E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মুনাফার ভাগ দেয় না প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স

২০২০ এপ্রিল ১৭ ১৬:৪৫:৩১
মুনাফার ভাগ দেয় না প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স

স্টাফ রিপোর্টার : বছরের পর বছর মুনাফার তথ্য দেখালেও বিনিয়োগকারীদের সেই মুনাফার ভাগ দেয় না প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স। আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ২০১৯ সালের মুনাফা থেকেও বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ মার্চ প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ২০১৯ সালের লভ্যাংশ ঘোষণা করে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনাপর্ষদ সমাপ্ত হিসাব-বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এই হিসাব-বছরে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১৭ পয়সা মুনাফা করেছে। মোট মুনাফা হয়েছে তিন কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ৯২৪ টাকা। অর্জিত মুনাফা থেকে ৬৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬০২ টাকা নগদ লভ্যাংশ হিসাবে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ লভ্যাংশ হিসাবে মুনাফার মাত্র ১৭ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণ করা হবে। মুনাফার বাকি ৮৩ শতাংশ থেকে বঞ্চিত হবেন বিনিয়োগকারীরা।

শুধু এবার নয়, এভাবে বছরের পর বছর ধরে এই সাধারণ বীমা কোম্পানির মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০০৭ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশের বিষয়ে ডিএসইর ওয়েবসাইটে ২০০৬ সাল থেকে তথ্য রয়েছে।

ডিএসইর ওই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি বছরই কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে মাত্র একবার নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়। বাকি ১২ বছরে শুধু বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসাবে দেয়া হয়েছে। আবার যে বছরটিতে নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়, সে বছরও বোনাস শেয়ার দেয়া হয়। অর্থাৎ বছরের পর বছর লভ্যাংশ হিসাবে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের শুধু কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে।

এভাবে কাগজ ধরিয়ে দিলেও প্রতি বছর কোম্পানিটি মুনাফার তথ্য দেখিয়েছে। ২০১৮ সালে শেয়ারপ্রতি ৫৫ পয়সা মুনাফা হলেও প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। বছরটিতে লভ্যাংশ হিসাবে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া হয়।

তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৩ পয়সা মুনাফা হলেও এর কোনো ভাগ পাননি বিনিয়োগকারীরা। বছরটিতে লভ্যাংশ হিসাবে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ধরিয়ে দেয়া হয়।

তালিকাভুক্তির পর প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স প্রথম নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে ২০১৬ সালে। ওই বছরে ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ারের সঙ্গে ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়। অথচ শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৬ পয়সা। অর্থাৎ মুনাফার মাত্র ২০ শতাংশের মতো নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়। বাকি ৮০ শতাংশ থেকে বঞ্চিত হন বিনিয়োগকারীরা।

এছাড়া ২০১৫ সালে ১ টাকা ৪৮ পয়সা এবং ২০১৪ সালে ১ টাকা ৪৭ পয়সা শেয়ারপ্রতি মুনাফা হলেও বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়নি। ওই দুই হিসাব বছরে লভ্যাংশ হিসাবে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া হয়।

ডিএসইর এক সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেন, বছরের পর বছর ধরে শুধু বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়া ভালো লক্ষণ নয়। এতে বিনিয়োগকারীরা প্রকৃতভাবে খুব একটা লাভবান হন না। তবে নগদ ও বোনাস শেয়ার মিলিয়ে দিলে তাতে বিনিয়োগকারীদের লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত হাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকলে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের খুশি করতে লভ্যাংশ হিসাবে বোনাস শেয়ার দিয়ে থাকে। কিন্তু প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতি বছরই তারা মুনাফা করছে। তবে সেই মুনাফার অংশ বিনিয়োগকারীদের দেয়া হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত।

ডিএসইর ওই সদস্যের মতে, বোনাস শেয়ার দেয়ায় কোম্পানির দায় বাড়তে থাকে। এতে ভবিষ্যতে লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারপ্রতি আয় ও সম্পদের মূল্যের ওপর

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ১৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test