E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উচ্চ সুদে লোকসানে ব্যবসায়ীরা : ডিসিসিআই

২০১৯ নভেম্বর ০৯ ১৭:০৪:৪৩
উচ্চ সুদে লোকসানে ব্যবসায়ীরা : ডিসিসিআই

স্টাফ রিপোর্টার : বেশিরভাগ ব্যাংক এখনো ১১-১৫ শতাংশ হারে ঋণের সুদ নিচ্ছে। উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সুদহার বেশির মূল কারণ খেলাপি ঋণ যা অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এক অংকে সুদহার বাস্তবায়ন ও খেলাপি ঋণ কমাতে সুশাসনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআইয়ের নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ চিত্র তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি ওসামা তাসীর।

তিনি বলেন, আমাদের রফতানি বাড়ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। এর মূল কারণ উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে, কিন্তু লাভ হচ্ছে না। ব্যাবসায়িক ব্যয় বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক পণ্যের চাহিদা কমায় ক্রমাগত লোকসান হচ্ছে।

তিনি জানান, বেশিরভাগ ব্যাংক এখনও ১১-১৫ শতাংশ হারে ঋণের সুদ নিচ্ছে। বেশি সুদের কারণে খরচ বাড়ছে, ব্যবসায় লাভ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।

সরকার এক অঙ্কে সুদহার নামানোর বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে এটি আশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক অংকের সুদহার বাস্তবায়নে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো এবং সুশাসন নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই।

খেলাপি ঋণ অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, খেলাপি কমাতে হলে ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা। আর খেলাপি ঋণ না কমালে সুদহার কমানো কঠিন বলে জানান তিনি।

সুশাসনের অভাবে পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দাবি করে ঢাকা চেম্বারের এ নেতা বলেন, পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য সুশাসনের পাশাপাশি মার্কেট স্থাপন এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে।

রফতানি বহুমুখীকরণের পরামর্শ দিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমানে রফতানি খাত পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরশীল। একটি খাতের উপর রফতানি নির্ভরশীল হলে তা দীর্ঘমেয়াদি ভালো ফল আনে না।

পোশাক খাত চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ পরিবহন ব্যয়, বেতন বৃদ্ধি ও উৎপাদনশীলতার অভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, পোশাক উৎপাদন খাতে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই পোশাক খাতের রফতানির ধারাবাহিকতা রক্ষায় আগামী তিন বছর তিন শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দেয়ার পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগাতে পোশাক খাতের শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।

অবকাঠামো জ্বালানি সমস্যার কারণে বেসরকারি খাত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে বিসিসিআই সভাপতি বলেন, দৈনন্দিন গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৩৬৫০ ঘনফুট যার বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে ২৬৫০ ঘনফুট। অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে এক হাজার ঘনফুট ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি কমাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।

বিসিসিআই সভাপতি বলেন, পণ্য পরিদর্শন কার্যক্রম ও অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেড়ে যাচ্ছে। এ সময় অবকাঠামো উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ প্রয়োজন। একই সঙ্গে বন্দর সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নে ‘জাতীয় সমুদ্র ও বন্দর কর্তৃপক্ষ’ নামের একটি সংস্থা স্থাপনের প্রস্তাব করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি ওয়াকার চৌধুরী, সহ সভাপতি ইমরান আহমেদসহ বিভিন্ন পরিচালকরা।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test