E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অলোক বিশ্বাসের কবিতা

২০১৬ এপ্রিল ২১ ১৪:০৩:৪৬
অলোক বিশ্বাসের কবিতা






 

(আট দশকের কবি অলোক বিশ্বাসের জন্ম - ৪ নবেম্বর ১৯৫৯। প্রথম কবিতার বই ‘নীল আয়না’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে।

১৯৯১ সাল থেকে সম্পাদনা করে চলেছেন ‘কবিতা ক্যাম্পাস’ পত্রিকা। প্রকাশিত অন্যান্য কবিতার বই - মাকড়সার জাল, রূপসা পিয়ানো, হিমজার্সি, ভাইরাস ব্যালেঘর, শ্রীরূপিণী ডটকম, বাংলার মুখ, আরঙ রসিয়া আর অতনুর নামগন্ধ।

অলোক বিশ্বাসের গল্পের বই - দূরভাষ কলোনি। প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে। এছাড়া সম্পাদনা করেছেন ‘আমাদের দীর্ঘ কবিতা’ ও ‘ক্যানভাস সত্তর’ বইদুটি। পশ্চিম বঙ্গের হাওড়ায় বসবাস করেন ।)




আমি সমকামীদের বিয়ের ফটো তুলি

আমি সমকামীদের দুয়ারে চা-বিস্কুট খেয়েছি। আমাকে লোকেরা স্বাধীন
মেষপালক বলে জানলে খুব ভালো হয়। মাংসের কিমা দিয়ে চাউমিন
ভোজন করি অবিরাম আর আমার সূর্যকান্ত আঙুলের খাঁজে সমকামীরা
মৃদুমৃদু আতর ঢেলে দেয়। আমি হাজারবছর পৃথিবীর পথ হাঁটতে হাঁটতে
সমকামীদের বাথরুমের পরিচয় পেয়ে অঙ্গে প্রতিঅঙ্গে ভাষার বহুতর
ব্যবহার শিখেছি। ভাবতাম দুনিয়া ফুনিয়ার সব করতাল খঞ্জনি জেনে
বসে আছি। সমকামীদের বিয়েতে গিয়ে বুঝলুম পৃথিবীর মহাসাগরের
সংখ্যা কতো তার সঠিক হিসেব কারো কাছে নেই। একটা প্রচলিতের
ফটোকে এডিট করি প্রকৃতির আসবাবপত্র সমেত। আসবাবপত্রগুলি
সমকামীদের যৌনচেতনা থেকে জন্মেছে। খোলা চুল খোলা পেটমাই
হাওয়ায় ঝরিয়ে ওরা আপ্যায়ন করছে গোয়ার সানবাথে। দুধ থেকে
দই খাই ছানা খাই পনির ও রসমালাই খাই। সমকামীদের ফটো ফুঁড়ে
দুধ ঝরে, সেই দুধ বেচে বংশীদণ্ড কিনে রাধাকেও বলি, তুমিও নিপাট
সমকামী হয়ে যাও। তোমার দুয়ারে ঝড়জলবৃষ্টি উন্মাদ কোরে দাও।


১৮তলার তিথিবাসনা

যখন প্রতিসরণগুলি প্রত্যেকের চেনা এবং ঢাকঢোলের সঙ্গে সুরাসুর মিলছে
পাগলামিগুলোকেও দেখো আনচান ডাঁসাডাঁসা, চা পড়েনি ধুলোভ্রান্তিতে।
চাকা যখন মজ্জায় মজ্জায়, ফ্যাকাসে হতে থাকা পূর্বাপর প্রেমফ্রেম গেম
কীই বা ওখরাবে, কতোই বা কুরেমুরে খাবে ছেয়ে যাওয়া কলমিলতার গান।
লোকফোক যেসবে সম্পূর্ণতা সেন্টপারসেন্ট অর্জন করেছে ভাবে, সেগুলোর
কলেবরে গাড্ডাগুম্ফা দেখেছে বলেই মনস্কামনাগুলি আলাদা কোরে রাখে।
প্রদীপ ছেড়ে দেয় আকাশে। আকাশের সঙ্গে জুড়ে দেয় অন্যধরনের উন্মনা।
প্রতিবাদী মিছিলের প্রতিমূর্তি চলাফেরা করে ব্যালকনিতে, ভাষা বিহারি মন
স্মৃতি আর বিস্মৃতি উভয় জনেই জ্যোৎস্নাত্ব। যাপনের পথনৌকো সবিস্তারানো,
চাঙ্গড়ও ততোধিক, ভুবন মোহনের গ্রহণ অনিকেত, প্রত্যাহারও সমউচ্চারিত।
প্রতি তলাতেই নিহত হয়েছিল বিপ্লবীরা এবং বেঁচেও উঠেছিল ফনফন কোরে।
কান পাতলেই শোনা যায় পর্বত শৃঙ্গ সালংকার বলছে, বিদ্যুৎমতিরা গাইছে।
এখানেই শ্রমিকরা ওয়াইফাই জোন জাঁকিয়ে চৈতালি রাতের স্বপ্ন ফুটেজ করে।
পরীক্ষামূলকভাবে আমি এক স্বপ্নের সঙ্গে অন্য স্বপ্নের জোড়া দিই, হুনহুনাই।
তাতে হোল গিয়ে দূরবর্তী এলাকাগুলোর ধস দেখে আগে থেকে সতর্কতার
সুযোগ পাই, বাজি আমি, বাজে বৈখরি, সুরতালে বিজুরি লাগাও হে কর্মরতরা।


