E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অসত্য দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন চ্যাপেল

২০১৪ নভেম্বর ০৬ ১৯:১৮:১১
অসত্য দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করছেন চ্যাপেল

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : শচীন রমেশ টেন্ডুলকার ২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এতটুকু কলঙ্কের দাগ লাগেনি  কোনোভাবেই জড়াননি বিতর্কে। ক্রিকেট ছেড়েছেন গত নভেম্বরে। এই নভেম্বরে প্রকাশ হলো টেন্ডুলকারের আত্মজীবনীমূলক বই ‘প্লেয়িং ইট মাই ওয়ে’।  যেখানে তিনি অনেক অজানা তথ্যই দিয়েছেন।  এতদিন সৌরভ গাঙ্গুলি গ্রেগ চ্যাপেলকে নিয়ে সরব থাকলেও চুপচাপ ছিলেন টেন্ডুলকার। কিন্তু নিজের লেখা বইয়ে চ্যাপেলকে একেবারে ধুয়ে দিয়েছেন তিনি। আর ভারতীয় ক্রিকেট ঈশ্বরের দাবি, তার বইতে তাই উঠে এসেছে যার সবই সত্য এবং যেগুলোর প্রমাণ আছে।

বুধবার মুম্বাইয়ে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট তারকাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন টেন্ডুলকার। যেখানে ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষনদের মতো ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরা। শুধু প্রাক্তনরাই নন, গোটা ভারতের অন্তত পঞ্চাশ জন সাংবাদিককে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যারা সবসময়ই টেন্ডুলকারের ম্যাচ কভার করেছেন। বইটি প্রকাশের আগেই এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে দেখিয়েছেন টেন্ডুলকার। উত্তর দিয়েছেন সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের। ক্রিকেট খেলার সময় কোন বিতর্কে জড়াননি, হঠাৎ বইতে এমন কিছু লিখলেন যা নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে টেন্ডুলকারের উত্তর,‘ যখন ক্রিকেট খেলতাম তখন ক্রিকেটেই মন দিতে চেয়েছি। আমার এবং আমার পরিবারের সিদ্ধান্ত ছিল, যা-ই ঘটুক না কেন আমি কোন প্ররোচনায় পা দেব না। ওটা আমার মনকে ক্রিকেট থেকে বিক্ষিপ্তই করবে। রান করতে সমস্যা হবে। এটা করে লাভ কী? কিন্তু এখন আমি প্রাক্তনদের দলে, ক্রিকেট ব্যাট আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে তখন অবিতর্কিত থাকার কোন দায় নেই আমার। আমি যা সত্য বলে মনে করি তা অসঙ্কোচে বলতে পারি।’

টেন্ডুলকার তার বইতে চ্যাপেলকে এক হাতে নিয়েছেন। যেটা মানতে পারেননি চ্যাপেল। উল্টো টেন্ডুলকারের লেখাকে অসত্য বলেছেন তিনি। এদিন এ প্রসঙ্গে মাস্টার ব্লাস্টারের সাফ জবাব, ‘আমি যা সত্য তাই লিখেছি। উনি যা বলার বলেছেন। এটুকু বলতে পারি উনি যখন ভারতের অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব আমাকে দেন তখন আমার পাশে ছিল অঞ্জলি। চ্যাপেলের কথা শুনে আমার মতো সেও অবাক হয়ে যায়।’ চ্যাপেল শুধু সৌরভের সঙ্গেই নয়, খারাপ ব্যবহার করতো টেন্ডুলকারের সঙ্গেও। তার সময়ই দুটি সফরে বাদ পড়েন লিটল মাস্টার। কিন্তু কেন তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতো এমন প্রশ্নে টেন্ডুলকার বলেন, ‘আমার কোন ধারণা নেই। আমি যদি ওর মনটা পড়তে পারতাম তাহলে ভাল হতো। আমি কোন দিনই ওকে বুঝতে পারিনি। ও দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটি সফরে আমি দলেও ছিলাম না। যখন দলে ফেরত আসি, বাসে করে আমরা মোহালি থেকে দিল্লি যাচ্ছিলাম। বোধহয় চ্যালেঞ্জার্স খেলে। বাসে অনেকে ছিল। যুবরাজ, জহির, ভাজ্জি। ওরা বলতে শুরু করলো গ্রেগ এই করছে, সেই করছে। আমি তখন ওদের বুঝিয়েছিলাম, একজন এত বড় ক্রিকেটার, তা-ও বিদেশী, তিনি আমাদের এখানে এসেছেন। তাকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আরেকটু সময় আমাদের দেওয়া উচিৎ। পরে অবশ্য বুঝেছি, ওরা সেদিন ঠিকই বলেছিল।’

২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের ভরাডুবির পর টেন্ডুলকারকে ক্রিকেট ছাড়তে বলেছিলেন গ্রেগের ভাই ইয়ান চ্যাপেল। তিনি তাকে কটাক্ষ করে লিখেছিলেন, টেন্ডুলকার নয় এন্ডুলকার। যেটা সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের মনে দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল। অবশ্য ইয়ানকে ছেড়ে দেননি টেন্ডুলকারও। তিনি এর প্রতিশোধ নেন ২০১১-তে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে। টেন্ডুলকারের ভাষায়,‘ ইয়ান চ্যাপেলকে আমি ধরেছিলাম ডারবানে। মনে হয়েছিল সবকিছু ছেড়ে দেওয়া যায় না। ডারবানের হেলথ ক্লাব থেকে বের হচ্ছি। উনি ঢুকছেন। সেবার আমি আইসিসির ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছিলাম। দুবছর ধরে প্রচুর রান করে যাচ্ছি। ইয়ান আমাকে জিম থেকে বেরোতে দেখেই বললেন, এবার বুঝেছি এটাই তাহলে সাফল্যর উৎস। নিজেকে তুমি বদলেছ। আমি বললাম, এতটুকু বদলাইনি। যা ছিল তাই আছে খেলা। বদলান আপনার মতো লোকেরা। আজ এদিক তো কাল ও দিকে। আয়নার সামনে আপনার দাড়ানো উচিৎ আর নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিৎ, আমি কি ঘন ঘন রং বদলাই।’

(ওএস/পি/অক্টোবর ০৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test