E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৭ দিনে দ্বিগুণ পেঁয়াজের দাম

২০২০ এপ্রিল ১৫ ১৫:৫০:২৯
৭ দিনে দ্বিগুণ পেঁয়াজের দাম

স্টাফ রিপোর্টার : বাজারে সংকট নেই। তার পরও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে নিত্যপণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে এখন কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে দাম। অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই পাইকারি বাজারে অভিযান চান সাধারণ ভোক্তারা।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্ক পুঁজি করে মার্চের মাঝামাঝি কারসাজির কারণে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ টাকার পেঁয়াজ বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। পরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মোবাইল টিম ও র‌্যাবসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা একযোগে পেঁয়াজের আড়ত-পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান চালায়। দাম কারসাজির অপরাধে জেল-জরিমানাসহ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে দাম নিয়েন্ত্রণে আসে।

কেজিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় নেমে আসে পেঁয়াজের দাম। আবারও গত সপ্তাহ থেকে অস্থির হতে শুরু করেছে পেঁয়াজের বাজার। ধাপে ধাপে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।

মুগদার খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মিজান জানান, এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। আজ আড়তেই পাইকারি কেনা পড়েছে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। গাড়িভাড়া খরচ মিলিয়ে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা পড়েছে। ৬০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তিনি।

পাইকারি বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অভিযোগ করে খুচরা এ বিক্রেতা বলেন, আড়তে দাম কম থাকলে আমরাও কম দামে বিক্রি করি। গত সপ্তাহে ৩৫ টাকাও বিক্রি করেছি। এখন কেনা বেশি তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

দাম বাড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করে পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মেসার্স আলী ট্রেডার্সের পরিচালক মো. সামসুর রহমান জানান, ভারতের পেঁয়াজ সরবারহ কম। দেশি পেঁয়াজ দিয়েই চাহিদা পূরণ হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন জেলায় প্রশাসন ঠিক মতো হাট-বাজার বসতে দিচ্ছে না। ফলে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের সরবরাহ কম। এছাড়া পরিবহন ভাড়াও আগের চেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে দাম বেশি।

এদিকে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আবু সাইদ নামের এক ক্রেতা বলেন, এখন পেঁয়াজের মৌসুম। বাজারে পেঁয়াজের কোনো অভাব নেই। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছি, আজকে ৬০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেশি দামে কিনতে হলো। কারণ কী? সুযোগ পেলেই তারা (ব্যবসায়ীরা) দাম বাড়িয়ে দেয়। তাই সরকারের উচিত এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া। তা না হলে আবারও সুযোগ নেবেন অসৎ ব্যবসায়ীরা।

অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, অধিদফতরের ডিজির নির্দেশনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ নিশ্চিত ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতায় প্রতিদিনই বিশেষ অভিযান চলছে। আজকেও রাজধানীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি মোবাইল টিমসহ মোট ৯টি টিম বাজারে অভিযান চালিয়েছে। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা আজকে পাইকারি পেঁয়াজের বাজার বিশেষ অভিযান করবো। কেউ অযৌক্তিক দাম বাড়ালে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির এ বিশেষ সময়ে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মীদের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সরকারের আদেশ ও অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশনায় প্রতিদিন অভিযান করছি। পণ্য বা সেবা ক্রয়ে ভোক্তারা কোনো ধরনের হয়রানি বা প্রতারণার শিকার হলে আমাদের ভোক্তা অধিদফতরের হটলাইন-১৬১২১ নাম্বারে কল করে জানান। সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রফতানি বন্ধ করায় দেশের বাজারে অস্বাভাবিক বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। রেকর্ড ২৫০ টাকায় পৌঁছে পেঁয়াজের কেজি। পরে জরুরি আমদানি ও সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ এবং নতুন পেঁয়াজ বাজারে ওঠায় প্রায় পাঁচ মাস পর নিয়ন্ত্রণে আসে পেঁয়াজের বাজার। সামনে প্রবিত্র রমজান মাস। প্রতি বছরই রমজান মাসকে কেন্দ্র করে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এখন যদি সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আবার অস্থির হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test