E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ঋণ দিলে খেলাপি হবেই : এবিবি

২০১৮ ডিসেম্বর ১২ ১৭:২১:৩৮
ঋণ দিলে খেলাপি হবেই : এবিবি

স্টাফ রিপোর্টার : আমানত গ্রহণ করে ঋণ প্রদান করে এটাই ব্যাংকের কাজ। আর ঋণ দিলে কিছু খেলাপি হবে এটা স্বাভাবিক। কারণ আমরা ঋণ পরিশোধ না করার সংস্কৃতিতে আছি। তাই যাচাই-বাছাই করে ঋণ দিতে হবে। কারণ আমানতের অর্থ ব্যাংকের নিজের নয় এটা জনগণের টাকা।

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক মিট দ্যা প্রেসে এসব কথা বলেন দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। মিট দ্যা প্রেস আয়োজন করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।

এবিবির সভাপতি ঢাকা ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি ) সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ব্যাংক এশিয়ার এমডি মোহাম্মদ আরফান আলী, সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেল আর কে হোসাইন, এবিবির সাবেক সভাপতি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীরা।

ব্যাংকের নির্বাহীরা বলেন, দেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে। জিডিপি, মাথাপিছু আয়সহ বেশিরভাগ সূচকেই আমরা উন্নতি করছি। এসব উন্নয়নের মূল ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকিং খাত। তাই অর্থের জোগানের প্রধান এ খাতকে শক্তিশালী করতে শতভাগ কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি বাড়াতে হবে। আমাদের ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে হবে। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া ও সিকিউরিটি বাড়াতে হবে। ঝুঁকির ধরন বিভিন্ন সময় চেঞ্জ হয়। এটি সমন্বয় করতে হবে।

এ সময় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের কম মূল্য ও বিদ্যুৎ গ্যাসসহ অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে সম্প্রতি সময়ে ঋণ খেলাপি বাড়ছে বলে জানান তারা।

এবিবির সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে। এটি মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের যত বাধাই আসুক আমরা এগিয়ে যাব। সিডর, আইলার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে এসেছি। তাই কোনো কোনো বাধা আমাদের পিছনে টেনে ধরে রাখতে পারবে না।

গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে এবিবির সভাপতি বলেন, গণমাধ্যম ব্যাংক খাতের সমালোচনা যেমন করে, তেমনি উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। কিন্তু সংবাদকর্মীদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা আপনারা আমাদের সমালোচনা করবেন কিন্তু শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখবেন। কারণ পত্রিকার নেগিটিভ হেডলাইন দেখেই অনেকে আতঙ্কিত হয়। এ বিষয়ে একটু সচেতন হওয়া দরকার।

সোনালী ব্যাংকের এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ভাত খেলে যেমন দুই একটা বাদ পড়ে। তেমনে ঋণ দিলে খেলাপি হবেই। দেশে এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সব ক্ষেত্রেই আমরা এগিয়ে গেছি। কৃষি থেকে আমরা এখন শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ অর্জন পরিবর্তনের প্রধান ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকিং খাত। সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার অনেক কথা বলা হচ্ছে কিন্তু আমাদের অর্জনের কথা কেউ বলছে না।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি তথ্য অনুযায়ী বিগত প্রায় ১০ বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকিং খাতের মধ্যে ৮ লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা খারাপ হতেই পারে। এখন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাদের কাজ হবে ভুল যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেই দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ ব্যাংকের টাকা কোনো ব্যক্তির নয় এটি জনগণের টাকা।

তিনি বলেন, ফ্যাক্টরি স্থাপন করে সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ না পাওয়ায় উৎপাদনে যেতে পারে না অনেক প্রতিষ্ঠান। খেলাপি বাড়ার এটাও একটি অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণের ঝুঁকি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সক্ষমতা কতটুকু আছে এটাই দেখার বিষয়। আমরা যদি ঝুঁকিপূর্ণ ঋণকে (ছোট, মাঝারি ও বড়) তিন ভাগে ভাগ করি তাহলে দেখা যাবে। বর্তমানে ছোট আকারের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ মোকাবেলায় দেশের সবগুলো ব্যাংকের সক্ষমতা রয়েছে। আর মাঝারি আকারের ঝুঁকি মোকাবেলায় সক্ষম ৭০ শতাংশ ব্যাংক। তবে বড় ঝুঁকির ক্ষেত্রে সবাই সক্ষম নয়।

খেলাপি ঋণ হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের চেয়ে ঋণ গ্রহীতারা বেশি দোষী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সব কিছু দেখে ঋণ দেয় তারা ফেরত দেয় না। তাহলে দোষ কাদের? আর ব্যাংক খাতের খোয়া যাওয়া ২২ হাজার কোটি টাকার সম্প্রতি সিপিডি তথ্য পুরো সত্য নয় বলেন জানান তিনি।

ব্যাংক এশিয়ার এমডি মোহাম্মদ আরফান আলী বলেন, এক সময় ব্যাংকিং খাতে ৯ দশমকি ৬১ শতাংশ সেবা বিনামূল্যে দেয়া হত। বর্তমানে ৬৬ শতাংশ সেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। বর্তমানে স্কুল ব্যাংকিং, ১০ টাকার হিসাব খোলা সব ক্ষেত্রের আমরা সফল। যার কারণে অর্থনীতি উন্নয়নে ব্যাংকের রোল মডেল পালন করছে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test