E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফের মতিঝিলের রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা

২০১৯ জুলাই ১৫ ১৭:৫৮:০৫
ফের মতিঝিলের রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের শেয়ারবাজারে অব্যাহত বড় দরপতন পিছু ছাড়ছে না। টানা পতনে একটু একটু করে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ক্ষোভ আর পুঁজি হারানোর প্রতিবাদে আবারও মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তবে আজ (সোমবার) দুপুরে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক প্রায় একশ’ পয়েন্টে পড়ে গেলে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা ডিএসইর থেকে বের হয়ে মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বিক্ষোভ মিছিল থেকে তারা পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা বলেন, ‘খায়রুল তুই রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’। ডিএসইর উদ্দেশ্যে তারা বলেন ‘ডিএসইর গদিতে আগুন জ্বালো এক সাথে’।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ থেকে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ২০১০ সালে যে চক্র শেয়ারবাজার থেকে পরিকল্পিতভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অর্থ হাতিয়ে নেয়, সেই চক্রই আবার বাজারে সংক্রিয় হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবেই এমন অবস্থার সৃষ্টি করছে। পাতানো খেলার মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম প্রভাব ফেলানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ২০১০ সালের ‘রাঘব বোয়ালরা’ জড়িত। যাদের নাম ইব্রাহিম খালেদের তদন্তে ওঠে এসেছিল। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী বলেন, বিএসইসির এই চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না। আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই। এই চেয়ারম্যান ইস্যুয়ারের (কোম্পানি) দালালি করছে। বিনিয়োগকারীদের পক্ষে কোনো কাজ করছে না। তাকে দায়িত্ব রেখে শেয়ারবাজার ভালো করা যাবে না।

এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার (১৫ জুলাই) লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৮৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯১ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচকটি ৩৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর শরীয়াহ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে টানা সাত কার্যদিবস দরপতন হলো।

সব সূচকের পতনের পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া মাত্র ৩৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৩০৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির।

মূল্য সূচকের বড় পতন ও সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে ৩০৬ কোটি ৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৫৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুন্নু সিরামিকের ৯ কোটি ৫৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।

এছাড়া বাজারটিতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, জেএমআই সিরিঞ্জ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স, রানার অটোমোবাইল এবং সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ।

দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৬১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬১৯ পয়েন্টে। বাজারটিতে হাত বদল হওয়া ২৭৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ২২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দাম। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test