বোল্ড রিলেশন

টপ্পা গাইছে কেউ বিছানায় শুয়ে। গাছের ডালেডালে ছুটছে কেউ বিছানায় শুয়ে।
নারীপ্রতিমা থেকে টুসটুসি গড়িয়ে পড়ছে পুরুষপ্রতিমার পালাগানে। গাঙ ভরিয়া
যায় রসেরসে সামলানো যায় না রে। রূপ কী রানির গল্প এভাবে শুরু হে গুরুপদ
আমি বহুকাল জানি। আসলে সে রূপকল্পিকে কেউ চেনেই না, কোনোদিন দেখেনি।
মাত্র গাঙের ঘাটে যদি এতো ঘন যৌনবস্ত্র ঝরে পড়ে, তবে জলে নেমে পরিভাষাগুলি
কী ভয়ংকর রূপ নিতে পারে আমিতো ভেবেও কূলকিনারা পাচ্ছি না হে গুরুপদ হে।
আদারেবাদাড়ে শুনছি ইহা এক অভিনব উত্তেজক জীবনমহিমা তোবাতোবা হতে চায়।
হিয়াহিয়া রানওয়ে অথবা বিস্তীর্ণ তৃণভূমির কেউকেটা নাম হতে পারে। নাম যাই হোক
ডুবে যায় পাখি ডুবে যায় পাখিনি পুড়ে পুড়ে যায় আগুনে। তুমুল আগুনের জড়াজড়ি।
কিছু ফাজলামির পাশে মনোহরা বক্রোক্তি সেঁটে রতিদাঙ্গা রচিত হয়েছে দিবারাত্র হে।
সেলাই যতো মজবুত হচ্ছে রসের পরিমাণ ততোই যাচ্ছে বেড়ে রঙ্গিন আঁকিবুঁকিতে।
এবং কলহ মুহুর্মুহু ঠিক পথে পরিভ্রমণ না করতে পারাতে। অবশেষে শান্তি পারাবার।
বকশিসের ব্যাপার বলতেই কেবল রসচুম্বন ঝরে পড়ে বিগলিত পারলৌকিক বিদেহতে।
বংশীধারীর কীর্তনরশ্মি নিজেতেই রঙ মাখছে আর রাধা ভেসে যাচ্ছে ব্যাকরণহীন জলে।
কুচকাওয়াজ বাড়াই যৌনকাঁথার। সূর্য থাকলে একরকম দৃষ্টি, না থাকলে আরেকরকম
ভায়া, আয়নার সামনে সত্যি কেউ নেই, কেবল যৌন মাতঙ্গির তীব্র প্রতিবিম্ব রাখা আছে।


বৃষ্টিবাসনা

বৃষ্টির নেটওয়ার্ক ভাবিতে ভাবিতে প্রকৃতই বৃষ্টি এসে গেলে, আর কোনও
বিচ্ছেদের কথাই ওঠে না। বৃষ্টির পূর্বাভাসে ইঙ্গিতের কারুকাজগুলিকে
অভিসার নয়নে চিহ্নিত করেছি। আমরা যাদেরকে বৃষ্টিধৌত কোরে দিতে
ভয় ও দ্বিধা করেছিলাম, তারাও কেমন স্বগুণে নিজেদের ধুয়েধুতে চারুলতা
হয়ে উঠছে। মেঘের সঙ্গে আমাদের আর কোনও দ্বন্দ্ব বা চিমটিকাটা নেই।
মেঘেরা কোনও নক্ষত্রকে বিরক্ত বা আচ্ছন্ন না কোরে এসে পড়েছে হৃদয়ের
সর্বাধিক বাকপ্রতিমায়। বৃষ্টির গন্ধে কারুবাসনাকে নেড়েচেড়ে আমরা নির্বিঘ্নে
শুতে যাই। শুতে যাওয়ার আগে মনসুন নিয়ে মিত্রতা বলাই আমাদের ধাত।


