E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাপুয়া নিউগিনিকে ১৮২ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

২০২১ অক্টোবর ২১ ১৮:০৩:৫০
পাপুয়া নিউগিনিকে ১৮২ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : প্রত্যাশা মতোই ব্যাট করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। পাপুয়া নিউগিনির মত দলকে পেয়ে কাংখিত রানই তুলেছেন স্কোরবোর্ডে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান। জয়ের জন্য পাপুয়া নিউগিনিকে করতে হবে ১৮২ রান।

বাংলাদেশের এই বিশাল রানে সবচেয়ে বড় অবধান অধিানয়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ২৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়া ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব আল হাসান। শেষ মুহূর্তে ৬ বলে ১৯ রান করেন সাইফউদ্দিন।

পাপুয়া নিউগিনির সবচেয়ে বড় শক্তি নাকি ফিল্ডিং! যদিও আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরুতে তাদেরকে দেখা গেছে বেশ কিছু মিস ফিল্ডিং করতে। কিন্তু একটি ক্যাচও ছাড়তে দেখা যায়নি দলটির ফিল্ডারদের। দু’তিনটি কঠিন ক্যাচও তালুবন্দী করে নিয়েছেন তারা। আইসিসি সহযোগি একটি দলের এমন উন্নতমানের ফিল্ডিং রীতিমত বিস্ময়কর।

বাংলাদেশের সাতটি উইকেট নিয়েছে পিএনজি বোলাররা। যার সবগুলোই ক্যাচ আউট। ব্যাটসম্যানরা আকাশে বল তুলেছেন আর যেভাবেই হোক, সেগুলো তালুবন্দী করেছেন দেশটির ফিল্ডাররা।

মাত্র তিনরানের ব্যবধানে জিতলেই সুপার টুয়েলভে খেলা নিশ্চিত করে ফেলবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে আসা পাপুয়া নিউগিনি। র‌্যাংকিংয়ে যাদের অবস্থান ১৬তম স্থানে। বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ।

পরিস্থিতি যখন এমন, তখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনে আত্মবিশ্বাস কিছুটা বেশিই। যার প্রমাণ দেখা গেলো শুরুতেই। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বলেই কি না ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারতে গিয়ে মাঠেই ধরা পড়ে যান ওপেনার নাইম শেখ।

টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট করতে নামার পর পাপুয়া নিউগিনির উদ্বোধনী বোলার কাবুয়া মোরেয়ার প্রথম বলেই খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কিপলিন দোরিগার হাতে প্রায় ক্যাচ দিয়ে ফেলেছিলেন নাইম; কিন্তু ভাগ্য ভালো, বলটা উইকেটরক্ষকের হাতে যাওয়ার আগেই মাটিতে পড়ে যায়।

কিন্তু পরের বলেই বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে দেন নাইম। পাপুয়া নিউগিনির বোলার কাবুয়া মোরেয়ার লেগ স্ট্যাম্পের ওপর করা হাফভলি বলটিকে ডিপ স্কয়ার লেগে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন।

সেসে বাউর হাতে গিয়ে পৌঁছায় সেই বলটি। বাতাসে ভেসে আসা বলটি তালুবন্দী করতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি বাউকে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে নিজের এবং দলীয় কোনো রান তোলার আগেই বিদায় নিলেন নাইম শেখ।

প্রথম দুই ওভারে পাওয়ার প্লে বলতে গেলে কাজেই লাগাতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল মাত্র ২৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ২ উইকেট হারিয়ে ২৯ রান তোলে টাইগাররা।

সে হিসেবে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আজ প্রথম পাওয়ার প্লেতে ভালো রান পেয়েছে বাংলাদেশ। নাইম শেখের উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪৫ রান তুলেছে টাইগাররা। নাইম আউট হওয়ার পর জুটি বাধেন সাকিব এবং লিটন। তাদের ব্যাটেই উঠলো সবগুলো রান।

