E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দাম কমেছে চালের

২০২০ এপ্রিল ৩০ ১৬:১৩:৩১
দাম কমেছে চালের

স্টাফ রিপোর্টার : মহামারি করোনাভাইরাস প্রকোপের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর এখন চালের দাম দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে কেজিতে চালের দাম কমেছে সাত টাকা পর্যন্ত। বিক্রি কমে যাওয়ায় চালের এই দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার শুরুতেই চাল বিক্রি বেড়ে যায়, এতে দামও বাড়ে। এরপর বিক্রি কমলে মাঝে দাম কিছুটা কমে। তবে রোজার আগে আবার চালের চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়ে যায়। এখন আবার চাহিদা কমে গেছে। এ কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে চালের দাম এখনও করোনার আগে যা ছিল তার থেকে বেশি।

তারা বলছেন, সামনে বাজারে নতুন চাল আসবে। তখন দাম কিছুটা কমে যাবে। সুতরাং এখন চাল ধরে রাখলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এ কারণে লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে এবং নতুন চাল কেনার জন্য খুচরায় দাম কমিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পাইকারিতে চালের দাম কমেনি।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, যা রোজা শুরু হওয়ার আগে ছিল ৬২ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। আর করোনার শুরুতে ছিল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা এবং করোনার আগে ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি।

দাম কমার তালিকায় রয়েছে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা এবং গরিবের মোটা চালও। বর্তমানে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা, যা রোজার আগে ৫৬ টাকা পর্যন্ত উঠে ছিল। করোনার আগে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল মাঝারি মানের চাল। গরিবের মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা, যা রোজার আগে ৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। অথচ করোনার আগে ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে।

এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যেও সপ্তাহের ব্যবধানে চিকন ও মাঝারি চালের দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চিকন চালের দাম কমছে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং মাঝারি চালের দাম কমেছে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২৯ এপ্রিল এই দাম কমে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বাজারে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা। আর এক মাস আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা।

অপরদিকে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা এবং একমাস আগে ছিল ৫০ থেকে ৫৬ টাকা। আর মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৮ থেকে ৫০ টাকা এবং একমাস আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

খিলগাঁওয়ের তালতলার চাল ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘পাইকারিতে চালের দাম কমেনি। এখন বিক্রি তেমন নেই। এ কারণে আমরাই কম দামে চাল বিক্রি করে দিচ্ছি। তবে কিছুদিন পর নতুন চাল আসবে। তখন পাইকারিতে চালের দাম কমবে বলে আশা করছি। এ কারণে বেশি দামে কেনার পরও এখন দাম কমিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, সেই চাল এখন আমরা ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। রশিদের যে মিনিকেট চালের বস্তা ৩০৫০ থেকে ৩১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল তা এখন ২৯০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ৫৫ টাকার আটাশ চাল এখন ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরার চাল ব্যবসায়ী ইসমাইল বলেন, ‘করোনার শুরুতে চাল কেনার হিড়িক পড়েছিল। এরপর চালের বিক্রি বেশ কমে যায়। তবে রোজার আগে আবার চাল বিক্রির হিড়িক পড়ে। এতে দাম কিছুটা বেড়ে যায়। কিন্তু এখন চালের বিক্রি একেবারেই নেই বললে চলে। অথচ এখন সব ধরনের চালের দাম কমেছে।’

তালতলা থেকে রশিদের ২৫ কেজির এক বস্তা চাল কিনেছেন সুমন। তিনি বলেন, ‘আগে এই চাল ১২০০ টাকা বস্তা কিনতাম। এরপর তা বেড়ে ১৬০০ টাকা হয়েছিল। এখন ১৪০০ টাকা দিয়ে কিনলাম।’ তিনি বলেন, চালের দামের এই ওঠা-নামার দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে-এটা স্বাভাবিক না। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামাফিক চালের দাম বাড়াচ্ছে আবার কমাচ্ছে।

রামপুরা থেকে চাল কেনা পলাশ বলেন, ‘চাল নিয়ে খেলা কম হচ্ছে না। যখন বিক্রি বাড়ছে তখন হু হু করে দাম বাড়ছে। আবার যখন বিক্রি কমছে তখন দাম কমে যাচ্ছে। এই আচরণ কীভাবে স্বাভাবিক হয়। চাল নিয়ে এখন খেলা হলেও চাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কারও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার খবর শুনছি না।’

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ৩০, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test