সিটি মলের সূচক

মশার সূচক থেকে দূরে আছো সত্যি নয়, বৃষ্টিজ কাদা থেকে দূরে
আছো সত্যি নয়। কে কাকে চাউর করলো কে কাকে বাথরুমে
বেঁধে রাখে সমস্ত পড়েছ দিব্যি দিয়ে। এবার জমাটি আড্ডার নোট্‌স
না শুনিয়ে থাকতে পারছ না। সকল জায়গার পাবলিক, চোষ নিয়েছে
তোমার, আলাদা কোরে বেহালা বা সুতানুটির উল্লেখ নাই বা হোল।
প্রতিটি রশ্মিগুচ্ছ থেকে বরিষণ অর্জনে সৌন্দর্যায়িত জলাধার নির্মিত
হয়েছে তোমার। বিমানপোতের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছ হাইওয়ের সঙ্গে
দিবারাত্র সারিগান। আমাদের উচ্চতর মাস্টারমশাইরা বেশ খুশি
তোমার পুনরাধুনিক ডিওর প্রবাহে। আপ্যায়ন কতো রকমের হয়,
কতপ্রকার সেলুলয়েড মনের কিনারে ও ব্যালকনির বনসাইয়ে।
দীর্ঘ দীর্ঘ পায়ের প্রতিশব্দ, মিনারেল ওয়াটার, ভেষজের প্রতি রম।
হরিণ হরিণার দৃশ্যগন্ধ পাবো বলে পরিক্রমা অসম্পূর্ণ রাখি কী কোরে।
যদি গরুর গাড়ি চড়ে তোমার দরজায় গিয়ে দাঁড়াই, নেমে আসবে
শরবতের ট্রে হাতে নিয়ে, গ্রহ নক্ষত্রের বাসিন্দাদের আজগুবি পোশাক
পরিয়ে, পুনরাধুনিক বালক বালিকারা চেয়ে থাকবে কিটভরা আলোর
চেহারায়, প্রকৃতির বেয়াব্রু ঠিকানায়। ভূমিকম্পের সময় শোনা গেলো
উলু দিলে শঙ্খ বাজালে, ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে চোগাচাপকান বিস্ময়ে
শ্রাবণ শরত মেঘের কণ্ঠে মণিকোঠায় স্বপ্নের সুলভ বলে গেলে।


চলো কলাকার স্ট্রিট

যাদের বাড়ি নেই এবং যাদের বাড়ি আছে সকলের দেখা হয় ফুলের সমাহারে।
ফুলের সমাহার ঘুরে চালপট্টিতে যেতেই হবে যদি সংসারে শান্তি রাখতে হয়।
সেখান থেকে সোনাপট্টিতে প্রবেশের আগে চাওয়া পাওয়ার নানারূপ হাতছানি।
কলরবে দীর্ঘ সাঁতারের ললিতছলিত থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ অর্জন নেহাত মন্দ নয়।
চালচুলো জোটানোর পর যে বস্তুগুলি না হোলে চলে না তা হোল উত্তম ইয়ার্কি।
ক্ষণিকের মিথ্যার প্রলোভন পার্কে বসে অথবা কাল্পনিক রমণের আগে ও পরে।
ক্যানটারবেরি টেলসের গুণাগুণা ভোরে কীর্তিমানের কুকীর্তিগুলি খুব দূরে নয়।
কলাকার স্ট্রিটে চাঁদ এসে খালি হাতে ফেরে না। অন্তঃস্থলে বিদেশিরা জামাই
আদর নিয়ে বাসা বাঁধে। আপাদমস্তক মদ্যপিপাসু রুবারু উড়ে বেড়ালেও সমস্যা
হয় না সুষমদের, যারা ছোট্ট বাগান বানিয়েছে, যারা একটু শান্তিতে ঘুমতে চায়।
একপাশে প্রতিবাদী মিছিল অন্যপাশে বুদ্ধ মীমাংসার সভাঘর, আদরায়িত বেড়াল
ও তাদের খেলাঘর। সই বাউল জমে থাকা কান্না ভাসিয়ে দেয় আকাশেবাতাসে।