কিন্তু সাকিব আর লিটন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়ে ওঠার পরই নেমে এলো বিপদ। পাপুয়া নিউগিনির অধিনায়ক আসাদ ভালা নিজেই চলে আসেন বোলিংয়ে। তিনি ডান হাতি অফ স্পিনার। স্পিন আসতেই বিপদ ডেকে আনলেন লিটন দাস।

আসাদ ভালার ওভারের প্রথম বল মোকাবেলা করতে গিয়ে স্লগ সুইপ খেলেন লিটন। বল উঠে যায় ডিপ মিডউইকেটে। ফিল্ডার ছিলেন সেই সেসে বাউ, যিনি নাইমের ক্যাচও ধরেছিলেন। ২৩ বলে ২৯ রান করে আউট হয়ে যান লিটন। বাউন্ডারি এবং ছক্কা মেরেছিলেন ১টি করে।

এরপর মাঠে নেমে বেশিক্ষণ টিকতেই পারলেন না মুশফিকুর রহিম। সিমন আতাইয়ের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে খেললেন মুশফিক। বলটি খুব বেশি উপরেও উঠলো না। কিন্তু সোজা চলে গেলো ফিল্ডারের হাতে। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বলটি তালুবন্দী করে ফেললেন হিরি হিরি। ৮ বলে মাত্র ৫ রান করে ফিরে গেলেন মুশফিক।

শুধু মুশফিকুর রহিম কেন, সাকিব আল হাসানের ক্যাচ যেভাবে ধরলেন চার্লস আমিনি, তাকে রীতিমত বিস্ময়কর বলাই স্রেয়। আসাদ ভালার বল লং অনে তুলে খেললেন সাকিব। দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমিনি যেভাবে ক্যাচটি লুফে নিলেন, তা রীতিমত বিস্ময়কর। ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হলেন সাকিব। ৩টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে।

ক্যাচ ওঠার পর সেগুলো থেকে যেন কোনোভাবেই নিস্তার নেই পাপুয়া নিউগিনির ফিল্ডারদের হাত থেকে। এবার ক্যাচের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ড্যামিয়েন রাভুর ফুলটস বল লেগ সাইডে খেলেছিলেন রিয়াদ। বল উপরে উঠলেও থেকে যায় মাঠে। ক্যাচ ধরেন চাদ সপার। ২৮ বলে ৫০ রান করে ফিরে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৩টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কার মার মারেন তিনি।

রিয়াদ ফেরার পর মাঠে নামেন নুরুল হাসান সোহান। প্রথম দুই ম্যাচের মত এই ম্যাচেও দারুণ ব্যর্থ সোহান। রানের খাতাই খুলতে পারেননি। রাবুর বলে শর্ট থার্ডম্যানে লোপ্পা ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ক্যাচটি ধরেন সেসে বাউ। ১৫৩ রানের মাথায় বাংলাদেশের পড়লো ৬ষ্ঠ উইকেট।

সোহান ফেরার পর যেন তর সইছিল না আফিফ হোসেনেরও তিনিও ক্যাচ তুলে দিলেন। আবারও দুর্দান্ত ক্যাচ ধরলেন পাপুয়া নিউগিনির ফিল্ডার মোরেয়া। ১৪ বলে ২১ রান করা আফিফ হোসেনকে ফিরিয়ে দিলেন সেই ক্যাচ দিয়ে।

আফিফ আউট হওয়ার পর মাঠে নেমে ছোটখাট ঝড় তোলেন সাইফউদ্দিন। ৬ বলে ১৯ রানে থাকেন অপরাজিত। ১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারেন ২টি। শেখ মেহেদী ৩ বলে অপরাজিত থাকেন ২ রানে।

কাবুয়া মোরেয়া, ড্যামিয়েন রাভু এবং আসাদ ভালা নেন ২টি করে উইকেট। সিমন আতাই নেন ১টি উইকেট।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test