E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কবি নাজমুল হক নজীরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

২০১৬ নভেম্বর ২৮ ১৬:৩৩:২০
কবি নাজমুল হক নজীরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নিউজ ডেস্ক : সত্তর দশকের বাংলা ভাষার অন্যতম কবি ও শ্লোগানের কবি খ্যাত কবি নাজমুল হক নজীরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে । ২৭ নভেম্বর ২০১৬, বিকালে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার অডিটরিয়ামে এ অনুষ্ঠান পালিত হয়।

অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং প্রধান আলোচক হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম পিপিএম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বিটিভি পরিচালক (বার্তা) কবি নাসির আহমেদ, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, ভারতের রাহিলা সহিত্য ও সংস্কৃতি সংঘের সভাপতি কবি মো. রফিক খানসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘সংস্কৃতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেছেন একটা দেশের সংস্কৃতি শিল্প সাহিত্য মাটি ও মানষের সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করা হয়। কারণ এটা আমাদের সংস্কৃতি মাটি ও মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। দেশের সকল পর্যায়ের বিশেষ করে ছিন্নমূল পর্যায়ের মানুষ যে সংস্কৃতি ধারণ করে সেই সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিলেন কবি নাজমুল হক নজীর। নজীর তার নাম যেমন নজীর তিনি তার কাজকর্মে ও নজীর স্থাপন করেছেণ। সত্যনিষ্ঠ মানুষ ছিলেন বলে তিনি গ্রামে বসেও কবিতা, সংস্কৃতি ও সাহিত্য চর্চা করতে পেরেছেন। তিনি সংস্কৃতিচর্চা ও সাংবদিকতার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন আর এ দুটির মূল চালিকাশক্তি হলো সত্য। সাংবাদিকতার মূল কাজ হল সত্য প্রকাশ করা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করা আর সেই কাজটি তিনি খুব ভাল ভাবে করেছেন। একই সাথে তিনি মানুষকে সংস্কৃতিমনা করে তুলেছেন।

আজকের দিনে জঙ্গিবাদের যে খারাপ অবস্থা আমদের সমাজে বিরাজ করছে সেখানে এই সংস্কৃতি চর্চা আমাদের এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিতে পারে। সংস্কৃতিবোধসম্পন্ন মানুষ হলে মানুষের ভিতরে অজ্ঞতা, অন্ধকার থাকতে পারে না ফলে তাদের দ্বারা জঙ্গিবাদের মতো জঘন্য কাজকর্ম সংঘটিত হতে পারে না।। কবি নজীর মানুষের ভেতরের এই অন্ধকার দূর করে মানুষকে আলোর পথে এনেছেন। তার কর্ম দ্বারা আজ এটা প্রমাণিত।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘কবি নাজমুল হক নজীর প্রচারবিমুখ এবং ব্যক্তিগত জীবনে তিনি খামখেয়ালী স্বভাবের ছিলেন । কবি নজীর গ্রাম বাংলার প্রতিভাবান কবি ছিলেন। কবিকে ঢাকাতে আসার জন্য আমি নিজেই উৎসাহ দিয়েছি কিন্তু তিনি বার বার বলেছেন আমি গ্রাম বাংলার কবি, গ্রাম বাংলার মানুষের সাথে আমার বসবাস আমি যে মাটিকে ভালবাসি সেটাকে ছেড়ে আমি ঢাকাতে যেতে পারবো না।

কবি নজীর শুধু কবিতা চর্চাই করেননি পাশাপশি তিনি ছিলেন একজন মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন আদর্শ মানুষ ছিলেন। তিনি সমাজের অন্যায় অবিচার অসতত্যের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদী ছিলেন। তিনি একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তার লেখার অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবসময় পরিলক্ষিত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল এই কবি সমসময় মানুষের কল্যাণে কথা ভেবেছেন। কবি নজীরের কর্ম ও চেতনাগুলোকে আমাদের আরও জানতে হবে। বর্তমানে এই মুুহূর্তে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো যেভাবে হায়েনার মত আমাদের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে তাতে কবি নজীরের অসাম্প্রদায়িক লেখাগুলো অনেক কার্যকরী এবং উপযোগী হবে বলে আমি বিশ্বাস করি‘।

অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্যে কবি নাজমুল হক নজীরের জীবনের বিভিন্ন কর্মকা- ও অবদানের কথা উঠে এসেছে। অনেকেই তাঁকে দক্ষিণ বাংলার মফস্বল সাংবাদিকতার পতিকৃত বলে আখ্যায়িত করেন।

নাজমুল হক নজীর একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক।বাঙ্গালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী এই কবি তাঁর কবিতায় খোঁদাই করেছেন মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাঁথা এবং তাঁর “কালো জোছনার এক চুমুক” কব্যগ্রন্থে তুলে ধরেছেন যুদ্ধদিনের বর্ণনা আর এ কাব্যগ্রন্থের বেশিভাগ কবিতায় রয়েছে১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা।কবিতায় সহজ প্রকাশভঙ্গি নাজমুল হক নজীর এর কবিতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও কবি নজীর একাডেমীর সভাপতি এস এম মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন কবি মিলন সব্যসাচী, আরএমজিবিডি নিউজ২৪.কম সম্পাদক কবির আহম্মেদ লিনজুসহ অনেকই ।

(এসএস/এএস/নভেম্বর ২৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test