E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাশরাফির মধুর প্রতিশোধ

২০১৯ জানুয়ারি ২৯ ২২:৩৫:২০
মাশরাফির মধুর প্রতিশোধ

স্পোর্টস ডেস্ক: দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে মাত্র ১৩৫ রান করেও মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ ওভারের জাদুতে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে পাঁচ রানের জয় পেয়েছিল রাজশাহী কিংস। দ্বিতীয় দেখাতেও আগে ব্যাট করে রাজশাহী কাছাকাছি সংগ্রহ দাঁড় করালেও, এবার আর ভুল করেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর।

প্রথম ম্যাচে রাজশাহীর কাছে হারের পর সংবাদ সম্মেলন শেষে বের হওয়ার পরে রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি মজা করেই রাজশাহী অধিনায়ক মিরাজকে বলছিলেন, ‘সিলেটে আয়, তোকে দেখছি।’ সিলেটে দুই দলের দেখা না হলেও, চট্টগ্রামে ঠিকই রাজশাহীকে দেখে নিয়েছে মাশরাফির রংপুর।

এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং রিলে রুশোর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে রাজশাহীর করা ১৪১ রানের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ও ৮ বল হাতে রেখেই তাড়া করে ফেলেছে রংপুর। এ জয়ে প্লে-অফে যাওয়ার রাস্তা অনেকটাই পরিস্কার হয়ে গেল ১১ ম্যাচে ৭ জয় পাওয়া রংপুরের। অন্যদিকে সমান ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে চিকন সুতোয় ঝুলে গেল রাজশাহীর প্লে-অফ ভাগ্য।

রান তাড়া করতে নেমে নিজের অফফর্ম ধরে রাখেন ক্যারিবিয়ান দানব ক্রিস গেইল। মেহেদি হাসান মিরাজের বোলিংয়ের বিপক্ষে সুবিধা করতে না পেরে ছক্কা মারতে যান তিনি। কিন্তু ধরা পড়ে যান লংঅফে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে। আউট হওয়ার আগে দুই চারের মারে ১৪ বল খেলে করেন ১০ রান।

দ্বিতীয় উইকেটে দ্রুত রান তোলার চেয়ে উইকেট বাঁচিয়ে খেলার দিকেই বেশি মনোযোগী হন এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং অ্যালেক্স হেলস। দুজন মিলে ৩৫ বলে যোগ করেন ৪১ রান। ইনিংসের নবম ওভারে ১৫ বলে ১৬ রান করে আউট হন হেলস।

এরপরই মূলত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় রুশো-এবি জুটি। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটিতে মাত্র ৪৩ বলে ৭১ রান পায় রংপুর। অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় দলের জয়।

টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন বাঁহাতি রিলে রুশো। ১৬তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৫ চার ও ২ ছক্কার মারে ৪৩ বলে খেলেন ৫৫ রানের ইনিংস। এ ইনিংসের ২৮তম রানটি নেয়ার সময়েই বিপিএল ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন তিনি। ভেঙে দেন ২০১২ সালের আসরে করা আহমেদ শেহজাদের ৪৮৬ রানের রেকর্ড। ম্যাচ শেষের রুশোর সংগ্রহ ৫১৪ রান।

পরের ওভারেই রাজশাহী অধিনায়ক মেহেদি মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডি ভিলিয়ার্সও। তবে আউট হওয়ার আগেই দলের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন তিনি, ১ চার ও ৩ ছক্কার মারে খেলেন ৩৭ রানের ইনিংস।

রুশো-ডি ভিলিয়ার্সের রেখে যাওয়া কাজটা অর্থাৎ তুলির আঁচড়ে শেষ টানটা দেন নাহিদুল ইসলাম এবং মোহাম্মদ মিঠুন। ২ চারের মারে নাহিদুল ১১ এবং মিঠুন অপরাজিত থাকেন ৪ রান করে।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি রাজশাহীর। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান ক্যারিবিয়ান ওপেনার জনসন চার্লস (১২)। পরের ওভারেই আউট হয়ে যান তিন নম্বরে নামা মুমিনুল হকও (৪)।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৪ রান যোগ করেন ওপেনার সৌম্য সরকার এবং লরি ইভানস। ১৬ বল থেকে ১৪ রান করে দলীয় ৬২ রানের মাথায় ফেরেন সৌম্য। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক মিরাজ। দারুণ এক চারের মারে নিজের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো করেন তিনি।

কিন্তু ইনিংসের দশম ওভারে ৭২ রানের মাথায় দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে ছক্কা মারতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে দলের বিপদ বাড়িয়ে দেন তিনি। তখন দলের পুরো দায়িত্ব বর্তায় দুই বিদেশী লরি ইভানস ও ক্রিশ্চিয়ান জঙ্কারের কাঁধে।

দারুণ খেলতে থাকা ইভানস আউট হন ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে, নাহিদুল ইসলামের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হয়ে। আউট হওয়ার আগে ৫ চারের মারে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন তিনি। এরপর জঙ্কারও ১ চার ও ছক্কার মারে ১৬ রান করে ফিরে গেলেই মূলত মোড়ক লাগে রাজশাহীর ইনিংসে।

সপ্তম উইকেট জুটিতে ৪০ রান যোগ করে দলের সংগ্রহকে ১৩৬ পর্যন্ত নিয়ে যান ফজলে রাব্বি এবং কাইস আহমেদ। ইনিংসের শেষ ওভারে অ্যালেক্স হেলসের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ১৮ রান করে ফেরেন ফজলে রাব্বি। ঠিক পরের বলেই ২২ রান করে আউট হন কাইস আহমেদ।

ফরহাদ রেজার হ্যাটট্রিক বল মোকাবিলা করতে নামেন মোস্তাফিজুর রহমান। তবে উইকেট ক্রসওভার করায় সে বল খেলেন আরাফাত সানি। এক রান নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা শেষ করে দেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে চার মেরে দলের সংগ্রহটা ১৪১ রানে নিয়ে ঠেকান মোস্তাফিজ।

রংপুরের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন ফরহাদ রেজা। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন নাজমুল ইসলাম অপু এবং শহীদুল ইসলাম।

(ওএস/পিএস/জানুয়ারী ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test