E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কাতারের ঘুষ কেলেঙ্কারি

বিশ্বকাপ আয়োজকের মর্যাদা হারাতে যাচ্ছে কাতার!

২০১৪ জুন ০২ ১৬:৪১:৩৮
বিশ্বকাপ আয়োজকের মর্যাদা হারাতে যাচ্ছে কাতার!

স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : কাতারকে বেছে নেওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ আয়োজক নির্বাচনে ভোটাভুটির পর থেকে ব্রিটিশ মিডিয়ায় বার বার উঠে আসছিল, কাতারের আয়োজক হওয়ার পেছনে বিশাল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে। আরবীয় পেট্রোডলারের জোরেই তারা ২০২২ সালের আয়োজক হয়েছে। যদিও ফিফা এ ব্যাপারে অনৈতিক অর্থ লেনদেনের ব্যাপারটি পুরোপুরি অস্বীকার করে আসছিল।

কিন্তু এবার সম্ভবত আর কিছুই লুকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছে ব্রিটিশ প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য সানডে টাইমস। গতকাল রিপোর্ট প্রকাশ করে পত্রিকাটি জানিয়েছে, কাতারের বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়ার পেছনে ঘুষ হিসেবে অন্তত ৫০ লাখ ডলার (প্রায় ৪০ কোটি টাকা) লেনদেন হয়েছে। ঘুষ দিয়েছিলেন সাবেক ফিফা ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এএফসি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ বিন হাম্মাম।

সানডে টাইমস দাবি করেছে, এ রিপোর্ট তারা প্রকাশ করেছে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি ই-মেইল এবং যথেষ্ট পরিমাণ কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর। যদি এ বিষয়ে তদন্ত করা হয় তাহলে নিজেদের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদিও উপস্থাপন করতে পারবে তারা। সানডে টাইমসের এ রিপোর্টের পরই তোলপাড় শুরু হয়েছে ফুটবল বিশ্বে।

এতদিন ধরে জোর গুঞ্জন হিসেবে বাতাসে ভেসে বেড়ানো বিষয়টাই যখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠল, তখন ফিফার আরেক সহসভাপতি জিম বয়েস জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্ধারণে পুনরায় ভোটাভুটির আয়োজন করা হবে।

বিশ্বকাপ আয়োজক হিসেবে যখন কাতার বিড করে তখন এর পেছনে মূল ব্যক্তিই ছিলেন সাবেক এএফসি সভাপতি মোহাম্মেদ বিন হাম্মাম। দুর্নীতির দায়ে এমনিতেই গত বছর তাকে ফুটবল সম্পর্কিত সব কার্যক্রম থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে ফিফার এথিক্স কমিটি। জিম বয়েস জানিয়েছেন, এথিক্স কমিটির প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল গার্সিয়ার মাধ্যমেই এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

সানডে টাইমসের রিপোর্টে এসেছে, বিশ্বকাপ আয়োজক নির্ধারণের ভোটাভুটির সময় আফ্রিকার ৩০টি দেশের অধিকাংশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ডলার করে দিয়েছিলেন হাম্মাম। এ ছাড়া এসব দেশকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। একই সঙ্গে বিন হাম্মাম ফিফার সাবেক সহসভাপতি জ্যাক ওয়ার্নারের অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ ডলার। শুধু তাই নয়, ভোটাভুটির আগের দিনও জ্যাক ওয়ার্নারকে দেওয়া হয়েছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ২০১৮ এবং ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্ধারণের ভোটাভুটিতে রাশিয়া এবং কাতারকে বেছে নেওয়ার জন্য যে ২২ জন ভোট দিয়েছিলেন, তাদের একজন জ্যাক ওয়ার্নার। ২০১১ সালে তিনি ফিফা থেকে পদত্যাগ করেন এবং এরপর ফিফাও তাকে দুর্নীতির দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর দু’মাস পরই অবশ্য দ্য টেলিগ্রাফ রিপোর্ট করেছিল, বিন হাম্মামের একটি কোম্পানি ওয়ার্নারকে ঘুষ হিসেবে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েছিল।

সানডে টাইমস জানিয়েছে, এ অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিন হাম্মাম কোনো উত্তর দেননি এবং তার ছেলে হামাদ আল আবদুল্লাহও বাবার পক্ষ হয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। কাতার বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটিও এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, বিন হাম্মাম এ বিষয়ে গোপন কোনো কিছুই করেননি, কিংবা এ বিষয় সম্পর্কে তারা অবগত নন।

সানডে টাইমসের রিপোর্টটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গ্রীষ্মকালে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে চলছিল নানামুখী প্রতিক্রিয়া। প্রচণ্ড তাপমাত্রায় কীভাবে বিশ্বকাপ খেলবে ফুটবলাররা- এ নিয়ে বিতর্কের মাঝেই গত মাসে ফিফা প্রেসিডেন্ট সেফ ব্লাটার জানিয়েছিলেন, ‘কাতারকে বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে বাছাই করা ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত।

(ওএস/পি/জুন ০২,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test