E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিশ্ব-মুকুট হারালো ভারত, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

২০১৫ মার্চ ২৬ ১৭:২১:০১
বিশ্ব-মুকুট হারালো ভারত, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : টানা তিনটি বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়াকে গতবার কোয়ার্টার-ফাইনালে বিদায় করেছিল ভারত। সেই আসরের শিরোপা জেতা দলটিকে এবার সেমি-ফাইনালে থেকে ফেরত পাঠিয়েছে মাইকেল ক্লার্করা। স্টিভেন স্মিথের শতকে ৯৫ রানে জিতে সপ্তমবারের মতো ফাইনালে পৌঁছেছে অস্ট্রেলিয়া।

রবিবার একাদশ আসরের ফাইনালে বিশ্বকাপের আরেক আয়োজক নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে চারবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ ও অ্যারন ফিঞ্চ চমৎকার সূচনা এনে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। ভালো শুরুর স্বস্তি হারাতে বসেছিল সহ-আয়োজকরা। ১৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপেই পড়েছিল তারা। তবে শেষ দিকে রানের গতি বাড়িয়ে ৭ উইকেটে ৩২৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ফেভারিটরা। বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো দলকে অলআউট করতে ব্যর্থ হল ভারত।

বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে কখনো না হারা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বড় জুটি দরকার ছিল ভারতের। দুটি সম্ভাবনাময় জুটি আশা জাগালেও সেগুলো খুব একটা বড় হয়নি। তাই জেতা হয়নি তাদের, ৪৬ ওভার ৫ বলে ২৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।

ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো তিনশ’ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিল ভারত। ভাগ্যও এই দুই ব্যাটসম্যানের সঙ্গেই ছিল। শূন্য রানে রোহিত ও ৫ রানে ধাওয়ান জীবন পান।

সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন রোহিত-ধাওয়ান। তবে খুব একটা সফল হননি তারা। ধাওয়ান জস হেইজেলউডের শিকারে পরিণত হলে ভাঙে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি।

অফস্টাম্পের বাইরের বল দিয়ে বিরাট কোহলিকে শুরু থেকেই অস্বস্তিতে রাখে স্বাগতিকরা। মিচেল জনসনের একটি শর্ট বল পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ের গড়বড় করে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। পরের ওভারে রোহিতকে বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নেন জনসন।

ভারতের বিপদ আরো বাড়ায় সুরেশ রায়নার দ্রুত বিদায়। মাত্র ৩০ রানের মধ্যে ধাওয়ান, কোহলি, রোহিত ও রায়নার বিদায়ে চালকের আসনে বসে অস্ট্রেলিয়া।

অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথে রাখার চেষ্টা করেন ধোনি। ফিরেই তাদের ৭৭ বল স্থায়ী জুটি ভাঙেন মিচেল স্ট্যার্ক।

রাহানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে হ্যাডিনের গ্লাভসে বল জমা পড়লে জোরালো আবেদন করেন স্বাগতিকরা। আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আবেদনে সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় স্বাগতিকরা; তাতে সিদ্ধান্ত পাল্টে রাহানেকে আউট ঘোষণা করেন তিনি।

নেমেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করা রবিন্দ্র জাদেজার রান আউটের পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন ধোনি। তবে তার চেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি। ৬৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংসটি শেষ হয় রান আউট হয়ে।

পরপর দুই বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মোহিত শর্মাকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান জেমস ফকনার। তার হ্যাটট্রিক ফিরিয়ে দেয়া উমেশ যাদব পরের ওভারেই বোল্ড হলে ভারতের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩২৮ রান করে অস্ট্রেলিয়া।

শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। উমেশ যাদবের বলে বিরাট কোহলির ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান ডেভিড ওয়ার্নার।

দ্বিতীয় উইকেটে স্মিথ ও অ্যারন ফিঞ্চের দৃঢ়তা ভরা ব্যাটিংয়ে প্রতিরোধ গড়ে অস্ট্রেলিয়া। শতকে পৌঁছে স্মিথের বিদায়ে ভাঙে তাদের ১৮৬ বল স্থায়ী ১৮২ রানের জুটি।

৯০ রান থেকে শতকে পৌঁছাতে মাত্র দুই বল খেলেন স্মিথ। মোহাম্মদ সামির বলে ছক্কা ও চার হাকিয়ে নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান তিনি। যাদবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়া স্মিথের (১০৫) ৯৩ বলের ইনিংসটি ১১টি চার ও ২টি ছক্কা সমৃদ্ধ।

ক্রিজে এসেই রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তবে নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি।

এক সময়ে ২ উইকেটে ২৩২ রানে পৌঁছে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে হঠাৎ করেই ছন্দ পতন ঘটে। এরপর ২৮ বলে ১৬ রান যোগ করতেই ম্যাক্সওয়েল, ফিঞ্চ ও অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বিশ্বকাপের ফেভারিটরা। বিপজ্জনক ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে যাদবের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ফিঞ্চ (৮১)। তার ১১৬ বলের ইনিংসটি সাজানো ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় গড়া। রান বাড়ানোর চাপে ফিরে যান ক্লার্কও। মোহিত শর্মার বাজে একটি বলে পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে রোহিত শর্মার ক্যাচে পরিণত হন তিনি।

নিয়ন্ত্রিত বল করা অশ্বিনের শেষ বলে বিশাল ছক্কা হাকিয়ে নিজেদের ওপর থেকে চাপটা সরিয়ে নেন শেন ওয়াটসন। রানের গতি বাড়ানোয় ভালো অবদান রাখেন জেমস ফকনারও। তাকে বোল্ড করেন ভারতের সেরা বোলার যাদব। ৭২ রানে ৪ উইকেট নেন এই পেসার।

ওয়াটসনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা মিচেল জনসনের ৯ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ছোট্ট ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ সোয়া তিনশ’ পার হয়।

এই ম্যাচের জয়ী দল মেলবোর্নে রোববারের ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে।

(ওএস/পি/মার্চ ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test