E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শুভ্র সরকার’র কবিতা

২০১৬ আগস্ট ২৫ ১৫:০৩:৩৪
শুভ্র সরকার’র কবিতা







 

একদিন আমি আরণ্যক হয়ে যাবো

অদ্ভুত বিস্ময়ে বুঁদ হয়ে ছেলেটা বলেছিল
তুমি বরং নখে সবুজ আঁকো
আমার অরণ্য বড্ড ভালোলাগে।

মেয়েটি অবহেলার সুরে বলেছিল
তোমার সবুজ বুকে আমার লাল টিপ
তোমার ছায়া ছুঁয়ে আমি রঙিন হবো।

আচ্ছা, অরণ্য কি আকাশ ভালোবাসে?

জানি না তো
তবে আমি রোদ হবো
তোমার আজন্ম বাধ্য প্রেমিকা।

ছেলেটি হেসেছিল। আনন্দহীন।

মেয়েটি এক সবুজ পাখি দেখেছিল ছেলেটির চোখজুড়ে
কিছু কড়কড়ে রক্ত ছাপিয়ে গেছিল চেনা সবুজ।
হন্যেহয়ে নিজেকে খুঁজেছিল
শরীরহীন। অনুভবসর্বস্ব অরণ্য পেয়েছিল।

সেই যে ছেলেটি বলেছিল
একদিন আমি আরণ্যক হয়ে যাবো।

আজো সকাল হয়
চোখমুখে একঝাঁক রোদ মেখে
আরণ্যক লাল টিপ খুঁজছে।

মেয়েটি অরণ্য হচ্ছে।

জানালার অন্যপাশে তুমি ছিলে

আমি এতো বিস্ময় নিয়ে কখনো দেখি নি।

সাধারণ একটা আকাশ।
ভাঙাপাল্লার সেই পুরনো জানালা
অনাদরে চেয়ে আছে
আকাশ জানালার দিকে। জানালা আমার দিকে।
চতুষ্কোণ জানালায় যেন আকাশ আটকে আছে।

কালোরঙা সেই শতাব্দী চুরির ষড়যন্ত্র
যে চোখে সারল্য পায়
সে চোখেই হাজারবছুরে দগ্ধতা।

আমার চৌকাঠ পেরোনো হয়নি তার।
উঠোনের কোণে অযত্নে বেড়েছে কলমিলতার মতো।
কখনো যে চোখ পড়ে নি তা নয়।
কিন্তু তাতে প্রেম ছিল না। ছিল অন্যকিছু।
ছিপছিপে শরীরটা যখন ধনুকের মতো টানটান হতো
আমার রাজ্যের বিস্ময় জড়ো হতো ওর চারপাশে।
শরীরের মধ্যে দলাপাকিয়ে উঠতো মাংসপিণ্ড
আমার মধ্যে অন্য আমি।

আবার কোন মেঘমেদুর সন্ধ্যেয়
শুনেছিলাম জ্যোৎস্নার শোরগোল।
ঘরছুট আমি অন্ধকারের সিঁড়িভেঙে এগিয়ে যাই
উন্মত্তের মতো হাঁটতে থাকি ঝিঁঝিঁপোকার সাথে পাল্লা দিয়ে।
সেইরাতের অন্ধকারে আমি উপড়ে ফেলেছিলাম
উঠোনকোণে সন্তপর্ণে বেড়ে ওঠা কলমিলতাটা।

তবু আমি কখনোই দেখি নি
ঐ জানালার অন্যপাশে তুমি ছিলে।
আকাশরঙা শাড়ীতে। সলাজ।
চোখেমুখে একঝাঁক ভালোবাসা মেখে
একস্পর্শের অপেক্ষায়।

কতগুলো দিন রাত হয়েছে
মাস বছর হয়েছে হিসেব নেই।
সেইরাত্রির শব্দ আজ আর নতুন করে ভাবায় না।
আমার যাপিত জীবনের ঘামে নোনা হয়েছে সেই অন্ধকারের গল্প।

হয়তো আমি কখনো জানালার বাইরে আকাশটাই দেখি নি।
বিস্ময়। অদ্ভুত বিস্ময়।

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test