E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শাহ্ জামাল উদ্দিন

২০১৫ নভেম্বর ১১ ১৯:১৯:৪০
শাহ্ জামাল উদ্দিন






 

একগুচ্ছ কবিতা

গোত্র শত্রু

ওরা দেশের মাটির শুধা নিয়ে যায়
গোপনে কিছু বিষ ঢেলে দেয়
রক্তের হোলি খেলায় মেতে রয়
আকারে ইঙ্গিতে বলে যায়-বিষ ঢেলে দেয়।

বারুদে বারুদে ভরে দেয় আকাশ-বাতাস
মাটিতে আগুন ধরায়
ওরা থাকে এয়ারকন্ডিশন- এয়ার টাইট বারান্দায়;
এ দেশের জনগণের জান যায়
হেসে কুটি কুটি হয়
হায়েনারা খেলেছিল লুটপাটের খেলায় মেতেছিল-
এ দেশটাকে লুটে নিল;
ওরাও মেতে আছে ভিন্ন খেলায়।

মায়ের মত মাতৃভূমি যেন উঠে না দাঁড়ায়
স্বাধীনতা তুলে ধরবে ভিন্ন চেহারায়,
দেশের জন্য যারা জীবন দিল
মান দিল সম্ভ্রম দিল তারা কি পেল ?
ছেঁড়া কাঁথা জীর্ণ কুঠির অন্নহীন জীবন
কান্নায় তাদের চোখের পানি শুকিয়ে গেল;
খেলোয়াড়েরা খেলে খেলে অট্টালিকার চূড়ায় ওঠে,
পূর্ণিমার চাঁদের আলো ওরা সব গিলে খেল
সময় চলে গেলে আর কি বলা চলে
সকলেই পড়ে যাবে গোলে।

শক্তির বন্দনা

যা কিছু দৃশ্যমান
অদৃশ্য তার চেয়ে অধিক শক্তিমান
আত্মীয়তার বাঁধন আর
ভালোবাসার টান-
সবই তো অদৃশ্যমান।

সব শক্তিমান তিনিও
অদৃশ্য থেকে যান
আল্লাহ, প্রভু, ভগবান।

অনু পরমানু, তাও তুমি দেখনি
বলতো এর শক্তি কি চাট্টিখানি?
অদৃশ্যকে খুঁজি মিলে যায় যদি
চলছি তাই নিরবধি।


জোনাকী

জোছনার আলোর চেয়ে
গভীর অন্ধকারে, জোনাকীর আলো
আমার ভালো লাগে,
তাই ওদের ভালোবেসেছি আগে-ভাগে
দু’চোখের আলো যখন নিভে যাবে
একেবারে প্রাণের স্পন্দন থাকবে না
গভীর অন্ধকারে নির্জন ফাঁকা জায়গায়।

জোনাকীরা আমার সঙ্গী হবে
ওদের ভালোবাসবো না তো
ভালোবাসবো কি তোমাকে?
যে আমাকে ছেড়ে থাকবে
নিকষ অন্ধকারে,
দিনের আলোতেও
জীবন এভাবেই চলে
যাকে যার ভালোলাগে।


মৃত্যু

ঘুরে ফিরে প্রতিদিন
প্রশ্ন জাগে ইদানীং
মৃত্যুর পরে কবরের অন্ধকারে
কেমনে একাকী রবো
তোমাদের ছেড়ে,
যদি উড়ে যাই আকাশে
ভেসে বেড়াই বাতাসে
তোমাদের দেখে দেখে দিন কাটাবো
আকাশের তারা হয়ে জ্বলে রইবো।

যদি কখনো মনে পড়ে আমাকে
সকালে সাঁঝে কাজের মাঝে
তাকিয়ে থেকো আকাশ পানে
একটি তারা এসে আলো দিবে
আর ভালোবাসায় ভরিয়ে দেবে তোমাকে।

আকাশে আমিও দেখেছি আমার মাকে
কাছে এসে বলেছিল-
আজো ভালোবাসি তোমাকে।



কাণ্ডারী

নিজেকে এমন ক্লান্ত দেখায় কেন
যেমন ক্লান্ত পাখি আকাশে উড়ার তাড়নায়
ডানা ঝাপটায়
আমিও রয়েছি উড়ার আশায়।

আমাকে তো আরো কিছুটা পথ
পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হবে
জবিন সমুদ্রের কিনারায়।
আার অপেক্ষায়।
আমিতো ক্লান্ত হতে চাই না
যদিও মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে যাই
অনেক যাত্রি পার করি- ক্লান্ত অসহায়।

কান্ডারী! হাল ধরো শক্ত হাতে
কিস্তিটা যাবে না মারা কোনমতে।


আয়না

একটি বড় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
আমার শরীরটাকে দেখি
বাহিরের সৌন্দর্য আমার অপরূপ নাকি!
কিন্তু আমার ইচ্ছে জাগে আমার ভিতরটাকে দেখি
সে কতো সুন্দর !

আয়না আমার ভিতরটাকে দেখায় না-
আয়না বলে নিজের কাছে ফিরে যাও
চক্ষু বন্ধ করে অন্তরের আর্শি দেখে নাও
ধরা পড়ে যাবে সব ভুলক্রটি-
সব জঞ্জাল, যা জমা হয়ে আছে
তিলে তিলে এতকাল।

তারপর চোখ খুলে দেখো
ভিতর আর বাহিরে মিলিয়ে নিলে-
শ্রেষ্ঠ তোমার মিলে।


সময়

সকাল-সন্ধ্যা কি এমন সময়
সকালে দরজা খুলে
উদিত সূর্য দেখলাম আর হাসলাম
সূর্য আর আমি এক সাথে উঠলাম
একটু পরেই দেখলাম-
সূর্য অস্তমিত হতে চলেছে
আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে
কিছুটা ব্যাঙ্গ করে চলে যায়।

সন্ধ্যায় তাকিয়ে থাকি অপলক
মায়ের কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে দেখি
পৃথিবী আর আকাশ এক হয়ে মিশে গেছে
দিগন্ত রেখায়;
আমি ও মা মিশে যাব এক হয়ে
সময়ের সামান্য ব্যবধানে।
কিছু সময়ের দেখা
আর একসাথে থাকা-মা বলে ডাকা
বুকের ভেতর কষ্ট নিয়ে আঁকা-বাঁকা পথচলা
কিছুকাল পরে থেমে যাবে সব বলা সব অবহেলা।

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test