E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ কবি সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী

২০১৫ নভেম্বর ২০ ০৯:৪৫:৩৫
আজ কবি সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী

নিউজ ডেস্ক : আজ ২০ নভেম্বর শুক্রবার নারীমুক্তি, গণতন্ত্র ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৯ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। ১৯১১ সালে বরিশালের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

সুফিয়া কামাল ছিলেন একাধারে কবি, নারী আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, ধর্মান্ধতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সুফিয়া কামাল সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সুফিয়া কামাল যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন নারীশিক্ষা অনেকটা নিষিদ্ধ ছিল।

সুফিয়া কামাল নিজ উদ্যোগে নিজেকে শিক্ষিত করেই ক্ষান্ত হননি, পিছিয়ে পড়া নারী সমাজকে শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। নারীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে গড়ে তোলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ছায়ানট মিলনায়তনে সুফিয়া কামাল স্মারক বক্তৃতা, একক ও সম্মেলক গান দিয়ে এক স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট।

৬৮টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্লাটফরম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি এ উপলক্ষে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছে। “সন্ত্রাস-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, প্রতিরোধ গড়ি” শ্লোগান নিয়ে শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।

জননী সাহসিকা কবি সুফিয়া কামাল বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট নেতৃবৃন্দ আজিমপুর কবরস্থানে কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা এতে অংশ নেবেন।

কবি সুফিয়া কামাল তার সাহিত্য চর্চ্চার পাশাপাশি নারীমুক্তি, মানবমুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে গেছেন। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনেও যোগ দেন। ৬৯’এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। একাত্তরের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘তমখা এ ইমতিয়াজ’ উপাধি বর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ সংগঠক। ১৯৭০ সালে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যেই তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৬ সালে শিশুদের সংগঠন কচি কাচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দেশবিভাগের আগে ‘বেগম’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন।

১৯২৬ সালে সওগাত পত্রিকায় প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে কবি সুফিয়া কামালের কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। তার রচিত সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে কবিতা, গল্প ও ভ্রমণ কাহিনী। তার ‘একাত্তরের ডায়েরি’ একাত্তরে বাঙালি জীবনের অকথিত চিত্র তুলে ধরেছে। সাহিত্য সৃষ্টি, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ প্রায় ৫০টির ও বেশি পুরস্কার লাভ করেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপোষহীন। তিনিই প্রথম বাঙালি নারী যাকে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test