E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় কবিকে স্মরণ

২০১৬ আগস্ট ২৭ ১৪:৪৭:৫২
ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় কবিকে স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার : ‘গাহি সাম্যের গান/ মানুষের চেয়ে বড় কিছু নেই, নহে মহিয়ান...।’ মানবতার জন্য গেয়েছেন সাম্যের গান, অত্যাচারী শাসকের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের তপ্ত আগুন জ্বালিয়েছিলেন স্বাধীনতাকামী মানুষের মধ্যে। বলেছেন, কারার লৌহ কপাট ভেঙে দিতে।

চির তারুণ্য, দ্রোহ, প্রেম ও ভালোবাসার মাধ্যমে মানুষের মাঝে তৈরি করেছেন আশার বাণী। সম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও ইসলামকে হেয় করার মোহে লিপ্ত কতিপয় সন্ত্রাসীর সাম্প্রদায়িক উস্কানি রুখে দিতে পৃথিবীর বিধ্বস্ত মানুষকে আজও আশা জাগায় তাঁর কবিতা। তিনি আমাদের জাতীয় কবি। সাহিত্যাঙ্গাণে বিংশ শতকের অন্যতম নায়ক কাজী নজরুল ইসলাম। আজ ১২ ভাদ্র কবির ৪০ তম মৃত্যু বার্ষিকী।

শনিবার পূবের আকাশে রক্তিম সূর্য উদীত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করতে শুরু করে পুরো বাঙালি জাতি। সকাল ৭টায় কবি পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার নাতনি খিলখিল কাজী। এরপর একে একে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি’র বিভিন্ন হল, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, শিল্প কলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের ব্যানারে কবির মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শুধু সিলেবাসে কিংবা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে নয়, নজরুলকে চেতনায় ধারণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে নজরুলের দর্শন উপস্থাপনের দায়িত্ব নিতে হবে। অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি, সম্প্রদায়িকতা রুখে দিতে নজরুলের চেতনা ধারণ করতে হবে।’

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্রময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি নজরুলের কবিতা ও গানে শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করে জাতিকে। কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।

১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করলেও তিনি ছিলেন পরবর্তীতে লেখনিতে শ্রেষ্ঠ। ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। সংগ্রামের মাধ্যমে সকল দুঃখকে মোকাবেলা করেছেন তিনি।

মৃত্যু বার্ষিকীতে কবির স্মরণে আলাদা আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেয়া কর্মসূচিসমূহ হচ্ছে- বাদ ফজর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরানখানি, সকাল ৭টায় কলা ভবন প্রাঙ্গণে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অফিসার ও কর্মচারীগণ জমায়েত হয়ে সকাল সোয়া ৭টায় ভিসির নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির মাজারে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ। এরপর কবির মাজার প্রাঙ্গণে ভিসির সভাপতিত্বে আলোচনা সভা।

আজ কবি নজরুল বাঙালি জাতির চেতনায় ও মননে চির জাগ্রত। অন্যায় অত্যাচার মোকাবেলায় তার কবিতায় খুঁজে নেয় আশার বাণী। যেমনটি বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে উঠে আসে। ৪০ তম প্রয়াণ দিবসেও কবি আছেন কবিতায় মননে, বাঙালির ভালোবাসায়। হারিয়ে যাননি বাঙালির হৃদয় থেকে। যেমনটি তার কবিতায় উঠে আসে। ‘যেদিন আমি হারিয়ে যাবো, বুঝবে সেদিন বুঝবে/ অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুঁছবে।’

(ওএস/এএস/আগস্ট ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test