E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যাত্রা পালায় অশ্লীলতা প্রদর্শনকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

২০১৬ আগস্ট ২৩ ১০:১৪:২৮
যাত্রা পালায় অশ্লীলতা প্রদর্শনকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে এক সেমিনার অনুষ্ঠত হয়। সেমিনার কক্ষে ঐতিহ্যবাসী যাত্রা শিল্প আজকের বাস্তবতায় আমাদের করণীয় শীর্ষক এই সেমিনারে ফেডারেশনের সম্মানিত সভাপতি জনাব তাপস সরকার সভাপতিত্ব করেন।

গতকাল সোমবার বিকেলে এই সেমিনার উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহা পরিচালক ও যাত্রা শিল্প উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকী।

সেমিনারে প্রধান অতিথি বিশ্ব আইটিআই এর সাবেক সভাপতি জনাব রামেন্দু মজুমদার তাঁর প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজকের বাস্তবতায় ঐতিহ্যবাহী যাত্রা শিল্প এবং এই শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের বেঁচে থাকার স্বার্থে যাত্রার পারমিশনকে সহজতর করুন এবং সেই সঙ্গে যাত্রার মাঠে অশ্লীলতা প্রদর্শনকারী তথাকথিত একশ্রেণীর যাত্রা দল, মালিক ও শিল্পীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

বিশিষ্ট যাত্রা গবেষক ড. তপন বাগচী তার প্রবন্ধে যাত্রাকে প্রতিদিনের পারিবারিক বিনোদন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য-
১. আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সমকালীন বিষয় নিয়ে যাত্রাপালা রচনার জন্যে দেশীয় পালাকার ও নাট্যকারণগণ উদ্যোগ নিতে পারে।
২. মাসে অন্তত একবার মহিলা সমিতি, গাইড হাউস কিংবা জাতীয় নাট্যমঞ্চে যাত্রানুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৩. বাংলাদেশ টেলিভিশনে এবং বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত যাত্রানুষ্ঠান সম্প্রচারের পুনঃউদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. গণযোগাযোগ অধিদপ্তর সরকারি কর্মকান্ড ও তথ্য প্রচারের মাধ্যম হিসেবে যাত্রাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
৫. বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর প্রতিটি জেলা শাখায় নিয়মিত যাত্রা মঞ্চায়নের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।
৬. একটি জাতীয় যাত্রামঞ্চ এবং প্রতি শহরে ও থানায় স্থায়ী যাত্রামঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা যায়।
৭. প্রতিবছর নির্দিষ্ট মৌসুমে জাতীয় যাত্রা-উৎসব আয়োজন করতে হবে।
৮. যাত্রাশিল্পে অবদানের জন্যে জাতীয় পর্যায়ে নিয়মিত সম্মান ও পুরস্কার প্রবর্তন করতে হবে।
৯. যাত্রাদল গঠনে অনুদান দেয়ার ব্যবস্থা চালু করা যায়।
১০. যাত্রানুষ্ঠানের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতার অবসানের উদ্যোগ নিতে হবে।
১১. স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় নয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কেই যাত্রাশিল্পের তদারকি, অনুমতি প্রদান, লাইসেন্স প্রদান ও লাইসেন্স নবায়নের সর্বময় ক্ষমতা অর্পন করতে হবে।
১২. যে সকল দলের লাইসেন্স রয়েছে, প্রতিরাতের যাত্রানুষ্ঠানে জন্যে তাদের পৃথক অনুমতি সংগ্রহের প্রথা বাতিল করতে হবে।
১৩. যাত্রার নামে অশ্লীল নাচ, জুয়া ও হাউজি আয়োজনকারীদের কঠোর শাস্তিপ্রদানের আইন করতে হবে।
১৪. আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতি এড়াতে রাতব্যাপী যাত্রানুষ্ঠানের পরিবর্তে ‘সান্ধ্য যাত্রা’ অর্থাৎ সন্ধা ৭ টায় শুরু হয়ে রাত ১০ টার মধ্যে শেষ করতে হবে এই মর্মে আইন প্রণয়ন করতে হবে।
১৫. যাত্রাকে ইন্ডাষ্ট্রি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে যাত্রাশিল্প উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা যেতে পারে।
১৬. ‘অভিনয় নিয়ন্ত্র আইন’ বাতিল হলেও যাত্রাশিল্পকে নিয়ন্ত্রনের কালাকানুন Bengal Places of Public Amousement Act 1933 অপঃ ১৯৩৩ বাতিল হয়নি। এটি বাতিল করতে হবে।

উল্লেখিত ১৬ দফা সুপারিশ উত্থাপন করেন এবং উক্ত প্রবন্ধের উপরে একে একে আলোচনা করেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, ড: নিরঞ্জন অধিকারী, জোৎসনা বিশ্বাস, গোলাম সারোয়ার, আক্তারুজ্জামান এবং হাবিব সারোয়ার, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, ফাতেমা আক্তার রত্না, অজয় সরকার, গাজী লিয়াকত, এম এ হান্নান, এস এম সফি, শিউলী জামান প্রমুখ।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের সেক্রেটারী জেনারেল, এ্যাডভোকেট হোসেন কবির শাহীন।
(ওএস/এএস/আগস্ট ২৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test