E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ক্যারিবীয়দের শর্ট বল মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা : তামিম

২০১৯ জুন ১৫ ২১:১৮:১২
ক্যারিবীয়দের শর্ট বল মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা : তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক: ৪৮ ঘণ্টা পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলা। যে দলে শুধু ক্রিস গেইলের মতো ভয়ঙ্কর আর বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানই নয়; আছেন ড্যারেন ব্রাভো, শাই হোপ, নিকোলাস পুরান আর শিমরন হেটমেয়ারের মতো কমপ্লিট ব্যাটসম্যান এবং এভিন লুইস আন্দ্রে রাসেলের মতো আক্রমণাত্মক উইলোবাজ।

সেটাই শেষ কথা নয়। দলটির ফাস্ট বোলিং লাইন আপ আরও ভয়ঙ্কর। আছেন তিন তিনজন ফাস্টবোলার- ওশানে থমাস, শেলডন কট্রেল আর কেমার রোচ। সাথে জেসন হোল্ডার আর আন্দ্রে রাসেলের মতো ফাস্ট মিডিয়াম বোলার। সব মিলে পাঁচ পাঁচজন পেসার।

এরকম এক দলের সাথে খেলার আগে শুধু কি ঘাম ঝরানো আর বাড়তি সময় নিয়ে প্র্যাকটিসটাই মূল? নিশ্চয়ই না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন আসলে কেমন দল? দলটির ফাস্টবোলারদের বোলিং তোড়টা কেমন? তারা কি শুধু গতি নির্ভর, নাকি সুইং এবং ভেরিয়েশনটাও আছে?

সাথে শর্ট অফ লেন্থ থেকে বল ঠুকে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের সাহস, শক্তি, টেকনিকের পরীক্ষাও নিতে পারেন? ডেড ওভারে ইয়র্কার আর ওয়াইড ইয়র্কার ছোড়ার সামর্থ্য কতটা? আজকের অনুশীলনে কি সেই বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে? নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে, তাই না?

তাহলে শুনুন, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্টবোলাররা প্রচুর শর্ট অফ লেন্থ ডেলিভারিতে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বেসামাল করতে চান। বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেন। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে অস্তত্বিতে রাখার চিন্তায় প্রচুর শর্ট ডেলিভারি ছুড়েন। গত দুই ম্যাচে সেটা দেখা গেছে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা বরাবরই শর্ট বলকে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।

এই বোধ, উপলব্ধি আর অনুভব থেকেই আজ (শনিবার) খোলা আকাশের নিচে সমারসেটের সেন্টার উইকেটে স্থানীয় নেট বোলাররা সমানে শর্ট বল করলেন তামিম, সৌম্য, মুশফিক ও সাকিবদের। এবং সেই শর্ট বলের মোকাবিলা করতে গিয়েই আসলে ডান হাতের গ্লাভসে ঢাকা কব্জির নিচে বল লেগেছে মুশফিকুর রহিমের।

আজ নেট শেষে দেশের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে এসে তামিম ইকবাল প্রথমেই আজকের নেটের ধরন এবং বাংলাদেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিলেন।

তামিম অনেক কথার ভীড়ে জানিয়ে দিলেন-‘সাধারণত আমরা প্রতিপক্ষর শক্তি-সামর্থ্য এবং ব্যাটিং ও বোলিংয়ের ধরন, এপ্রোচ-এপ্লিকেশন দেখে নিজেদের গেম প্ল্যান করি। শেষ মুহূর্তের প্র্যাকটিসটাও হয় তেমন। সেটা এই কারণে হয় যে, যাতে আমরা মাঠে নেমে বিপাকে না পড়ি। প্রতিপক্ষর বোলিংয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় না হয়ে পড়ি। তাই নিজেদের সেভাবে তৈরির চেষ্টা থাকে নেটে।’

নেটে প্র্যাকটিসের ধরন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তামিম জানালেন, ‘বেশির ভাগ দলই আমাদের বিপক্ষে শুরুতে শর্ট বল বেশি করে। প্রথম ১০-১৫ ওভারে আমাদের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে গিয়ে প্রচুর খাটো লেন্থে বল ফেলে ওঠানোর চেষ্টা করে। আমরা দেখেছি এবং অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্টবোলাররা আমাদের বেকায়দায় ফেলতে বেশির ভাগ সময় শর্ট বল করেন। তাই আমরা নেটে শর্ট বলের বিপক্ষেই ব্যাট করেছি বেশি করে।’

প্রতিপক্ষ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেমন ? এ প্রশ্নর জবাবে তামিম বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ও বোলিং সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি বিশ্বকাপে তারা খেলছে ভিন্ন লক্ষ্য ও পরিকল্পনায়। তাদের প্ল্যানিংটা এবার একটু ভিন্ন মনে হচ্ছে। কাজেই আমরা আয়ারল্যান্ডের মাটিতে যেমন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেয়েছি, দেখেছি, এবারের বিশ্বকাপের ওয়েস্ট ইন্ডিজ এমন নয়। খানিক ভিন্ন। বিশেষ করে বোলাররা শর্ট বল করছেন বেশি। খাটো লেন্থে দ্রুত গতির ওপর বল ফেলে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছেন ক্যারিবীয় ফাস্টবোলাররা।’

তামিম যোগ করেন, ‘আগের দুই ম্যাচে খুব বেশি এমন বল করেছে ক্যারিবীয়রা। আমাদের ধারণা, আমাদের বিপক্ষেও শর্ট বলই হবে তাদের মূল অস্ত্র। আমরা যদি সেই শর্ট বল গুলো ঠিক মত খেলতে পারি। খাটো বলে ভড়কে না গিয়ে শরীর ও উইকেট বাঁচিয়ে স্বচ্ছন্দে খেলে ফেলতে পারি, তাহলে রান করার সুযোগ মিলবে। কারন শর্ট বলের পাশাপাশি ক্যারিবীয়ানরা প্রচুর আলগা বলও করেন। যাতে রান করা যায়।’

বলার অপেক্ষা রাখেনা, গতি নির্ভর ক্যারিবীয়রা শর্ট বলের পাশাপাশি কখনো ওপরে হাফ ভলি, ওভার পিচ, আবার কোন সময় অফস্ট্যাম্পের বাইরে প্রচুর জায়গা দেন ব্যাটসম্যানকে। তামিম সেগুলোর কথাই বুঝিয়েছেন। শর্ট বলগুলো থেকে নিরাপদ থাকতে পারলে ঐ সব আলগা ডেলিভারি কাজে লাগানোর পর্যাপ্ত সুযোগ থাকবে।

এখন প্রশ্ন একটাই-কেমার রোচ আর ওশানে থমাসদের ছোড়া সেই শর্ট ডেলিভারির বিপক্ষে তামিম, সৌম্য, সাকিব ও মুশফিকরা নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন?

(ওএস/এএস/১৫ জুন, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test