E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জয়ের বন্দরে বাংলাদেশ, অপেক্ষা উজ্জাপনের

২০১৫ জুন ১৮ ২৩:২৬:০৬
জয়ের বন্দরে বাংলাদেশ, অপেক্ষা উজ্জাপনের

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল সফরকারী ভারত। এরপর রায়না ও জাদেজা মিলে অসাধারণ এক জুটি গড়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে নেয়ার জোর চেষ্টা চালান। তবে মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ৩৭তম ওভারে পরপর দুই বলে রায়না ও অশ্বিনকে আউট করে বাংলাদেশকে জয়ের পথেই রাখেন এই অভিষিক্ত পেসার।

মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৮৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছে ধোনির ভারত। বাংলাদেশ শিবির অপেক্ষা করছে জয়ের।

প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই উত্তেজনা-রোমাঞ্চ বেশ জেঁকে ধরেছে টাইগার সমর্থকদের। ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের নেশায় বুদ গোটা বাংলাদেশ। জয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং স্কোরও গড়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার মিরপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৯.৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান। ৩০৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করছে সফরকারী ভারত।

উদ্বোধনী জুটিতে শেখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা মিলে ৯৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে তাসকিন আহমেদ পরপর দুই ওভারে ভারতীয় শিবিরে জোড়া আঘাত হেনে মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দর্শকদের গর্জন তুলেন। একে একে ধাওয়ান ও বিরাট কোহলিকে বিদায় করেন এই তরুণ পেসার।

এরপর মুস্তাফিজুর রহমান ওপেনার রোহিত শর্মাকে আউট করে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে গর্জন তুলেন। এই অভিষিক্ত পেসারের লাফিয়ে উঠা বলে বিভ্রান্ত হয়ে মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা মাশরাফিকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রোহিত। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচে এটিই মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম উইকেট।

১১৫ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে চেপে ধরেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান ফের ভারতীয় শিবিরে আঘাত হেরে মিরপুরের ২৩ হাজার দর্শকদের উল্লাসে মাতান, হাসি ফোটান কোটি কোটি দর্শকের। মুস্তাফিজের স্লোয়ার বলে বিভ্রান্ত বলে নাসিরকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আজিঙ্কা রাহানে। এই ভারতীয় ব্যাটসম্যান রানের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করেন। ২৫ বলে মাত্র ৯ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।

২৫ ওভার পেরিয়ে গেলেও সাকিবকে আক্রমণে আনেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিছুটা কী ক্ষেপে ছিলেন এই অলরাউন্ডার। ২৬তম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই সবচেয়ে দামি উইকেটটি তুলে নিলেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার। সাকিবের স্পিনে নাকাল হয়ে মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ভারতীয় অধিনায়ক এমএস ধোনি। ইনিংসের শুরুতে দু’দুটি ক্যাচ মিসের মূল্য যেন শোধ করলেন মুশফিক। অসাধারণ এক ক্যাচ লুফে বাংলাদেশের দর্শকদের আনন্দে মাতান তিনি। ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়া ভারতকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন জাদেজা ও সুরেশ রায়না। ষষ্ঠ উইকেটে এই দুজনের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ভারত। তবে ফের মুস্তাফিজুর রহমানের আঘাতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এই অভিষিক্ত পেসারের করা ৩৭তম ওভারে চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন সুরেশ রায়না। মুস্তাফিজের ইনসুয়ং বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন রায়না। পরের বলে অশ্বিনকে আউট করে বাংলাদেশকে জয়ের পথ দেন এই অভিষিক্ত পেসার। এক ওভার পর ফের বোলিংয়ে এসে ভারতের কোমর ভেঙে দেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশের জয়ের পথের শেষ বাধা জাদেজাকে আউট করে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান এই তরুণ পেসার।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারতের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৯৫ রান। ভুবনেশ্বর কুমার ৫ ও মোহিত শর্মা ০ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। এর আগে ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হতে পারতেন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ৯.২ ওভারের মাথায় মাশরাফির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ধাওয়ান। কিন্তু সহজ ক্যাচ তালুবন্দী করতে পারেননি অনেকদিন পর কিপিংয়ে ফেরা মুশফিকুর রহীম। অথচ মাশরাফির আবেদনে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

তারপরও বেশিদূর আগাতে পারেননি ধাওয়ান। ব্যক্তিগত ৩০ রানের মাথায় তাসকিনের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ভারতীয় এই ওপেনার। সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয় ভারতের ওপেনিং জুটি। উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৯৫ রান।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে ফের তাসকিন আহমেদ ভারতীয় শিবিরে আঘাত হেনে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান। তাসকিনের শর্ট অব লেংথ বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। ৪ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হন তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে রোহিতকে আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারে রাহানেকে আউট করে ভারতকে চেপে ধরেন এই অভিষিক্ত পেসার।

এই প্রথম ভারতের বিপক্ষে ৩০০ পার করেছে বাংলাদেশ। এই বছর তৃতীয়বারের মতো তিন শ পার করল টাইগাররা। আগের দুবার হারেনি। এবার কি পারবে বাংলাদেশ?

পরের পরিসংখ্যান আরও আশা-জাগানিয়া। সর্বশেষ ১৯ মাসে পরে ব্যাট করে ২৩ ইনিংসে একবারই তিন‘শ পেরিয়েছে ভারত। কিন্তু সেই ম্যাচটাও হয়েছিল টাই। এবার কোন পথে হাটবে ধোনি শিবির?

(ওএস/পি/জুন ১৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test