E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোল্ডেন গ্লাভস এর দাবিদার যারা

২০১৪ জুলাই ০৩ ১৯:৪৪:৩৭
গোল্ডেন গ্লাভস এর দাবিদার যারা

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : একে একে ফুটবল বিশ্বকাপে শেষ হলো প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের খেলা। সামনে এখন শেষ আটের লড়াই। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত গোলের উৎসব চলছে, তবে তার চেয়ে বিস্ময়করভাবে চলছে সেভের প্রতিযোগিতাও। কে জানে, হয়তো গোপন বৈঠক করে সব গোলরক্ষকই পণ করেছিলেন- ‘এবারের বিশ্বকাপ হবে আমাদের’।

বিশ্বকাপে ৬৪ ম্যাচের এই ফরম্যাট প্রথম দেখা যায় ফ্রান্সে (১৯৯৮)। বেশি ম্যাচ মানে বেশি গোল। বেশি গোল মানে গোলরক্ষকদের গঞ্জনা। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত গোলরক্ষকদের জয় জয়কার চলছে। তাদের ঔজ্জ্বল্যে বড্ড ম্লান দেখাচ্ছে নামজাদা সব উইঙ্গার আর স্ট্রাইকারদের!

ব্রাজিল বিশ্বকাপ যত সামনে এগুচ্ছে তত মনে হচ্ছে- এটা গোলের বিশ্বকাপ নয়, গোলরক্ষকদের বিশ্বকাপ! এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়। প্রতি ম্যাচই যেন তাদের অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যের প্রদর্শনী মঞ্চ।

এখন হিসাব-নিকাশ চলছে সেরাদের সেরা কে হবেন? কার হাতে উঠবে গোল্ডেন গ্লাভস?

এ পর্যায়ে দেখে নেওয়া যাক কে কে গোল্ডেন গ্লাভস জয়ের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন।

ম্যানুয়েল নেউয়ার (জার্মানি)

বায়ার্ন মিউনিখের এই গোলরক্ষক ব্রাজিল বিশ্বকাপেও দেখিয়ে চলেছেন তার বহুমাত্রিক নৈপুণ্যের ঝলক। তেজী আলজেরিয়ানদের বিপক্ষে তিনি ছিলেন যথার্থ ত্রাতার ভূমিকায়। তারপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেউয়ার এখন মহাতারকা। বিশ্বস্ত প্রহরীর মত বিপক্ষের একের পর এক আক্রমণ সামলেছেন। লাফিয়ে লাফিয়ে তার উঁচু শট আটকানোও যথেষ্ট হৃদয়গ্রাহী।

কেলর নাভাস (কোস্টারিকা)

ফুটবল বিশেষজ্ঞরা ব্রাজিল বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় বিস্ময় মানছেন কোস্টারিকাকে। আর কোস্টারিকার বিস্ময় তাদের গোলরক্ষক নাভাস। তার ‍অসাধারণ নৈপুণ্যেই মধ্য আমেরিকার এই দেশ ইতিহাস সৃষ্টি করে প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে গেছে। গ্রিসের বিপক্ষে পেনাল্টি শুট আউটের নায়ক ছিলেন এই লেভান্তে গোলরক্ষক। লা’লিগার অবিশ্বাস্য ফর্ম এই মহাযজ্ঞেও বয়ে এনেছেন। এই পারফর্মে যদি বড় কোনো ক্লাবের নজরে পড়ে যান তাহলে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।

জুলিও সিজার (ব্রাজিল)

কিছু ব্যাপার বলে বা শুনে বোঝা যায় না, শুধুমাত্র চোখে দেখার। শেষ ষোলোয় চিলি বনাম ব্রাজিলের পেনাল্টি পর্ব যিনি স্বচক্ষে দেখেছেন, তিনি একমাত্র বুঝতে পারবেন সেদিন সিজার কী কাণ্ড ঘটিয়েছেন! সংবাদ মাধ্যমে আসে, সেদিনের উত্তেজনা সামলাতে না পেরে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান এক ব্রাজিল ভক্ত। অথচ ২০১০ বিশ্বকাপ থেকেই দেশের মানুষের কাছে খলনায়ক তিনি। এদিনই সব ধুয়ে মুছে দেন। নিজের নামটি নতুন করে লেখান সেলেসাওসহ কোটি ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়ে। ম্যাচের পরদিন বিশ্বের হাজারো পত্রিকার মূল হেডলাইন ছিল একটি- ‘ব্রাজিলকে বাঁচালেন সিজার’!

ভিনসেন্ট এনিয়েমা (নাইজেরিয়া)

বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছে তার দল আফ্রিকান সুপার ঈগল নাইজেরিয়া। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে ঠিকই থেকে গেল তার নাম। গ্রুপ পর্ব থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত দু‘জন ‘ক্লিন শিট’ গোলরক্ষকের নাম নিলে ভিনসেন্ট এনিয়েমার নাম নিতে হবে। অসাধারণ সব গোলের আক্রমণ বাঁচিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ফুটবল ভক্তদের হৃদয়ে। লিল্লে ক্লাবের এই গোলরক্ষী শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ফ্রান্সকে ৮০ মিনিট গোল বঞ্চিত রেখেছিলেন। এরপর পল পগবা’র হেড ও একটি আত্মঘাতী গোল শেষ করে দেয় নাইজেরিয়ার বিশ্বকাপ স্বপ্ন।

টিম হাওয়ার্ড (যুক্তরাষ্ট্র)

‘দুটো শব্দ..টিম হাওয়ার্ড#সম্মান’, প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম ‍অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানির টুইটার পোস্ট। দ্বিতীয় পর্বে বেলজিয়ামের কাছে হেরেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় যুক্তরাষ্ট্র। হাওয়ার্ড এমন একজন গোলরক্ষক যার জন্য সম্মান ও প্রশংসা তোলা থাকে বিপক্ষ দলেরও। এদিন সর্বকালের ১৩ সেভের রেকর্ড ভেঙে দুর্দান্ত ১৬টি সেভ করেন তিনি। এভারটন গোলরক্ষককে চলতি বিশ্বকাপে আর দেখা না গেলেও, তার বীরত্বগাঁথা ঠিকই মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফিরবে।

গুইলের্মো ওচোয়া (মেক্সিকো)

সবশেষে আসে মেক্সিকোর ‘গ্রেট ওয়াল’ ওচোয়ার নাম। ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ দিয়ে তুমুল আলোচনায় আসেন এই গোলরক্ষক। ওই ম্যাচের পর রাতারাতি তারকা বনে যান ওচোয়া। এদিন নেইমার-অস্কারদের নিশ্চিত সব গোল বাঁচিয়ে ব্রাজিলকে কার্যত একাই রুখে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ০-০ গোলে ড্র হয় ম্যাচ। বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হিসেবে অবশ্যই উচ্চারিত হবে তার নাম। এমনকি নেইমারের লক্ষভেদী হেড অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যে রুখে দেওয়ায় তার তুলনা চলছে কিংবদন্তি লেভ ইয়াসিন ও গর্ডন বাঙ্কসের সঙ্গে।

(ওএস/পি/জুলাই ০৩,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test