কী গান গাহিবে তুমি শমে

দহন মাখিতে মাখিতে যেদিন ছায়া পেয়ে গেলে, চতুষ্পার্শ্বে বন্ধ হোল
কুৎসা কথন। বন্ধ হোল দুখদ্রাঘিমার রুখাশুখার অবিরাম নাগপাশ।
ছায়া থেকে নির্গত হোল শম, ছায়া থেকে অনিমিখ এলো আম জাম
আঙুরের দেশে ধ্বনিময় নিবিড়তা। প্রকৃত গানের সময় টুপি নামিয়ে
রাখবো সুশীতল মিড়ে। যখন গাইবে পাগলপারা, আমি পিঠ চুলকবো
না, নাকের চুল ছিঁড়ব না। স্থির হয়ে দেখবো কিভাবে মেষপালকিনি
হয়ে উপত্যকায় নেমে যাচ্ছ। ছুঁয়ে নেব লালমাটি দেশের অনুপম
মাদল তোমার কণ্ঠে বিকণ্ঠে। গুলি খাওয়া বাঘ হে তুমি ডেটল না
পেলেও, প্রকৃতি শিশির পাখিডানা তোমার সহায়ক পুনঃপুন আছে।
বৃষ্টির জলে ধুয়ে গেছে মানসিক প্রদাহ, ধুয়ে গেছে হন্তারক প্রেমফ্রেম।
যৌনতার অতল থেকে উঠে এসে দাঁড়িয়েছ সমুদ্রের কিনারে। এবার
কী গান গাহিতে চাও শমে, কোন ডুবজলে শমকে ছড়িয়ে দেবে তুমি।


কলাকার স্ট্রিটের দৌড়

ল্যাম্পপোস্টে অন্ধকার জ্বলছে। ভিখারিদের গা-ভর্তি সোনার গয়না দেখে
ঝড় উঠছে অন্যদের মনে। কোথাও কোথাও প্রশাসন বলে কিছু নেই, শুধু
ছোটে অ্যাসিডগন্ধ মেঘ আর শূয়রদের হাইব্রিড কথোপকথন। আলটপকা
সপ্তম বর্ষীয় বালিকা ধর্ষিত হয়ে গেলে কেউ টুঁ শব্দ করে না। কারো দিকে
না তাকিয়ে সবাই দ্রুত কাঁচা পয়সা ঘনাতে চায় প্লাস্টিকের তাকিয়ায় ঠেসে।
মৎস্য বিক্রেতারা জানে ওই আসছে বেনো ঝালাপালা, সাজিয়ে রাখা মাছ
রাজনৈতিক লালসার কাছে তুলে দিতে হবে। কলাকার স্ট্রিটের বুকের ওপর
বিস্ফোরণ ঘটাতে ঘটাতে ইলেকট্রনিক দৌড় আইনসভার টিকিট পেয়ে যায়।
জনপদের সূচক অনুসারে বিভিন্ন জড়িবুটির গাছ পুঁতে কিসসু প্রতিকার নেই।
এক বিড়াল যায় অন্য বিড়াল আসে, এক রঙ সম্পূর্ণতা পাবার আগে মৃত হয়।
ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দেয় উদ্ধারকারীর আলো। বিড়ালত্বের কাজগুলি কুকুরত্বে
সঁপে দেওয়া যায় যেকোনোদিন। সহজকথা কেউ গুরুত্বই দেয় না আজকাল।
অস্ত্রদ্বন্দ্বের অনুশীলন থেকে খুব দূরে নয় পার্টি অফিস যেখানকার পরিনমন
দিয়ে সামাজিক জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কলাকার স্ট্রিট হড়হড় বমি করে,
জ্বরে কাঁপে, বিছানাতেই পায়খানা পেচ্ছাপ ছেড়ে দেয়। তারপর খুব সকাল
বেলায় বাচন কমিশনের কথামতো একরাশ সন্দেহ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ছোটে।


