E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মৌ মধুবন্তীর কবিতা

২০১৬ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৩:১১:৩৫
মৌ মধুবন্তীর কবিতা





























 


নিদাগ চেতনা
মৌ মধুবন্তী

"আমারই চেতনার রঙে পান্না হলো সবুজ , চুনি উঠলো রাঙ্গা হয়ে..."
কবিতা বলো, কি করে আমি আকাশ থেকে নামবো এখন মাটিতে?
"আমার আকাশ থেকে সরাও তোমার ছায়া"
বিবস্ত্র বিশপে তুমি , ন ও তু মি মাছরাঙ্গা
বারে বারে কবিতা পড়ো, কবিতার মানে জানো না
চিৎকারে শিৎকার মিলিয়ে দিয়েছ, চেতনা মানেই জানো না
-কে যায় ঐ পথ ধরে,
-মানুষের সন্ধানে গিয়েছিলাম,
না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছি
-সাথে কি নিয়ে যাচ্ছ?
-একা এবং এক লক্ষ অঙ্গীকার
যা কিছু আমার এবং আমার চেতনার।।

টরন্টো, কানাডা, পৃথিবী
৪ সেপ্ট,২০১৬



অনধিকার বোধ
মৌ মধুবন্তী

নারিকেল টা ভাঙ্গো , এক চুমুক পান করি

জ্বলছে অগ্নাশয় থেকে যমুনার তীর পর্যন্ত
লেলিহান শিখায় পুড়ে যাচ্ছে অন্তর মাঠ ঘাট
আর বিস্তর জমানো দিনের খড় কুটোর মাচা

নারকেল টা ভাঙ্গো এক চুমুক পান করি...।
চারিদিকে ঘুরপাক খাচ্ছে
প্যাঁচানো পুংলিঙ্গ, অবৈধ স্ত্রীলিঙ্গ, বহুব্রীহি উভয় লিঙ্গ
দিনের জঠরে লুকিয়ে থাকা ক্লীব লিঙ্গ।

এতো এতো লিঙ্গ- তবুও লিঙ্গ মানেই শিশ্ন।

নারকেল ভাঙ্গো এক চুমুক পান করি

২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
টরন্টো, কানাডা,পৃথিবী



আয় না লো সই বৈশাখী

মৌ মধুবন্তী

ওলো বৈশাখ! ওলো সই, আয় না আমার বাড়ি
আমের মুকুলে সাদা- চুন্দ্রি-শাড়ির আচঁল ভরি।
আমি তোর সই, দূর প্রবাসে রই-
তবু আজ মোটা ভাতে পানি ঢেলে
তোর মত করে আজ ইলিশ ভেজে
সাথে কচুর লতি, শুটকির ভর্তা
আমি বাঙ্গালী চিরন্তন সাজে সাজি।

মনে পড়ে মায়ের হাতের সেই চাল ভাজা
আর খৈ এর মোয়া। জানিস সই, ছোট চাচা
বৈশাখী মেলা থেকে একবার গজা কিনে দিয়েছিল।
কিন্তু একটা বাঁশের বাঁশীর জন্য রাত ভর চোখের জলে
পান্তা ভাতের থালে আমি '৭০ এর উড়ির চরের জ্বলোচ্ছাসে
ভেসেছি। মেয়েদের নাকি বাঁশী বাজাতে হয় না।

আয় না সই, আজ আমরা দু'জনে মিলে বাঁশী বাজাই।
ছোট চাচা নেই এখন। তুই আমি দু'জনেই দুর্বার স্বাধীন।
এ কথা কোনদিন বাপীকে বলিনি, মাকে বলিনি।
বড় ফুফীকে বলতেই বার -আনা দিয়ে সোনাইমুড়ি বাজার থেকে
বাঁশী কিনে এনে দিয়েছ। পুকুরের ঘাটে পা ঝুলিয়ে ইচ্ছে মত বাঁশী বাজিয়েছি।

