E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আরও দুই বছর গভর্নর থাকছেন ফজলে কবির

২০২০ জুলাই ১৫ ১৮:১৭:০২
আরও দুই বছর গভর্নর থাকছেন ফজলে কবির

স্টাফ রিপোর্টার : আরও দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ পেয়েছেন ফজলে কবির। বুধবার (১৫ জুলাই) তাকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. জেহাদ উদ্দীন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ যা বাংলাদেশ ব্যাংক (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২০ দ্বারা সংশোধিত এর অনুচ্ছেদ ১০ (৩) এবং ১০ (৫) এর বিধান অনুযায়ী ফজলে কবিরকে তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলো।’

এতে আরও বলা হয়, ‘ফজলে কবির গভর্নর পদে নিয়োজিত থাকাকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির শর্ত মোতাবেক বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গ্রহণ করবেন। এ নিয়োগের অন্যান্য বিষয় উল্লেখিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’

ফজলে কবিরের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে আইন সংশোধন করা হয়েছে। তবে আইনটি গত ৩ জুলাইয়ের আগে সংশোধন না হওয়ায় আইনি বাধ্যবাধকতায় ফজলে কবিরকে গভর্নর পদ থেকে সরে যেত হয়। তাই ৩ জুলাইয়ের পরের দিন থেকেই গভর্নরহীন তথা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আজকে তাকে নিয়োগ দেয়ার মধ্য দিয়ে অভিভাবক ফিরে পেল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধির বিল সংসদে পাসের ক্ষেত্রে বিরোধীদের আপত্তির মুখে পড়তে হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিলটি পাস হয়। এটির গেজেটও প্রকাশ করে সরকার। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স এখন ৬৫ থেকে বেড়ে ৬৭ বছর হয়েছে।

এদিকে ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩ জুলাই। ৩ জুলাই শুক্রবার হওয়ায় গত ২ জুলাই গভর্নর হিসেবে ছিল তার শেষ কার্যদিবস। তারপর থেকেই গভর্নরহীন অবস্থায় ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে গভর্নরের অবর্তমানে দুই ডেপুটি গভর্নরকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

গত ২ জুলাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মো. জেহাদ উদ্দিন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের অবর্তমানে ডেপুটি গভর্নর-১ এস এম মনিরুজ্জামান ও ডেপুটি গভর্নর-২ আহমেদ জামাল দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পদত্যাগে বাধ্য হন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সে সময়ও অল্প কয়েক দিন গভর্নরহীন ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১৬ সালের ১৫ মার্চ দেশের ১১তম গভর্নর হিসেবে ফজলে কবিরকে নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে থাকায় ১৯ মার্চ যোগ দেন। ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত সময় গভর্নর ছাড়া ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্যাকেজ বাস্তবায়ন হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গাইডলাইনে। সরকার ফজলে কবিরকে আরও দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিল।

এজন্য বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের চাকরির মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধির বিল গত ৯ জুলাই সংসদে পাস হয়। সেদিন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২০’ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির এমপিদের ওই বিলটির বিষয়ে সংসদে আপত্তি ছিল যে, মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরকে আরও দুই বছর এই পদে রেখে দেয়ার জন্যই বিল আনা হয়েছে। অথচ এই গভর্নরের কোনো অর্জনই নেই। তিনি চুরি যাওয়া রিজার্ভ ফিরিয়ে আনতে পারেননি। খেলাপি ঋণও আদায় করতে পারেননি।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test