E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

শ্রীনি বুঝছেন ডালমিয়া ‘বাঘা তেঁতুল’!

২০১৫ এপ্রিল ০৭ ২২:৩৩:৪২
শ্রীনি বুঝছেন ডালমিয়া ‘বাঘা তেঁতুল’!

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : কয়েকদিন আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল, বিসিসিআইতে শ্রীনিবাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হলেও মূলতঃ সেই শ্রীনিবাসনের সঙ্গেই যুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছেন জগমোহন ডালমিয়া। অনেকেই মনে করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বিসিসিআই থেকে বিতাড়িত হলেও, ডালমিয়ার রূপ ধরে হয়তো শ্রীনির প্রেতাত্মা ঠিকই রয়ে গেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে। কিন্তু, শ্রীনিবাসন কি কখনও ভেবেছিলেন, ফ্রাঙ্কেনাস্টাইন রূপ ধারণকরে উল্টো তাকেই সরাসরি যুদ্ধে আহ্বান জানাবেন ডালমিয়া!

সত্যি সত্যি, শ্রীনিবাসনের বিপক্ষে যুদ্ধে নেমে গেলেন ডালমিয়া। মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়ে সেটা এখন চূড়ান্ত শত্রুতার রূপ ধারন করতে শুরু করেছে। আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের কমিটি গঠন নিয়েই বিরোধের সূচনা। আপাতত এই বিরোধই এখন তুঙ্গে। শ্রীনিবাসন বুঝতে শুরু করেছেন, তিনি কতটা চালাক, তার চেয়েও অনেক বেশি চালাক যেন জগমোহন ডালমিয়াই। শ্রেফ যেন ‘বাঘা তেঁতুল।’

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে জগমোহন ডালমিয়া নির্বাচন করেছেন রাজীব শুক্লাকে। শ্রীনিবাসনের চাওয়া ছিল আইপিএলের প্রধান হিসেবে সঞ্জিব বিসওয়ালকে। শোনা গিয়েছিল, এই পদে ডালমিয়া হয়তো বসাতে পারেন অনুরাহ ঠাকুরকে। কিন্তু হঠাৎই এই পদে বসিয়ে দেওয়া হলো সাবেক চেয়ারম্যান শুক্লাকে। যিনি কি না. আইপিএল ফিক্সিং কাণ্ডের পর নিজে থেকেই পদত্যাগ করেছিলেন।

কেউ ভাবেনি রাজীব-সহ বাকি কমিটি নির্বাচনে এ ভাবে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে হা-রে-রে-রে করে নেমে পড়বেন ডালমিয়া। ভারতীয় ক্রিকেট মহল সোমবার বিস্ফারিত হয়ে লক্ষ্য করল, কমিটি নির্বাচনে সম্পূর্ণ শ্রীনির বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন ডালমিয়া। সৌরভ গাঙ্গুলিকে বিনা বাক্যব্যয়ে শ্রীনি টেকনিক্যাল কমিটি প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। সৌরভ সসম্মানে ফেরত এলেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে। রবি শাস্ত্রী স্বপদে বহাল রইলেন। সরানো হল গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথকে।

ক্রিকেট বোর্ডে তিনটি কমিটি প্রধানের পদ সবচেয়ে লোভনীয়। আইপিএল, ফিনান্স আর মার্কেটিং। তিনটিতেই ডালমিয়া বসিয়েছেন শ্রীনি বিরোধী শিবিরের লোক। তিন কমিটির প্রধানের মধ্যে আরও মিল, এরা প্রত্যেকেই শ্রীনি মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে এবারের নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। রাজীব শুক্লা, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং চেতন দেশাই।

শ্রীনি চেয়েছিলেন সুনীল নারিনের বিরুদ্ধে চাকিংয়ের অভিযোগ অব্যাহত রাখতে। নারিন যাতে আইপিএল না খেলতে পারেন। ডালমিয়া উল্টো ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিনারকে। শ্রীনি চেয়েছিলেন আইনজীবী ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিনিয়র লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে বহালের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে তুলে নিক ডালমিয়া। শ্রীনি মনে করেন ঊষাবাবু নানা ভাবে আদিত্য বর্মাকে সাহায্য করেছেন এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানে শ্রীনির বিরুদ্ধে বলেছেন। ডালমিয়া পাত্তাই দেননি। ঊষাবাবুকে সরানওনি।

শ্রীনি চেয়েছিলেন বিশ্বরুপ দে-কে এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট করতে। কিন্তু তাকে করা হয়েছে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান। তাকে ডালমিয়া ফিনান্স কমিটিতেও রেখেছেন কিন্তু ওই পদটা দেননি। সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় আগের বারের মতোই আইপিএল কাউন্সিলে আছেন। গতবার কমিটিতে বাংলার অবস্থান মোটেই সন্তোষজনক ছিল না। সেখানে এবার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির হেড ডালমিয়া নিজেকেই রেখেছেন। মার্কেটিং কমিটিতে রেখেছেন চিত্রক মিত্র এবং গৌতম দাশগুপ্তকে।

শ্রীনি চেয়েছেন এখনই বোর্ড ঘোষণা করুক যে, মুস্তাফা কামালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বাংলাদেশ সফর বাতিল করলাম। কিন্তু ডালমিয়া চিরকাল বাংলাদেশের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখে চলেছেন। তিনি এমন সিদ্ধান্ত হুট-হাট নিতে যাবেন কেন?

অথ্যাৎ, রাজীব শুক্লাকে চেয়ারম্যান বানিয়ে আইপিএলে শ্রীনিবাসনের সাজানো বাগান এলোমেলো করে দিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে গেছেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয়েছে শ্রীনিবাসনকে। বোর্ড নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করা জগমোহন ডালমিয়াকে সেই পদে বসিয়ে শ্রীনি ভেবেছিলেন পেছন থেকেই কলকাঠিটা তিনিই নাড়বেন। কিন্তু শ্রীনির সে গুড়ে বালি! তিনি যে কতটা ভুল ভেবেছিলেন, সেটা তিনি এই মুহূর্তে হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছেন। ডালমিয়া যে অন্য ধাতু দিয়ে তৈরি সেটা সম্ভবত বুঝতেই পারেননি শ্রীনি।

(ওএস/পি/এপ্রিল ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test