সেদিন ছোট চাচাকে বন্ধু মনে হয়নি আর।
কেবলই সৎ নামের অসৎ-চাচা মনে হয়েছিল।
আজো কিন্তু তাই, আমাদের আর বন্ধু হওয়া হয়নি।
আয় না সই, আজ আবার বাঁশী বাজাই। কপালে সিঁদুর পরি।
আহা! আমার আলতার কৌটা শেষ হয়ে গ্যাছে।
কোমরের বিছা হারিয়ে গ্যাছে, শুধু মনের ভেতরে
এক ছায়া- বৈশাখ জেগে আছে।
সই, তুই চলে আয় না -- আমি পান্তা বানাই।
ইলিশ মাঝের গন্ধে এখন পড়শীরা মাতোয়ারা।
আমার পায়ে রুনুঝুনু নুপুর বাজে।
আমি সেজেছি আজ কলমিলতা সাজে।
আমার চোখে আজ কাঁচা আমের সুভাষ ভাসে।
এই নে আমার মেহেদি রাঙ্গানো হাত।
রেখে দে তোর বুকের পাশে।

ও সখা!
"মেলা থেকে তাল পাতার এক বাঁশী এনে দে।"-

মহুয়া মালয় পুরে--আমার মন যে কেমন করে
আয় না লো সই খেলবি এখন বাঁশীর খেলা
আমার সাথে, আমার সাথে দুরন্ত এই সাজ- বৈশাখে।
মহুয়া মালয় পুরে। আয় না লো সই। আয় না লো সই।

পহেলা বৈশাখ, ১৪১৮।
কানাডা, পৃথিবী



কবিতা সচেতন মানুষের অধিকার
মৌ মধুবন্তী

কবিতা সচেতনতা শেখায়
কবিতা স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে
কবিতা আত্মপক্ষ সমর্থন শেখায়
কবিতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার
কবিতা নিরপেক্ষতার কথা বলে
কবিতা সাম্যবাদের কথা বলে
কবিতা বিদ্রোহ বিপ্লব ঘটায়
কবিতা নারী মুক্তির পথ তৈরী করে
কবিতা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে
কবিতা সমাজ বিভাজনের ক্ষেত্রে মাথা উচু করতে বলে
কবিতা শ্রেণী ভেদের বিরুদ্ধাচরণ করে
কবিতা একতার কথা বলে
কবিতা স্বতীর্থদের প্রতি হাত বাড়াতে বলে
কবিতা আগুয়ান হতে বলে
কবিতা জঙ্গীবাদের প্রতিবাদ করে
কবিতা মানুষ হত্যার তীব্র নিন্দা জানায়
কবিতা বাক স্বাধীনতার উত্তম পরিচর্চ্চা ---- বাচনিক হোক
সার্বজনীন সকলের জন্য বরণীয়, কথা বলার ও মত প্রকাশের নিরপেক্ষ মঞ্চ



অতটুকু স্বাধ চায় নি
মৌ মধুবন্তী

যদি ভাবো নগ্ন পৃথিবী বলেই তুমি নগ্ন হবে
কেউ, না, করবে না; তবে যুতসই কতটুকু
জেনে নিও আয়নার সামনে দাড়িয়ে।
সব বানান একসাথে ভুল হয়না, তবে ভুল যা
তা আর সোধারা্নো যায় না। তুমি পুরুষ তাই বলে
যোনির রক্তে ভেজা জিহবায় আকা চিত্র কে ভুল বলো না
তোমার জিহবা যে মিথ্যা বলে, তার পাশেই আছে পিচ্ছিল
যৌনির সেলাইভা।আরেকবার চেটে দেখো,ভগবান জালি
নতুন করে সাধ পাবে না, পুরানো আস্বাদ এখনো ঢালে পানি

