।

আমি ঝরাপাতায় পা রাখলেও তোমার নিশ্বাস দীর্ঘ হয়।
এতো যে ভ্রূ কুচকাও...আমি বুঝি ভীতু অব্যয়?

তবে কি তোমার পাতাছেঁড়া দুপুরে নুলু কুকুরটি ঘুমাবে না?

জানি কারো না-কারো কোমল ঘুমে পা রেখেই ঠোঁট রাখো প্রেমিকের ঠোঁটে...।
অথচ ঠিক এও জানতে আমি আজীবন এক ছিন্নমূল,
আর শহুরে কোলাহলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাক ডাকাও আমার চাষাঢ়ে স্বভাব!

হায়, এই তীব্র ব্যথায় একটা চিৎকার দেয়ার যোগ্যও আমি কী নই?
অথচ এ মুহূর্তে একটা চিৎকার খুববববব প্রয়োজন...।

কেননা আমি তো এই সম্পর্কের বহূধাপার্কের রাজনীতি বুঝি না।
কোনো ফাঁপাজীবনও আমি বহন করি না।

সত্যি জেনো আমিও চলে যাওয়ার পূর্বে চিৎকার করে কাঁদবোই কাঁদবো।
এবং সেটা তোমার সব শাসন ও প্রতিরোধের দেয়াল ভেঙেই ধ্বনিত হবে...।



ডিকলোনাইজিং চাষ

বা, খাদ্যের অন্বেষণে এই আল দিয়ে হেঁটে গেছে আমির প্রথমজন,
দ্বিতীয়জন তৃতীয়জনের জন্য ধানখেত প্রহরা শেষে
হারিয়ে গেছে গোষ্ঠিযুদ্ধে,

ধান পাকার পর একদল এসে শাণিয়েছে ছুরি-বল্লম,
ততোদিনে পরিযায়ী-কাক বাণিজ্যের নামে মাঠে জুড়ে দিলো সিভিলাইজড হল্লা,
তখনও কিন্তু দেশী-পাখালির কলরব বোঝেনি বাণিজ্যের ভাষা...

আজ ভাবি কতো উচ্চমূল্য এই আমির, বা বুনো পাখালির
শিস দেয়া ভাষার, আর খাদ্যগ্রহনের পূর্বে সব কাঁদাহাসার...

হায়! পুনরায় ভাবি পাখির শিসের মতো আমির অনেস্ট চিৎকারও
একদিন পেতে পারে উচ্চ মূল্য ডিকলোনাইজডলি,
কেননা চাষারা কাঁদলে আজও আমি চিৎকারই দিতে পারি কেবল,

কেবল চিৎকারটুকুই তাদের জন্য জমিয়েছি, চি ৎ কা র...

আর, ঠুকরে আসা আমির কান্নার প্রসূতিঘর কতোদূর জানি না

জানি আলের উপর তুলে আরো ভিন্ন নামি আল
আমজনের বুকে করো যতো বিজ্ঞাপনের মায়াবী কোলাহল...

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test