E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শ্রীলঙ্কার পালে যেন বৃষ্টির জাপটা, আর ভেসে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

২০১৪ এপ্রিল ০৪ ১৬:১৭:৫৮
শ্রীলঙ্কার পালে যেন বৃষ্টির জাপটা, আর ভেসে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : রেকর্ডবুকে সুস্পষ্ট করেই লেখা থাকবে ডাকওয়ার্থ-লুইস আইনে জয়ী শ্রীলঙ্কা। উইন্ডিজের সান্ত্বনা থাকতে পারে অতটুকুই, বৃষ্টির জন্যই হেরেছি। আবার ভিন্ন কথাও বলতে পারেন ব্রাভো-স্যামিরা, ‘খেলা শেষ পর্যন্ত গড়ালে আমরাও জিততে পারতাম!’ বিষয়টি একটু হাস্যকরও মনে হতে পারে। কিন্তু হিসেবটা অবিশ্বাস্য মনে করার সুযোগ নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগের ২ ম্যাচে কিন্তু তেমন নমুনাই দেখিয়েছে। তাই বলা যায় খেলা শেষ বল পর্যন্ত গড়ালে যেকোনো কিছু সম্ভব ছিল।

শ্রীলঙ্কার পালে যেন বৃষ্টির জাপটা, আর ভেসে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

আচানক ধূলার বেজায় উড়াউড়ি। একটু পরেই ঝড়োহাওয়া; শিলাবৃষ্টি। ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ-উৎসরণ। শেষমেশ ভারী বৃষ্টিস্নাত স্টেডিয়াম। ১৩.৫ ওভারের খেলা চলছিল ওই সময়। তেড়েফুড়ে জবরদস্ত বৃষ্টির পর যথারীতি ঘোষণা রীতিশুদ্ধ আইনে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। তাও আবার ২৭ রানের ব্যবধানে। উইকেট তখনও ৬টি অক্ষত; নামেননি খুনে ব্যাটার স্যামিও। হিসেব অনুযায়ী ৬.১ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৮১ রান। মাত্র বলার পেছনে কারণও রয়েছে। শেষ গ্রুপ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্রাভো-স্যামির ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ৩০ বলে ৮২ রান তুলেছিল। যেহেতু ক্রিকেটে শেষ বলের আগে শেষ বলতে নেই। তাই শ্রীলঙ্কা নিশ্চিত জিততই বলা যায় না।


অনেক বল খেলা গেইল যখন ফিরে গেছেন; তখন শ্রীলঙ্কানদের জয়ের প্রণোদনায় এসেছিল সজীত উন্মাদনা। ২৫, ২৮ ও ৩৪ রানের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যখন টপের ৩ ব্যাটারকে হারাতে হয়েছে; তখন সেই উন্মাদনা সৌরভময় হয়ে পড়েছে। ম্যালিঙ্গায় বধ হয়ে ফিরেছেন ব্যাটিং দানবখ্যাত গেইল; তাও ১৩ বল খেলে মাত্র ৩। ওয়ান ডাউনে সিমন্সও (৪) ব্যর্থ। তাকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলেছেন প্রসন্ন। ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছেন ডোয়াইন স্মিথ। কিন্তু তিনিও (১৭) মালিঙ্গার শিকার। ৩০ রানে আউট হয়েছিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। স্যামুয়েলস ১৮ রানে উইকেটে সঙ্গী পেয়েছেন স্যামিকে। তখন তার ব্যাট রান শূন্য। তখনই সেই শিলাঝর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১২টা বেজেছে ম্যালিঙ্গা তাণ্ডবেই। তিনি ২ উইকেট নিয়েছেন ৫ রানে।


জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬১ রানের টার্গেট দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের একটি ধামাকা ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ১৬০/৬ রানের দারুণ স্কোর স্পর্শ করেছে। শেষে ২৩ বলে ৪০ রান করেছেন ম্যাথুস। ২টি ছক্কার সঙ্গে ৩টি চারের মার ছিল দেখার মতোই। সানতোকির বলেই ২ উইকেট ঘায়েল।


লাহিরু থিরিমান্নে সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। ছন্দে ফেরার আভাস দেয়া তিলকারত্নে দিলশান ৩৯ রান করেছেন ৩৯ বলে। ৪১-৪৯; মাত্র ৮ রানে কৌশল পেরেরার (২৬) পর ব্যাটিংস্তম্ভ কুমার সাঙ্গাকারা (১) এবং মাহেলা জয়াবর্ধনে (০) রান আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর চাপে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকেই থিরমান্নে-ম্যাথুসরা দলকে ধীরে ধীরে নিরাপদ গন্তব্যে হাজির করেছে। শেষ দিকে তাতে উত্তাপ-উত্তেজনা ছড়িয়েছেন ম্যাথুস।


কারও কাছে দু'বছর আগে কলম্বোয় ২০১২ বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তিও মনে হতে পারে। এখানে শুধু পার্টি বদল হয়েছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়; জিতেছে শ্রীলঙ্কা। তবে ম্যাচ শুরুর আগে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে দুটো টিমের কাউকে আলাদাভাবে ফেভারিট হিসেবে বেছে নেওয়াটা ছিল নির্বুদ্ধিতা। তবে ধারণায় এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কাই জিতেছে। সেখানে বৃষ্টিকে একটি আলাদা ইস্যু করার চেষ্টা বাহুল্য। কারণ ম্যাচটি কিন্তু আগের মতো নয়। এটা সেমিফাইনাল। সুতারাং এখানে স্নায়ুর চাপ থাকবেই।


শ্রীলঙ্কা : ১৬০/৬, ২০ ওভার (থিরিমান্নে ৪৪, ম্যাথুস ৪০, দিলশান ৩৯, কৌশল পেরেরা ২৬; সানতোকি ২/৪৬)।


ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৮০/৪, ১৩.৫ ওভার ( ব্রাভো ৩০, স্যামুয়েলস ১৮*, স্মিথ ১৭; ম্যালিঙ্গ ২/৫)।


ফল : ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে শ্রীলঙ্কা ২৭ রানে জয়ী।

(ওএস/পি/এপ্রিল ০৪,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test