E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

চালের দাম আরও কমেছে 

২০২০ মে ১১ ১২:৪২:৫৫
চালের দাম আরও কমেছে 

স্টাফ রিপোর্টার : মহামারি করোনাভাইরাস প্রকোপের মধ্যে দফায় দফায় অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর এখন কমছে চালের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে দুই দফায় কমেছে চালের দাম। এর মাধ্যমে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার আগের দামে ফিরে গেছে বেশিরভাগ চালের দাম। একদিকে চাহিদা কম অন্যদিকে বাজারে নতুন ধানের চাল আসায় এই দাম কমছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চালের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ১০ দিনের ব্যবধানে দুই দফায় চালের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে গত দুই দিনে কেজিতে চালের দাম কমেছে তিন টাকা। তবে কিছু কিছু পুরাতন চাল এখনও এক সপ্তাহ আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার শুরুতেই চাল বিক্রি বেড়ে যায়, এতে দামও বাড়ে। এরপর বিক্রি কমলে মাঝে দাম কিছুটা কমে। তবে রোজার আগে আবার চালের চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়ে যায়। এখন বাজারে নতুন চাল আসছে, কিন্তু বিক্রি অনেক কমে গেছে।

সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি, যা দুদিন আগে ছিল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা এবং রোজা শুরু হওয়ার আগে ছিল ৬২ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। করোনার শুরুতে ছিল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা এবং করোনার আগে ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। অর্থাৎ রোজায় দুই দফায় কেজিতে ১০ টাকা কমে চিকন চাল এখন করোনার আগের দামে ফিরে গেছে।

দাম কমার তালিকায় রয়েছে মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা। বর্তমানে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, যা দুদিন আগে ছিল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা এং রোজার আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫৬ টাকা। আর করোনার আগে ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। অর্থাৎ দুই দফায় দাম কমে মাঝারি মানের চালও করোনার আগের দামে ফিরে গেছে।

চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম কমলেও নতুন করে গরিবের মোটা চালের দাম কমেনি। গত সপ্তাহের মতো মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা, যা রোজার আগে ৫০ টাকা পর্যন্ত উঠে ছিল। আর করোনার আগে ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে।

এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যেও দুদিনের ব্যবধানে চিকন ও মাঝারি চালের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে মোটা চালের দামও। ১০ মে থেকে তিন ধরনের চালের দামই কমেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর মধ্যে চিকন চালের দাম ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, মাঝারি চালের দাম ৫ শতাংশ এবং মোটা চলের দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বাজারে মিনিকেট ও নাজির চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, যা দুদিন আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা আর এক মাস আগে ছিল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা।

অপরদিকে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা দুদিন আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। আর এক মাস আগে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪৮ টাকা, যা দুদিন আগে ছিল ৩৮ থেকে ৫০ টাকা এবং এক মাস আগে ছিল ৪২ থেকে ৫০ টাকা।

খিলগাঁও তালতলার চাল ব্যবসায়ী জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, নতুন চালের কারণে এখন চালের দাম কিছুটা কমেছে। তবে পুরাতন চাল এখনও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। রশিদের নতুন মিনিকেট ২৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা। তবে পুরাতনটা এখনও ১৪৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ৫০ কেজির বস্তা নতুনটা ২৭০০ টাকা এবং পুরাতনটা ২৮৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, চিকন চালের পাশাপাশি নতুন আসা পাইজাম ও লতা চালের দামও কিছুটা কমেছে। আর মোটা চাল নতুনটা এখনও বাজারে সেইভাবে আসেনি। যে কারণে মোটা চালের দাম নতুন করে কমেনি। তবে এখন সব ধরনের চালের বিক্রি কম। করোনার আগে দিনে যে চাল বিক্রি করেছি, এখন তার ১০ ভাগের এক ভাগও বিক্রি হয় না।

রামপুরার ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, মিনিকেট, নাজির, পাইজাম ও লতা চালের দাম আরও কমেছে। এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে চালের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকার পর্যন্ত। বাজারে নতুন চাল আসায় এবং বিক্রি কম হওয়ায় এই দাম কমেছে। তবে সামনে চালের বিক্রি বাড়লে তখন হয় তো আবার দাম বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, নতুন যে চাল এসেছে তার সবগুলোই এখন আমরা কম দামে বিক্রি করছি। তবে পুরাতন কিছু চাল রয়েছে। ওগুলো আমার বাড়তি দামে কেনা। ওই চাল তো কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি করতে পারি না। সে কারণে পুরাতন চালের দাম এখন একটু বেশি। তারপরও পুরাতন চালের দাম আমরা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। ৫০ কেজির যে বস্তা ২৮৫০ টাকা বিক্রি করছিলাম, এখন তা ২৭৮০ থেকে ২৮০০ টাকা দাম পেলে বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ এই চাল ধরে রাখলে লোকসান আরও বেশি হতে পারে।

(ওএস/এসপি/মে ১১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test