E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফের বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

২০২০ জুন ১৮ ১৫:৪২:১৪
ফের বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

স্টাফ রিপোর্টার : কিছুটা দাম কমার পর আবার বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। চলতি সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার ওপরে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম কয়েক দফা বাড়ে। কিন্তু ঈদের পর থেকেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছিল। এতে গত সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে।

তবে চলতি সপ্তাহ থেকে আবার পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। দাম বেড়ে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ কেজি ৩৫ টাকা হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে এমন গুঞ্জনে চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করেই দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। তবে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম শুক্রবার ও শনিবার কিছুটা কমে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত শনিবার ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তার আগে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি।

দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার চিত্র উঠে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনেও। টিসিবি জানিয়েছে, এক সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়েছে।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়া বৌ-বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় কিছু দিন দেশি ও আমদানি উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কমে। কিন্তু গত সপ্তাহে হঠাৎ করেই দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। দুদিন ধরে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বাড়তি। পরিস্থিতি যা তাতে মনে হচ্ছে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। কারণ, দেশি পেঁয়াজ বেশির ভাগ মজুতে চলে গেছে।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জহির বলেন, বুধবার শ্যামবাজার থেকে পেঁয়াজ এনেছি। দেশি ও আমদানি উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। যে পেঁয়াজ গত সপ্তাহে আমরা ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি সেই পেঁয়াজ এখন আমরাই ৪৫ টাকা কেজি কিনেছি।

রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রচুর আছে। তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। চাহিদার তুলনায় দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কম। আমাদের ধারণা এ কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়ায় এখন আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বাড়ছে।

পেঁয়াজের বাজারের এ অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত রফতানি বন্ধ করলে দেশের বাজারে হু হু করে দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা আর এক’শ টাকার নিচে নামছিল না।

তবে চলতি বছরের মার্চের শুরুতে রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত। এরপর দেশের বাজারে কমতে থাকে পেঁয়াজের কেজি। কয়েক দফা দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে।

কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবার বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে ভোক্তা অধিদফতর ও র‌্যাব। পেঁয়াজের বাজারে চলে একের পর এক অভিযান। এতে আবারও কয়েক দফায় দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে।

তবে রোজার আগে আবারও অস্থির হয়ে উঠে পেঁয়াজের বাজার। কয়েক দফা দাম বেড়ে রোজার শুরুতে পেঁয়াজের কেজি ৫৫ টাকায় পৌছে যায়। এরপর রোজার মাঝামাঝি সময়ে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে ৪৫ টাকায় নেমে আসে। এ পরিস্থিতে ঈদের আগে আবার দাম বেড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা হয় পেঁয়াজের কেজি। তবে ঈদের পর দাম কমে পেঁয়াজের কেজি আবার ৪০ টাকায় নেমে আসে। এখন আবার পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

(ওএস/এসপি/জুন ১৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test