E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রাজনীতিতে পা বাড়াচ্ছে সাঙ্গাকারা!

২০১৫ আগস্ট ২৫ ২২:০৯:৩২
রাজনীতিতে পা বাড়াচ্ছে সাঙ্গাকারা!

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : অসাধারণ এক সফর! ১৫ বছরের এই সফর শেষ করলেন নিজের ৩৭ বছর বয়সে এসে। সদ্য সাবেক হয়ে যাওয়া শ্রীলংকান ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারার কথাই বলা হচ্ছিল। কলম্বোর পি সারা ওভালে যে বিদায়ী সম্ভাষণ পেলেন, তা দেখে যে কোন ক্রিকেটারেরই ঈর্ষা হওয়ার কথা। বিদায়বেলায় ঘটেছে অভ্যর্থনা আর আবেগের বিস্ফোরণ। এমন অনাড়ম্বর বিদায় কয়জন পায়!

২৭৮ রানে হেরে গেছে দল, ভারত জিতেছে প্রায় এক বছর পর, অধিনায়ক হিসেবে কোহলির প্রথম জয়, পি সারা ওভাল টেস্টকে বিষেশায়িত করতে কত উপকরণই না মজুদ রয়েছে। কিন্তু সবেই ম্লান হয়ে গেছে, এক কিংবদন্তীর বিদায়বেলায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন লংকান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে। বিদায় অনুষ্ঠানেই সাঙ্গাকারাকে যুক্তরাজ্যে শ্রীলংকার রাষ্ট্রদূত হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বসলেন লংকান প্রেসিডেন্ট।

অনেক বছরেই তো শ্রীলংকান ক্রিকেটের দূত হয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন সাঙ্গাকারা। এবার রাষ্ট্রীয় দূত! সত্যি অসাধারণ এক ব্যাক্তির জন্য অসাধারণ একটি প্রস্তাব। ক্রিকেট মাঠ থেকেই সরাসরি রাজনীতিতে জড়ানোর প্রস্তাব! লংকান প্রেসিডেন্টের এমন প্রস্তাব তিনি সত্যি সানন্দে গ্রহণ করেন না কি, অবসর না নেওয়ার অনুরোধকে যেভাবে স্ব-সম্মানে দুরে ঠেলেছিলেণ সেভাবে ঠেলে দেন, সেটাই ছিল সবচেয়ে বেশি দেখার।

সাঙ্গাকারার প্রস্তাবটি গ্রহণ করা নিয়ে শঙ্কা হওয়ার কারণও ছিল। এমনিতেই লংকান ক্রিকেট থেকে সরাসরি রাজনীতিতে জড়ানোর দৃষ্টান্ত বহু রয়েছে। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাই তো বড় উদাহরণ। শ্রীলংকার ক্রীড়ামন্ত্রীও হয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে জড়িয়েছেন সনাৎ জয়সুরিয়াও। নিজের এলাকা মাতারা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সংসদ সদস্য।

এ কারণে অনেকেই ধারনা করেছিলেন, সাঙ্গাকারার যে তুমুল জনপ্রিয়তা, তাতে অনায়াসেই একে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু; গোল বেধেছে সাঙ্গার নিজের বক্তব্যে। চলতি বছরই প্রচারিত বিবিসি সিংহলিজের (সিংহলিজ ভাষায় প্রচারিত) সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সাঙ্গা বলেছিলেন, তিনি কখনও রাজনীতিতে জড়াবেন না।

কিন্তু বিদায় মঞ্চে নতুন জীবন শুরু করার যে সম্মানিত প্রস্তাব তিনি পেয়ে গেলেন স্বয়ং লংকান প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে, সেটাকে কিভাবে উপেক্ষা করবেন তিনি? না করেনওনি। বিবিসির সঙ্গেই বিদায় পরবর্তী এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, প্রস্তাবটি নিয়ে ভাবছেন।

বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এটা ছিল তো আমার জন্য একটা চমক। আমি এটা নিয়ে ভাবছি এবং প্রস্তাবটা নিয়ে আমি সম্মানিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও আলোচনা করবো।’

এর অর্থ সাঙ্গা এই প্রস্তাবে রাজী। এখন শুধু দেখার বিষয়, কবে থেকে রাজনীতিতে অভিষেক হচ্ছে তার। কবে থেকে হয়ে উঠবেন তিনি পুরো শ্রীলংকারই একজন দুত হিসেবে। তবে, নতুন প্রস্তাব, নতুন অভিজ্ঞতা। এ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছেন সাঙ্গাকারা। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের এই প্রস্তাবকে আমি খুবই সম্মান জানাই। তবে, সমস্যা হচ্ছে নতুন এই কাজ সম্পর্কে আমার তেমন কোন অভিজ্ঞতাই নেই।’

সাঙ্গাকারা নিজে হয়তো বিনয়ী হয়ে বলে দিলেন, আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু ২০১১ সালে লর্ডসে এমসিসির আমন্ত্রণে যে ‘কলিন কাউড্রে’ লেকচার দিয়েছিলেন তিনি, তাতেই পরিষ্কার হয়ে যায়, সাঙ্গাকারা আসলে কতটা পরিণত মানুষ। যেখানে শ্রীলংকার ক্রিকেট রাজনীতি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির দারুন চিত্র তুলে ধরেছিলেন তিনি। ওই ব্ক্তব্যের পর শুধু ক্রিকেট বিশ্বেই নয় তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল পুরো বিশ্বেই।

এরপরই যদি তিনি বলে থাকেন, আমার কোন অভিজ্ঞতা নেই- তাহলে বলতে হবে এটা নিতান্তই এক ভদ্রলোকের বিনয়ের চরম নমুনা।

(ওএস/পি/অাগস্ট ২৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test