E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হিউজ শেষ মেসেজে বান্ধবীকে যা লিখেছিলেন

২০১৪ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:৫৭:০৮
হিউজ শেষ মেসেজে বান্ধবীকে যা লিখেছিলেন

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : তিন বছর আগে সিডনির এক পানশালায় গিয়েছিলেন অষ্ট্রেলিয়ার তরুণ ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজ। সেখানে এক তরুণীকে তার ভালো লেগে যায়। তরুণীর সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করেন। সফলও হন। পরিচয় পর্বে নিজেকে একজন ব্যাংকার বলে পরিচয় দেন ফিলিপ হিউজ। তরুণীটি আর কেউ নন, হিউজের খুব কাছের বান্ধবী মেগান সিম্পসন। মেগান তখনও জানতেন না হিউজ আসলে একজন ক্রিকেটার। পরে অন্যদের কাছ থেকে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। মারা যাওয়ার দুই সপ্তাহ আগে হিউজ তাকে শেষ টেক্সট মেসেজটি পাঠিয়েছিলেন। যেখানে লেখা ছিল, ‘লাভ ইউ... মিস ইউ... লাভ ইউ... মিস ইউ।’

অবশ্য হিউজ যখন মেসেজটি পাঠিয়েছিল তখন মেগান অবকাশযাপনে হাওয়াই দ্বীপে ছিলেন। সেখানে বসেই হিউজের মৃত্যুর খবর শুনতে পান। মেগান সিম্পসন অংশ নিয়েছিলেন তার বন্ধুর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। সেখানেই অশ্রুসজল নয়নে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। ফিলিপ হিউজ তার বান্ধবী মেগানের সঙ্গে রাত জেগে ফোনে কথা বলতেন। কফি শপ ও শপিংয়ে নিয়ে যেতেন। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেন। সময় কাটাতেন। প্রতি সপ্তাহেই সাক্ষাতের জন্য মেগানকে পীড়াপিড়ি করতেন। মেগান বলেন, ‘সিডনিতে তার একটি পছন্দের পানশালায় আমাদের পরিচয় হয়েছিল। সে আমার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছিল। প্রথম সাক্ষাতে সে নিজেকে ব্যাংকার বলে পরিচয় দিয়েছিল। তখন আমি সত্যিই জানতাম না হিউজ আসলে কি করত।’


তবে তাদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বের বাইরে আর কিছু ছিল না, ‘আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বাইরে আর কিছু ছিল না। আমরা একে অপরকে কখনো আঘাত দিতে চাইনি। চাইনি নতুন করে কিছু শুরু করতে। হিউজ আমাকে বলত তার জীবনে আমাকে ভীষণভাবে চায়। চিরদিন যাতে তার বন্ধু হয়ে থাকি।’ মেগান আরো জানান, হিউজ অন্যান্যদের মতো ছিল না। তার কোনো ফেসবুক কিংবা ইনস্ট্রাগ্রাম ছিল না। তার সঙ্গে কখনোই আমার ফেসবুকে কথা হত না। সে ছিল অনেকটা বাস্তবধর্মী। সরাসরি সাক্ষাত করতে চাইত। কফি শপে ঘুরতে যেতে চাইত। আমাদের বন্ধুত্বকে সময় দিতে চাইত। আমি যত দূরেই থাকতাম না কেন আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করত। আমার জন্মদিনে কখনো ফুল পাঠাতে ভুলত না।


মেগান বলেন, ‘সে খুব চালাক ছিল। বেশ মজারও ছিল। মানুষকে খুব হাসাতে পারত। আমার প্রতি তার আগ্রহ ছিল এবং আমাদের বন্ধুত্বকে সে খুব মর্যাদা দিত। আমি আসলে এখনো জানি না যে তার মতো একজন বন্ধু পেয়ে আমি কতোটা ভাগ্যবতী ছিলাম। অবশ্য সেও আমার মধ্যে বিশেষ কিছু দেখেছে।’ হিউজের মধ্যে কোনো উচ্চাকাঙ্খা ছিল না। সে কখনো উচ্চাভিলাসি চিন্তাভাবনা করত না। ক্রিকেট ছেড়ে সে ম্যাক্সভিলে তাদের গরুর ফার্মে ফিরে আসতে চাইত। ক্রিকেটকে সে যেমন ভালোবাসত ঠিক তেমনই ভালোবাসত তাদের ফার্মের গরুগুলোকে। মেগানকে সে বলত ভবিষ্যতে একদিন তুমি তোমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে আমার এই ফার্মে আমাকে দেখতে এসো। হিউজ তার বাবা-মাকে ভীষণ ভালোবাসত।

এ বিষয়ে মেগান সিম্পসন বলেন, ‘সে তার বাবা-মাকে কতোটা মিস করে সেটা আমার সঙ্গে শেয়ার করত। আমি কখনো তার মতো কাউকে দেখিনি যারা তার বাবা-মাকে এতোটা ভালোবাসে। সে দিনে ৫বার তার বাবাকে ফোন দিত। তার জীবনের লক্ষ্য ছিল ম্যাক্সভিলে ফিরে আসা। সে তার জীবনে ভালো একজন মেয়েকে চাচ্ছিল। তার সন্তানরাও তার সঙ্গে ম্যাক্সভিলের ফার্মে বড় হবে সেটা চাইত। তার সন্তানেরা ক্রিকেট খেলবে কি, খেলবে না সে বিষয়ে কোনো মাথা ব্যাথা ছিল না। তাদের পরিবারের মতোই একটা পরিবার সে চাইত।’ ‘আমি তাকে মজা করে বলতাম একদিন আমার সন্তানেরা আঙ্কেল ফিলিপকে ও তার গরুগুলো দেখতে আসবে। সে একজন অসি ক্রিকেটার ছিল। সে একজন ম্যাক্সভিলের কৃষকও ছিল। কিন্তু আমার কাছে? আমার কাছে সে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু’ যোগ করেন মেগান সিম্পসন।

(ওএস/পি/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test