টরন্টো, কানাডা, পৃথিবী
২২ জুলাই, ২০১৫


স্বাধীনতা কেবল ভাষা নয়
মৌ মধুবন্তী


নাড়ার আগুনে পুড়েছি মাগো শোক-দুঃখের গান
চেতনার র্রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে খেয়েছি
শুকনো মটরের জমিন ও আসমান
তবু ভুলিনি তোমার কি নাম, তোমার কি নাম।
দিনের গায়ে গা লাগিয়ে আমি বর্ণমালাকে
হেঁটে যেতে দেখেছি
বাতাসকে দেখেছি মুখরতা ভাঙ্গতে
দেখেছি একটি যুবক সৈনিক শব্দকে কুর্নিশ করছে
দেখেছি কত সহজে সেদিন
রাস্তাও দাঁড়িয়ে জানিয়েছে তার কৃতজ্ঞতা মাতৃভাষাকে।
দেখেছি সেই উর্ধমুখী সময় পরেছে শোকের কালো বেজ
মাতৃভূমির প্রতি অহংকারকে দেখেছি
চুলে দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাঁট
বুকের জমিনে হেঁটে গেছে বিরামহীন মিছিল
সকাল থেকে সন্ধ্যা –নেভেনি প্রদীপের আলো,
যাদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে নিতান্ত
এক পতাকা হাতে, তাদের জন্য বলি,
কি করে বছর ঘুরে যায়
কি করে মানুষ মরে যায়
কি করে মা কেঁদে কেঁদে জল হয়ে যায়
কি করে আরশীনগর প্রবাসী জীবন হয়ে যায়
এই শোকের মিছিলে তাকিয়ে তুমি তা বুঝবে না ।
কে দেশ প্রেমিক আর কে রাজাকার?
তাদের জন্য বলি,
কতগুলো জাহাজ পতনে যুদ্ধ যুদ্ধ হয়ে ওঠে
কতগুলো কবর খুড়ে মানুষের হাড়ে
অশ্বক্ষুরের চিহ্ন পাওয়া যায়?
কতটা কন্ঠে আবৃত্তি করলে স্বাধীনতা সোচ্চার হয়ে যায়
কতগুলো আত্মা পেখম মেললে
ময়ূরের নাচ দেখা যায়
কতগুলো কলের নল খুলে দিলে
রাতের কালো নির্জল মেঘ হয়ে যায়
কতগুলো চোর চুরি বন্ধ করলে
উত্তাপ মাটিতে মিশে যায়
এই শোকের মিছিল দেখে তুমি তা বুঝবে না।
কে মাতৃভাষি আর কে রাজাকারভাষি?
আমি ভাবছি কতগুলো শিশু বলিদান হলে
বয়স্ক মানুষের মনে চেতনার উন্মেষ ঘটে
কতগুলো নাড়ি থেকে প্লাসেন্টা ছিন্ন হলে
মাতৃভূমির প্রসব ঘটে
কতগুলো ভাই ও বন্ধুর কফিনে চুমু খেলে
ঠোঁটে ব্র্ণমালার ঠাঁই উঠে আসে
কতটা অদক্ষ হলে বিচার ব্যবস্থায়
দাগি আসামি বেকসুর খালাস পেয়ে যায়।
এই শোকের মিছিল দেখে আমি তা বুঝব না।
কে আয়তনভোগী আর কে স্বল্পবেতনভোগী?
শিরায় শরায় রক্তে রক্তে কতটা নাচন
উঠলে সন্তানের বাপ হওয়া যায়
স্ত্রী ও মাকে সমান মর্যাদায়
মানুষ বলে গন্য করা যায়
কতটা আবেগ নিয়ন্ত্রিত হলে
আপন বোনের জামাইকে
--রাজাকার বলে গালি দেয়া
কতটা বুদ্ধির বিনাশ হলে নিজ দেশে
পাশের বাড়ির কিশোরী ধর্ষিতা হয়ে যায়
কতগুলো কবরের ঢাকনা খুললে
বুকের অতলে সমুদ্রঝড় দেখা যায়
এই শোকের মিছিল দেখে তা কেউ বুঝবে না।
কে আততায়ী আর কে আত্মরক্ষাকারি?
কতটা বিবেক
বাড়লে পাতে তবে কেউ জানবে-
অতঃপর
সাংবাদিক ভাষায় বলি,
“স্বাধীনতা কোনদিন
বিদেশী
সাহায্য
নয়।“
১৬ ডিসে, ২০

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test