কলেবরে কলোরব

পবন জুয়েলার্সে প্রথম নামটি আমার ডাকা হোলে বিবাহের গন্ধে ভরে ওঠে বাড়ি।
যেসব দর্শনকে এতদিন অবহেলা করেছি কলাকার স্ট্রিট সেগুলোকে নতুন কলেবরে
আমার শরীরে পরিয়ে দেয়। মজা লাগে বেশ পরিবর্তিত কৃষি মানুষকে দ্রুত বাউলিয়া
করে। পেয়ারা বিক্রেতারা বলছে তারা রসগোল্লা বা চিত্রকূট বিক্রি করছে, পেয়ারা না।
গাড়িতে যুক্ত ঘোড়ারা ইঞ্জিন নয়, রামায়ণ। কেউ যদি ভাবে সমস্তপ্রকার যানবাহন মিলে
মহাভারত, তবে প্রতিবাদের কিছু নেই। সত্যি কথা বলতে ভয় পাচ্ছে একজন, অন্যজন
অনর্গল আকাশকে মিথ্যা করে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এসে সাবলাইম মিথ্যাচারিণীকে গলায়
পরিয়ে দিলেন কোকিল পাখির অমনিবাস। কলাকার স্ট্রিট দিয়ে যারা নিয়মিত যাতায়াত
তাদের নাকি সিদ্ধিলাভ হয়। আমিও ঢুকি পুরনো জামা জুতো পরে, পেটের জ্বালাপোড়া
নিয়ে, বৃষ্টিহীন মাঠাবুরু নিয়ে, মানসিকভাবে ধর্ষিত হওয়া এক নগরবাসী বিনাকারণে হেঁটে
যায় পানসুপুরির দোকানের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে। কোনও মানেই হয়তো হয় না ভাবার
আমার ভেতর দিয়ে চলে যাচ্ছে বলিউড টলিউড হলিউড। ভাবছি সকল পথ আধুনিক
পুনরাধুনিক থেকে কোন গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্তের দিকে চলে গেছে। বেপথ বলে অভিহিত
হয় যারা তারা সবাই কিন্তু কুৎসিত পচাগলা দূষণবিশিষ্ট নয়। ফল খেতেখেতে পাখিদের
দেশে এসে পড়ি। পবনের ডাকে নিজের ছবি দেখি অপরের ছবি দেখি আর হনহন চলি।


ওয়াই ফাই জোন

মন রেখেছ যেভাবে, সেটাই সব নির্ধারণ করে, বাকিগুলো ভেসে যায়। চিমটিরা ভেসেই বা
যাবে কোথায়, কুঁদুলে কুঁদুলে মাতিয়া ঘুরে বেড়ায়। বিকশিত প্রার্থনায় ওয়েবসাইট দেখি,
দেখি মনে রাখা নিরভিমান, বেশ কিছু অবাঙমানসগোচর, মৃদুমৃদু খেলাকরা অবিমিশ্রকারি।
হাসিতে হাসিতে এবং কাঁদিতে কাঁদিতে হাইফাই হাইফাই ঘরবার। সকলেই নিশ্চিত জানে
এইসব ঘটিতেছে এমন খাসমহলে যেখানে বাহির বিশ্বের ছোঁয়া লাগে বেশ। অর্থাৎ ঢলাঢলি
সকল উমা সকল শিব ও নারায়ণ তথা শ্লীল অশ্লীলেরা জানিতেছে আমাকান্তর বীর্যের ডম্বুরু
রঙরসিয়া। বহুবচনিরা অ্যাবাকাস বানাই অমলতাস ফোটাই ওয়াই ফাই ঘোরে। মাছ চাষ
করি আলু চাষ করি মেহেন্দি আঁকিমাখি গুবগুবি বাজাই নিজেকে নাচিয়ে নাচিয়ে। এবং গুরু
গাইতি চালাই মহুয়া বানাই হবিকান্ত খাবিকান্ত হয়ে। শ্রেফ এই গানের জগত মরমে মরমে
নিবেদন করে যে তাহাদের সকল পাব-ও-হাব ক্র্যাফটকীর্তন ইচ্ছা করিলে যে কেউ বাজাইয়া
লুটাইয়া দেখিতে পারে। এবং পবনেপবনে দুগ্ধে মাখনে ড্রিঙ্কসে অন্যসকলের মস্তিষ্ক মাতাল
করে দিতে পারে। জোন বিজন থেকে বেরিয়ে মর্নিং ওয়াকে গিয়ে শুনি সকলের সকল নীরব
কলহ, মনিমাখা ভালোবাসা পরস্পরে জানে। কোন সূত্রাবলি তাহাদের একত্র করিয়াছে।
রান্নাঘর থেকে রুটি সবজি মধ্যাহ্ন ভোজন চুরি যাওয়ার কথা আমি ছাড়াও অন্যরা জানলো

কী কোরে এটা বোধ হয় কৌতূহলের তেমন কোনও বিষয় নয় হিসেবি ও বেহিসেবির কাছে।


(ওএস/এস/এপ্রিল২১,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test